বিজ্ঞাপন

গণহত্যাকারী ও মদদদাতা সমান দোষে দোষী : প্রধানমন্ত্রী

March 25, 2018 | 7:11 pm

।।সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: একাত্তরে গণহত্যাকারী ও মদদদাতাকারী উভয়েই সমান দোষে দোষী। তাদের কারো ক্ষমা নেই। তাদের বিচার চলছে, বিচার চলবেই। এদের অপকর্মের কথা ভুলে যাওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় গণহত্যা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদেরও লক্ষ্য ছিল, আমরা এই স্বাধীনতাকে ব্যর্থ হতে দেব না। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছি। কাজেই অবশ্যই এই দেশকে বিশ্বে একটা মর্যাদাশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবো। যেন চিরদিন আমাদের বিজয়ের ইতিহাস সমুন্নত থাকে।

বিজ্ঞাপন

আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছি। ২৫ মার্চ থেকে যে গণহত্যা চলে। তা ওই সময় বিশ্বের সমস্ত পত্রিকায় এসেছে। সবাই এটা গণহত্যা হিসেবে স্বাীকার করেছে। কিন্তু ১৯৭৫ সালের পরে যারা এসেছিল তারা এই ব্যাপারে কোনো নজরেই দেয়নি। তারা ভুলেই গেছে। এইরকম একটা অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, সংসদে একটি প্রস্তাব এসেছিল। সেই প্রস্তাবে ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। জাতিসংঘে গণহত্যা দিবস হিসেবে একটা দিন আছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ২৫ শে মার্চ গণহত্যা দিবস পালন করব। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আর তাদের দোসর; ওই রাজকার-আলবদর-আলশামস থেকে শুরু করে যারা তাদের সাথে হাত মিলিয়েছিল । গণহত্যায় যারা সরাসির যুক্ত ছিল আর যারা মদদ দিয়েছিল। তারা উভয়েই সমান দোষে দোষী। তাদের অপকর্মের কথা জাতি যেন ভুলে না যায়। প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেন এই কথাটি মনে রাখে। এই দেশে গণহত্যা ঘটিয়েছিল কারা, কেন? তাদের বিচার যেন এই মাটিতে চলতেই থাকে। তাদের কোন ক্ষমা নেই। তাদের বিচার হবেই। মদদ দানকারীরাও ঘৃণার পাত্র। এই কথাটা সবাইকে মনে রাখতে হবে।

শেখ হাসিনা আরো বলেন, একটা সময় সমস্ত ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছিল। এমনকি ‘পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী’ এটাও বলা যাবে না। এটা ভুলে দেওয়ার জন্য তাদেও শুধু হানাদার বাহিনী বলা হত। পাকিপ্রেম এমন পর্যায়ে ছিল। পাকি প্রেমে যারা হাবুডুবু খেয়েছে। তাদেরকেও উপযুক্ত জবাব দিতে হবে। তাদের পাকিপ্রেম ভুলিয়ে দিতে হবে।

বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনা বলেন, শত বাধা অতিক্রম করে বাংলাদেশের অর্থনীতি উন্নতির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের যে অগ্রযাত্রা, এই অগ্রযাত্রা কখনো থেমে যাবে না। কারণ ৭ মার্চের ভাষণেই জাতির পিতা বলেছিলেন, ৭কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না। বাংলাদেশের মানুষকে কেউই দাবায়ে রাখতে পারবে না সেটা আমরা প্রমাণ করেছি, আজ আমরা উন্নয়নশীল দেশ।

উন্নয়নশীল দেশের যে মর্যাদা অর্জন করেছি। এটা ধরে রেখে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আমরা ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করব। ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পালন করবো। বাংলাদেশ ক্ষুধা দারিদ্রমুক্ত দেশ হিসেবেই এগুলো পালন করবো বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হবে। সেই ভাবেই আমরা দেশকে গড়ে তুলবো।  কি পেলাম, কি পেলাম না। এই চিন্তা করলে চলবে না। আমি এই চিন্তা করিও না। বেশী আকাঙ্খা নিয়ে আমি রাজনীতি করি না। মানুষকে কি দিতে পারলাম। মানুষের জন্য কতটুকু করতে পারলাম। গরীব দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটল কি না? তাদের থাকার মতো ঘর আছে কি না? শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবা আছে কি না? উন্নত জীবন পাচ্ছে কি না, সেটাই আমার চিন্তা। যা জাতির পিতা চেয়েছিলেন। তার সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে হবে। তার স্বপ্ন আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। এই প্রতিজ্ঞা নিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।

আমরা তখনই গণহত্যার প্রতিশোধ নিতে পারবো-যখন বাংলাদেশ ক্ষধুা-দারিদ্রমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হবে। যারা পাকিপ্রেমীরা তাদের উপযুক্ত শিক্ষা দিতে পারবো। কাজেই যারা পাকিপ্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে, তারা হাবুডুবু খেতে খেতে ডুবেই থাক।ডুবেই যাক।

বিজ্ঞাপন

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সূচনা বক্তব্য রাখেণ দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।এছাড়াও দলের উপদেষ্টাপরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য যৌথভাবে পরিচালনা করেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ ও উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।

সারাবাংলা/এনআর/একে

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন