বিজ্ঞাপন

স্বাধীনতা দিবসে ১০৭৬ কারাবন্দির মুক্তির প্রস্তাব 

March 25, 2018 | 11:01 pm

উজ্জল জিসান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: সরকারের বিশেষ ক্ষমতায় ১ হাজার ৭৬ জন কারাবন্দির মুক্তির প্রস্তাব করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তাদের মুক্তির আবেদন পাঠানো হয়েছে। তবে এর মধ্যে কতজন এবারের স্বাধীনতা দিবসে মুক্তি পাবে তা এখনও ঠিক হয়নি। মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে,এ বিষয়ে খুব দ্রুতই সিদ্ধান্ত হবে।

কারা অধিদফতরের সহকারি মহাপরিদর্শক (প্রশাসন) আব্দুল্লাহ আল মামুন সারাবাংলাকে বলেন, ২০০৯ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার ৯শ জনকে বিশেষ ক্ষমতায় মুক্তি দিয়েছে সরকার। এ বছর দেশের সব  কারাগার থেকে ১ হাজার ৭৬ জনের আবেদন আইজি প্রিজনের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় যাচাই বাছাই সাপেক্ষে একটি তালিকা দেবেন সে অনুযায়ী কারাবন্দিরা ২৬ মার্চ মুক্তি পাবেন।

কতজনকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সংখ্যার বিষয়টি মন্ত্রণালয় গঠিত কমিটি দেখে থাকে। তারাই সবকিছু যাচাই বাছাই করে থাকেন। আমরা শুধু কারাগুলো থেকে আসা আবেদনগুলো আইজি প্রিজনের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে থাকি। এক্ষেত্রে আমাদের আলাদা কোন সুপারিশ থাকে না।

বিজ্ঞাপন

বিগত বছরগুলোতে কোন মানদন্ডে কারাবন্দিদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এ নিয়ে মানদণ্ড ঠিক করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেখানে একটা কমিটি থাকে। সেই কমিটিতে আইন,ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর বেশ কয়েকজন প্রতিনিধি থাকেন। সেখানে  র‌্যাব পুলিশ ও বিজিবির প্রতিনিধিও থাকেন। কারাবিধানের ৫৬৯ ধারা ও সিআরপিসির ৪০১(১) এর প্রদত্ত এখতিয়ার বলে যা বলা হয়েছে তাই করা হয়ে থাকে বলে জানান আব্দুল্লাহ আল মামুন।

আইন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২০ বছর সাজা খেটেছেন এমন কয়েদিদের মধ্যে যাঁরা খুব অসুস্থ, অক্ষম বা বৃদ্ধ তাঁদের জন্যই এ ধারা প্রযোজ্য। এ ছাড়া কেউ খুব ভালো আচরণ করলে তাঁর ক্ষেত্রেও ধারাটি প্রয়োগ হতে পারে। তবে বিতর্কিত কারও জন্য এ ধারা প্রযোজ্য হওয়ার কথা নয়।

এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেকটি সূত্রে জানা যায়, কেবলমাত্র যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কারাবন্দিরাই বিশেষ ক্ষমার আওতায় এসে থাকে। আর তাদের জন্যই আবেদন করা হয়। এসব বন্দির জন্য আবার বিশেষ কিছু দিক দেখা হয়। যেমন একজন বন্দি কতটা শৃঙ্খলা ও ভালো আচরণের সাথে জেলে জীবন কাটাচ্ছে। যে মামলায় জেলে যেতে হয়েছে ওই মামলা ছাড়া অন্য কোন মামলায় জড়িত না থাকা। এই মামলার পূর্বে কোন অপরাধে জড়িত না থাকা। তার পূর্বের রেকর্ড পর্যালোচনা করাসহ অন্তত ১৫ বছরের বেশি কারাভোগ করছেন তাদেরকেই সাধারণ ক্ষমার আওতায় আনা হয়।

বিজ্ঞাপন

মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটির একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ২০ বছর সাজা খেটেছেন এমন কয়েদিদের মধ্যে যারা খুব অসুস্থ, অক্ষম বা বৃদ্ধ তাঁদের জন্যই এ ধারা প্রযোজ্য। এ ছাড়া কেউ খুব ভালো আচরণ করলে তার ক্ষেত্রেও ধারাটি প্রয়োগ হতে পারে। তবে বিতর্কিত কারও জন্য এ ধারা প্রযোজ্য হয় না।

তিনি বলেন, তবে সিআরপিসি এর ধারা ৪০১(১) ও ৫৬৯ মতে প্রদত্ত এখতিয়ার বলে বাংলাদেশ সরকার যে কোন সময় শর্তহীন বা শর্তযুক্ত করে দণ্ডিত অপরাধীর শাস্তির প্রয়োগ স্থগিত করতে পারেন বা শাস্তি আংশিক বা পূর্ণ মওকুফ করতে পারেন আবার কমাতেও পারেন।

পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, বিশেষ ক্ষমতায় মুক্তির জন্য করা এবারের আবেদনেও সরকারি দলের অনেকের নাম রাজনৈতিক বিবেচনায় আনা হয়েছে। কিছু সন্ত্রাসীর নামও রয়েছে। তবে কারা রয়েছেন তাদের নাম নির্দিষ্টকরে বলতে রাজি হয়নি সূত্রটি।

কারাসূত্র জানিয়েছে, সরকারের বিশেষ ক্ষমতায় মুক্তির জন্য যাদের আবেদন করা হয়েছে, তাদের মধ্যে সব ধরনের মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি রয়েছে। তারা প্রতিনিয়তই খোঁজ খবর নিচ্ছেন। তারা মুক্তির অপেক্ষায় দিন গুনছেন। তাদের মধ্যে নতুন জীবন নিয়ে বেঁচে থাকার উদ্দীপনা দেখা গেছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/ইউজে/এমএস

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন