বিজ্ঞাপন

‘হেফাজতের শাপলা তাণ্ডবের মামলায় চার্জশিট তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতেই’

May 6, 2021 | 12:10 am

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবের ঘটনার পরিসর অনেক বড় বলেই ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলাগুলো তদন্তে বেশি সময় লাগছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতের তাণ্ডব অনেক বড় ঘটনা। অনেক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে হচ্ছে। মামলার তদন্ত শেষ করতে না পারার আরেকটি কারণ হচ্ছে— কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যেন অভিযুক্ত না হন, সেটিও আমরা দেখছি। এসব কারণেই তদন্তে সময় লাগছে।

বুধবার (৫ মে) বিকেলে নিজ কার্যালয়ে ‘শাপলা চত্বর’কাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা অর্ধ শতাধিক মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

ডিবি’র অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনকে কেন্দ্র করে বায়তুল মোকাররমে ব্যাপক নাশকতা হয়। সেটাকে পুঁজি করে গুজব ছড়িয়ে চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নারায়ণগঞ্জ, সিলেটসহ বেশকিছু জেলায় ব্যাপক তাণ্ডব চালানো হয়। ভিডিও ফুটেজ দেখে তাণ্ডবের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করা হচ্ছে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, যুক্তিতর্ক চলছে, সারাদেশে কিভাবে জায়গায় জায়গায় আগুন দেওয়াসহ তাণ্ডব চলেছে, তা সবাই দেখেছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, যারা নাশকতায় জড়িত ছিল, উসকানি দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তাদের দোষী সাব্যস্ত করা হবে। তবে কোনো নিরপরাধী ব্যক্তি যেন শাস্তি না পায়, সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে। কেউ নিরপরাধ হলে যেন আমাদের জানানো হয়। সে ব্যাপারে আমরা তথ্যপ্রমাণ সাপেক্ষে উদ্যোগ নেব।

শাপলা চত্বরে হেফাজতের তাণ্ডবের ঘটনায় দায়ের করা মামলাগুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবি’র এই কর্মকর্তা বলেন, হেফাজত নেতারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে কী বলেছেন, তা আমরা জানি না। তবে যারা ওই তাণ্ডবে জড়িত ছিলেন বা যাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে তো ব্যবস্থা নিতেই হবে।

আট বছরেও কেন শাপলা চত্বরে হেফাজতের তাণ্ডবের মামলার তদন্ত শেষ করা যায়নি— এ প্রশ্নের উত্তরে হাফিজ আক্তার বলেন, শাপলা চত্বরের তাণ্ডবের ঘটনা বিশাল। দায়ের করা মামলায় জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হলে অনেক তথ্য-উপাত্ত দরকার। সেগুলো আমাদের সংগ্রহ করতে হচ্ছে। ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করতে হয়েছে। অন্যান্য তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করতে হচ্ছে। যে কারণে মামলার চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে সময় লাগছে।

বিজ্ঞাপন

শাপলা চত্বরের মতো হেফাজতে ইসলামের আরও কোনো তাণ্ডব চালানোর মতো পরিকল্পনা বা সক্ষমতার বিষয়ে কোনো তথ্য রয়েছে কি না— জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা প্রধান বলেন, পুলিশের প্রধান কাজ শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা। দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে যা যা করা দরকার, তা আমরা করব। আমরা চাই না ফের শাপলার মতো তাণ্ডব ঘটুক। তবে কেউ তাণ্ডব চালাতে চাইলে, জনগণের সম্পদ বিনষ্ট করে বা পুলিশ বা সরকারি কর্মকর্তার ওপর হামলা করলে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতের সম্পর্কে নিয়ে জানতে চাইলে হাফিজ আক্তার বলেন, সম্প্রতি দায়ের করা মামলার তদন্ত কাজ চলছে। জিজ্ঞাসাবাদে অনেক তথ্য-উপাত্ত পেয়েছি। তবে আরও আনুসঙ্গিক তথ্য-প্রমাণ দরকার। সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।

জানা যায়, ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবের ঘটনায় সারাদেশে ৮৩টি মামলা দায়ের হয়েছিল। এর মধ্যে পল্টন থানায় ৩৩টিসহ রাজধানী ঢাকাতেই মামলা দায়ের হয়েছিল অর্ধ শতাধিক। এর মধ্যে হাতেগোনা কয়েকটি মামলার চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ। ৫০টিরও বেশি মামলায় পুলিশ এখনো চার্জশিটই দাখিল করতে পারেনি।

এদিকে, হেফাজতের সাম্প্রতিক নাশকতা-তাণ্ডবের ঘটনায় সংগঠনটির সদ্যবিলুপ্ত কমিটির শীর্ষ ২০ থেকে ২৫ জন নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের বেশিরভাগই ২০১৩ সালে দায়ের করা মামলারও আসামি। ওই মামলাতেও তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যই বেরিয়ে আসছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/ইউজে/টিআর

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন