বিজ্ঞাপন

ভৈরবে পানি নিয়ে দুর্ভোগ, পৌরসভা ঘেরাওয়ের আল্টিমেটাম

April 22, 2021 | 6:06 pm

লোকাল করেসপন্ডেন্ট

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ): জেলার ভৈরব শহরের দুই সপ্তাহ ধরে পৌরসভার সাপ্লাইয়ের পানি না পাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে সহস্রাধিক পরিবার। রমজানে সেহরি, ইফতার, ওযু, গোসল ও রান্না-বান্না করতে না পারায় ক্ষুদ্ধ এলাবাসী। তারা খালি কলসি নিয়ে পানির দাবিতে সড়কে বিক্ষোভ ও মানব বন্ধন করে স্থানীয়রা পৌরসভা ঘেরাওয়ের আল্টিমেটাম দিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

তবে লাইনে ত্রুটির কারণে পানি সরবরাহে বিঘ্ন ঘটতে পারে বলে জানিয়েছেন নব নির্বাচিত মেয়র ইফতেখার হোসেন বেণু। একইসঙ্গে দ্রুত সমস্যা সমাধানে পানি সরবরাহের আশ্বাসও দেন তিনি।

জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর প্রায় আট কোটি টাকা ব্যয়ে দেড় লাখ গ্যালন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ভৈরবে ওয়াটার প্লান্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করা হয়। পরে ২০০৭ সালে তা পৌরসভার কাছে হস্তান্তর করে। শুরু থেকে পৌরসভা দুই শতাধিক গ্রাহক নিয়ে যাত্রা শুরু করে। এখন পৌর শহরের ভৈরববাজার, ভৈরবপুর, কমলপুর, ঘোড়াকান্দা ও পঞ্চবটি গ্রামের কিছু অংশে ৫৫৮ জন গ্রাহক রয়েছে।

ঘোড়াকান্দা, ভৈরবপুর, পঞ্চবটি, কমলপুরসহ বেশ কয়েকটি এলাকার গ্রাহকরা জানান, গত সাত থেকে আট মাস ধরে পানি সরবরাহ ঠিকমত পাচ্ছে না তারা। বিভিন্ন সময় পানি শাখা বিভাগে ও সাবেক পৌর মেয়রের কাছে অভিযোগ করেও কোনো কাজ হচ্ছে না। ফলে এসব এলাকার প্রায় সহস্রাধিক পরিবার পানির জন্য ভোগান্তিতে পড়েছে। তবে নব নির্বাচিত মেয়র দায়িত্ব নেওয়ার পর গত দুই সপ্তাহ ধরে সাপ্লাইয়ের পানি কলের মুখ দিয়ে একেবারেই অসছে না। ফলে ঠিকমত রান্না করতে পারছেন না। এমনকি রমজানে সেহরি, ইফতার, ওযু ও গোসল করতেও সমস্যা হচ্ছে তাদের।

বিজ্ঞাপন

তারা আরও জানান, এছাড়াও করোনার কারণে জারি করা ‘লকডাউন’র কারণে কারও বাড়ি থেকে পানিও আনতে পারছেন না। ফলে বাধ্য হয়ে অনেকেই দুই-তিন কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে মেঘনা নদীতে গিয়ে গোসল করে কলস দিয়ে সামান্য পানি আনছেন। কিন্ত প্রয়োজনের তুলনায় তা খুবই সামান্য।

গ্রাহকদের আরও অভিযোগ, পানির বিল নিয়মিত পরিশোধ করেও পানি পাচ্ছেন না তারা। পৌর কর্তৃপক্ষ যেন দ্রুত পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করে তাদেরকে দুর্ভোগ থেকে রেহাই দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

ঘোড়াকান্দা গ্রামের হাফেজ হাবিবুর রহমান, রোমান মিয়া ও হারুন মিয়া জানান, গত চার মাস ধরে পৌরসভার পানি ঠিকমত পাচ্ছেন না। কিন্তু পানির বিল ঠিকই পরিশোধ করতে হচ্ছে। তবে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে গত দুই সপ্তাহ ধরে, একেবারেই পানি পাচ্ছেন না। ফলে সেহরি ও ইফতার ঠিকমত করতে পারছেন না তারা। এমনকি ওযু ও গোসল করতে সমস্যা হচ্ছে। তাই পানি না পেলে তারা পৌরসভা ঘেরাও করবেন।

বিজ্ঞাপন

একই এলাকার সাধনা বেগম, রহিমা বেগম, জোহেরা বেগম ও সেলিনা বেগমসহ অনেকেই জানান, প্রতিদিন সকালে ও বিকালে পানি সরবরাহের কথা থাকলেও পানি পাচ্ছেন না। ফলে বাচ্চাদের গোসল, ওযু ও রান্না-বান্না করতে খুব কষ্ট হচ্ছে। তাই দ্রুত পানি চান তারা।

 এ বিষয়ে লাইনে ত্রুটির কথা স্বীকার করে পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. শাজাহান মিয়া বলেন, লাইনে ত্রুটির কারণে পানি সরবরাহে বিঘ্ন ঘটতে পারে। তবে দ্রুত পানি সরবরাহ সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ১৯৯৯ সালে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কাজ শুরু করে। এরপর ২০০৭ সালে পৌরসভার কাছে পানি সরবরাহ (ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট) হস্তান্তর করে। প্রথম থেকে আমরা দুই শতাধিক গ্রাহক নিয়ে কাজ শুরু করি। বর্তমানে পাঁচ শতাধিক গ্রাহক রয়েছে। তবে পানি সরবরাহের লাইনগুলো পুরনো হওয়ায় লাইনে কিছুটা ত্রুটি দেখা দিয়েছে। ফলে পানি সরবরাহে সমস্যা দেখা দিয়েছে। আশা করছি মাস দুয়েকের মধ্যে সমস্যা সমাধান করতে পারব। তখন পানি পেতে কোনো সমস্যা হবে না।

এ বিষয়ে পৌরসভার মেয়র ইফতেখার হোসেন বেণু বলেন, পুরনো লাইনে ত্রুটির কারণে হয়তো পানি সরবরাহে সমস্যা হচ্ছে। তবে সমস্যা সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে পানির সরবরাহ স্বাভাবিক করা হবে। এছাড়া প্রায় আট কোটি টাকা ব্যয়ে মেঘনা নদী থেকে পানি সরবরাহের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আগামী চার থেকে পাঁচ মাস পরে নদী থেকে পানি সরবরাহ করে ওয়াটার ট্রিটমেন্টে প্লাান্টের মাধ্যমে গ্রাকদেরকে পানি সরবরাহ করতে পারব বলে আশা করছি।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এনএস

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন