বিজ্ঞাপন

ধান কাটার শ্রমিক পরিবহনের নামে বগুড়া-ঢাকা বাস চলাচল

May 7, 2021 | 12:12 pm

আমজাদ হোসেন মিন্টু, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

বগুড়া: করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় তথা দূরপাল্লার পরিবহন চলাচলে সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকলেও বগুড়ায় তা মানা হচ্ছে না। ধান কাটার শ্রমিক পরিবহনের নামে পুলিশ প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে টিকিট কাউন্টার থেকে সাধারণ যাত্রী পরিবহনের জন্য টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। তবে নির্দিষ্ট সংখ্যক এই দূরপাল্লার বাস বগুড়া-ঢাকা যাত্রী পরিবহন করছে।

বিজ্ঞাপন

তবে বগুড়ার পুলিশ প্রশাসন জানায়, ধান কাটার শ্রমিক পরিবহনের জন্য অনুমতি দিলেও তারা সাধারণ যাত্রী পরিবহনের কোনো অনুমতি দেননি।

করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে চলতি বিধিনিষেধের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বৃহস্পতিবার থেকে জেলার অভ্যন্তরীণ গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়েছে। তবে দূরপাল্লার গণপরিবহনের ক্ষেত্রে সরাকারি বিধিনিষেধ থাকলেও গত বুধবার রাত থেকে বগুড়ার শাহ ফতেহ আলী নামে ৪টি বাস বগুড়া থেকে ঢাকায় চলাচল শুরু করে। তারা জানায়, ধান কাটার শ্রমিক পরিবহনের জন্য অনুমতি পেয়েছেন।

এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার (৭ মে) দুপুরে গিয়ে শহরের সাতমাথা এলাকায় ওই পরিবহনের কাউন্টারে গিয়ে দেখা যায়, সাধারণ যাত্রীদের নিকট টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। কোনো ধানকাটার শ্রমিককে টিকিট কিনতে দেখা যায়নি।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাউন্টার থেকে পুলিশ সুপার, জেলার বিশেষ শাখার স্বাক্ষরিত অনুমতি পত্র দেখান হয়। ৪ মে স্বাক্ষরিত (স্মারক নং৩৬০৭/১২-২০২১-১) পত্রে জিয়াউর রহামান নামে এক ব্যক্তিকে একইসঙ্গে শ্রমিক ও পরিবহন ব্যবসায়ী উল্লেখ করে ৪টি গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়— ‘ধানকাটার শ্রমিকদের নিয়ে ৫ মে থেকে বাস গুলো ১৬ মে পযন্ত নওগাঁ থেকে মানিকগঞ্জ জেলায় যাতায়াত করবে।’

বগুড়া পুলিশ প্রশাসনের এই ‘অনুমতিপত্র’ নিয়ে গত বুধবার রাত থেকে বগুড়া থেকে ঢাকার গাবতলিতে বাসগুলো চলাচল শুরু করে। গত বুধবার রাতে বাস গুলো স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী অর্ধেক যাত্রী নিয়ে যায়। তবে এসব যাত্রীরা ধানকাটার শ্রমিক ছিল না বলে সূত্র জানিয়েছে।

রাতে ঢাকা যাওয়া মান্নান নামের এক যাত্রীর ভাই রাকিবুল জানান, তার ভাই প্রবাসী। ছুটিতে এসেছিলেন। বিদেশে যাওয়ার জন্য রাতে বগুড়া থেকে ঢাকায় যান।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক তৌহিদুল ইসলাম সোহেলও কাউন্টার থেকে টিকেট নেন। তিনি জানান, তার শ্বাশুড়ি অসুস্থ্য। রাতে ঢাকায় যাবেন।

শাহ ফতেহ আলী কাউন্টার থেকে নুরু নামে এক ব্যক্তি জানান, করোনার কারণে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে বাস চলাচল শুরু করেছে। এজন্য টিকিটের দাম বেশি। দূরপাল্লার বাস চলাচলে সরকারি বিধিনিষেধ থাকার বিষয়ে তিনি জানান, তাদের ৪টি বাস চলার অনুমতি রয়েছে।

শাহ ফতেহ আলী বাসের ব্যবস্থাপক আজাদ জানান, শহরের সাতমাথায় টিকিট কাউন্টার খোলার বিষয়টি তার জানা ছিল না। কাউন্টার বন্ধ করার জন্য বলা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, এসব অনুমতির বাইরে রাতে অনেক বাস ঢাকায় যাতায়াত করছে। এছাড়া বিধিনিষেধ ভেঙে বৃহস্পতিবার দুপুরেও বেশ কয়েকটি বাস বগুড়া থেকে দূরের গন্তব্যে যাতায়াত করতে দেখা গেছে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে বগুড়া পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঁইয়া জানান, ধানকাটা শ্রমিকদের পরিবহনের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। সাধারণ যাত্রী পরিবহনের অনুমতি দেওয়া হয়নি। আর এমনটা করলে তার জন্য সংশ্লিষ্টরাই দায়ী হবেন।

বগুড়া জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক জানান, শাহ ফতেহ আলী পরিবহনের কোনো বাসে ধানকাটা শ্রমিক পরিবহন সংক্রান্ত অনুমতির বিষয়টি তার জানা নেই। জেলা প্রশাসন থেকে তৌফিক হাসান ময়না নামে এক পরিবহন ব্যবসায়ী ধানকাটার শ্রমিক পরিবহনের জন্য ২টি বাসের অনুমতি নিয়েছেন।

তবে তৌফিক হাসান ময়না জানান, তিনি বেশ কয়েক দিন আগে শুধু একদিন তার একটি বাস চালিয়েছিলেন।

সারাবাংলা/এনএস

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন