বিজ্ঞাপন

ছুটিতে যাওয়ার আগে গাছের পরিচর্যা

May 7, 2021 | 10:00 am

আহসান রনি

প্রতিবার ঈদ এলেই অনেকেই শহরের ব্যস্ততা ও কোলাহল এড়িয়ে খানিক লম্বা ছুটি মিলিয়ে সপরিবারে পাড়ি জমান বাড়ি কিংবা বেড়িয়ে পড়েন ভ্রমণে। যদিও করোনা মহামারির কারনে বিগত দুই ঈদের প্রেক্ষাপট ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। পাশাপাশি, যারা কংক্রিটের শহরকে আরো সবুজ, আরো বাসযোগ্য করে তুলতে বাসার ছাদ, বারান্দা, বেলকনি বা ঘরের ভেতরে এক চিলতে সবুজের লালন পালন করে চলেছেন তারা চাইলেও গাছের নিয়মিত যত্ন ও পরিচর্যার কথা ভেবে অনেক সময় ঘর ছেড়ে দূরে কোথাও সপরিবারে লম্বা ছুটিগুলো উপভোগ করতে পারেন না। বার বার তারা বাধা পড়ে যান নিজ হাতে তিলে তিলে গড়ে তোলা সবুজের মাঝে। কিন্তু কিছু সহজ পদ্ধতি অবলম্বন করলে সহজেই ঘরের ভেতরের ও ছাদের গাছগুলোকে অন্তত সাত থেকে দশদিন বিশেষ পরিচর্যা ও পানি ছাড়াই বাঁচিয়ে রাখা যায়।

বিজ্ঞাপন

প্রথমত গাছের গোড়ায় দীর্ঘসময় পানি ধরে রাখার জন্য টব ভর্তি করে কাঠের গুড়া কিংবা নারিকেলের ছোবরার গুড়া বা কোকোডাস্ট দেয়া যেতে পারে। কারণ কাঠের গুঁড়া ও কোকোডাস্ট দীর্ঘ সময় পানি ধরে রাখতে পারে। সেখান থেকে গাছও ধীরে ধীরে প্রয়োজন অনুযায়ী পানি গ্রহণ করতে পারে। ফলে ছুটিতে যাওয়ার আগে গাছের গোড়ায় প্রথমে বেশি করে কোকোডাস্ট বা কাঠের গুঁড়া দিয়ে এরপর যে কয় দিনের ছুটি সে বিবেচনায় পরিমিত পানি দিয়ে নিন। তাহলে গাছ অন্তত পানির অভাবে মারা যাবে না। পাশাপাশি ছাদবাগানের গাছের ক্ষেত্রেও এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে পানির ঘাটতি পুরন করা যায়। আবার অতি বৃষ্টিতে গাছের গোড়ায় অতিরিক্ত পানি জমতে না দিয়ে গাছকে বড় ক্ষতির হাত থেকেও রক্ষা করতে পারে এই পদ্ধতি।

ছুটিতে বাসায় লোকজন না থাকলে সাধারণত দরজা জানালা বন্ধ থাকে ফলে ঘরের ভেতরে পর্যাপ্ত আলো বাতাস প্রবেশ করার সুযোগ থাকেনা। ফলে ঘরের ভেতরের গাছগুলোও আলো বাতাসের অভাবে নেতিয়ে যায় বা দুর্বল হয়ে পড়ে। ছুটির সময় দীর্ঘ হলে গাছ মারাও যেতে পারে। তাই ছুটিতে যাবার আগে ঘরের ভেতরের গাছগুলোকে বারান্দায় বা যেখানে আলো বাতাস পৌছায় তেমন জায়গায় রেখে যাওয়া যেতে পারে। তবে কখনোই ঘরের ভেতরের বা ছায়ার গাছগুলোকে দীর্ঘ সময় ছাদে বা কড়া রোদে রেখে যাওয়া ঠিক হবে না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। প্রচণ্ড রোদের তাপে বা বৃষ্টিতে সংবেদনশীল এই ছায়ার গাছগুলো মারাও যেতে পারে।

ছুটি যদি সাত থেকে দশ দিন পর্যন্ত দীর্ঘ হয় তাহলে ছাদবাগান ও বাসার ভেতরের গাছের জন্য আরো কিছু পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। যেমন, ছুটিতে যাওয়ার আগে গাছের গোড়ায় জন্মানো সকল আগাছা পরিষ্কার করা, গাছের গোড়ায় হালকা নিড়ানি দেয়া, শুকনো মরা পাতা বা রোগাক্রান্ত পাতা বা ডাল ছেটে দেয়া, ছাদের গাছের ক্ষেত্রে গাছের পাতাগুলোতে জোরে জোরে পানি স্প্রে করে ভালোভাবে ধুয়ে দেয়া এবং বাসার ভেতরের ছায়ার গাছের ক্ষেত্রে পাতাগুলো শুকনো কাপড় বা ফোম দিয়ে ভালোভাবে মুছে দিয়ে যাওয়া।

বিজ্ঞাপন

তবে দীর্ঘ সময়ের জন্য ছুটিতে যাবার আগে অনেকেই ভুল করে গাছের ভালো চিন্তা করে গাছে বেশি পরিমানে সার বা ভিটামিন দিয়ে যান যা কোনভাবেই করা উচিত নয়। কারণ সার বা ভিটামিনের অভাবে গাছ কখনোই মারা যায়না। উল্টো অপ্রয়োজনে মাত্রাতিরিক্ত সার ও ভিটামিন প্রয়োগে গাছের মারা যাবার সম্ভাবনা যেমন থাকে তেমনি গাছের দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির সম্ভাবনাও অনেকগুণ বেড়ে যায়।

আবার, অনেকে শখ করে বারান্দার গ্রিলে প্লাস্টিক কিংবা মাটির ঝুলানো টবে অনেক বাহারি গাছ সাজিয়ে রাখেন। এ সময়টাতে ছুটিতে গেলে সেই গাছগুলো গ্রিল থেকে নামিয়ে বারান্দার ফ্লোরে সাজিয়ে রেখে যাওয়া উত্তম। কারন এ সময় ঝড়ো বাতাসের সম্ভাবনা থাকে ফলে প্রচণ্ড বাতাসে ঝুলন্ত টবগুলো অনেক সময় উল্টে যেতে পারে। এতে একদিকে গাছের ক্ষতি হয় অন্যদিকে কাদামাটি ছড়িয়ে বারান্দা ও ঘর নোংরা হবার সম্ভাবনা থাকে। ফলে ছুটিতে যাবার আগে এই সামান্য কিছু সতর্কতা মেনে গাছগুলো গুছিয়ে রেখে গেলে ছুটির আনন্দ শেষে ঘরে ফিরে গাছ দেখে আর মন খারাপ হবেনা।

লেখক: প্রতিষ্ঠাতা, গ্রিন সেভার্স

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসএসএস

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন