বিজ্ঞাপন

ক্ষতিগ্রস্ত ১ হাজার ৪৪০ জন পেলেন পূর্বাচলের প্লট

May 9, 2021 | 2:14 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) বাস্তবায়নাধীন পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প এলাকার আরও ১ হাজার ৪৪০ জন সাধারণ ক্ষতিগ্রস্ত ও মূল অধিবাসীকে তিন কাঠা আয়তনের একটি করে প্লটের বরাদ্দপত্র বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

রোববার (৯ মে) সকাল সাড়ে দশটায় ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তাদের হাতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বরাদ্দপত্র তুলে দেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ। এ সময় গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন।

এ নিয়ে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প এলাকায় সাধারণ ক্ষতিগ্রস্ত ও মূল অধিবাসী কোটায় প্লটের বরাদ্দপত্র বুঝে পেলেন মোট ৭ হাজার ৮৮২ জন।

নতুন করে প্লট প্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলার ১০০ জন মূল অধিবাসী এবং গাজীপুর জেলার ৪৪১ জন সাধারণ ক্ষতিগ্রস্ত ও ৮৯৯ জন মূল অধিবাসী।

বিজ্ঞাপন

প্লট প্রাপ্তদের নামের তালিকা রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর ওয়েবসাইট www.rajuk.gov.bd এ পাওয়া যাবে।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ০১/২০২১তম বোর্ডসভায় পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প এলাকার নারায়ণগঞ্জ অংশের মূল অধিবাসী ক্যাটাগরীতে ২২৪ জন আবেদনকারীর মধ্যে প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত যাচাই-বাছাই কমিটি কর্তৃক বৈধ হিসেবে বিবেচিত ১০০ জন, গাজীপুর অংশে মূল অধিবাসী ক্যাটাগরিতে ১৮৬০ জন আবেদনকারীর মধ্যে ৮৯৯ এবং গাজীপুর সাধারণ ক্ষতিগ্রস্ত ক্যাটাগরিতে ১৪৭০ জন আবেদনকারীর মধ্যে ৪৪১ জনকে বৈধ হিসেবে বিবেচনা করে প্রত্যেককে একটি করে ৩ (তিন) কাঠা আয়তনের প্লটের সাময়িক বারাদ্দ প্রদানের সুপারিশ করা হয়।

প্লট বরাদ্দ অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন।

বিজ্ঞাপন

রাজধানী শহর ঢাকার ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপ সামলানো ও এর বাসযোগ্যতা বজায় রাখার লক্ষ্যে ১৯৯৫ সালে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের কাজ শুরু করে। প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ১৯৯৬-২০০৯ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ৬ হাজার ২২৭.৩৬ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়।

এ অধিগ্রহণের ফলে বিপুলসংখ্যক মানুষ আশ্রয়হীন/ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। আশ্রয়হীন/ক্ষতিগ্রস্ত এসব মানুষ তাদের যথাযোগ্য পুনর্বাসনের দাবিতে আন্দোলন শুরু করলে প্রকল্প কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তীব্র দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয় যা একপর্যায়ে সংঘর্ষে রূপ নেয়। এ সময় প্রকল্প কর্তৃপক্ষের সঙ্গে স্থানীয় অধিবাসীদের সংঘর্ষে একজন প্রাণ হারান। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় সংসদের তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনে যান। পরিদর্শনকালে তিনি ভবিষ্যতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে আন্দোলনকারীদের উপযুক্ত পুনর্বাসনের আশ্বাস দেন।

আরও পড়ুন: করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট এসেছে ছোটাছুটি না করে সতর্ক থাকেন

বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সময়ে ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট সরকার গঠন করে এবং শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণের পর পরই তিনি তার প্রতিশ্রুতির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে প্রচেষ্টা শুরু করেন।

এর আগে, সাধারণ ক্ষতিগ্রস্ত ও মূল অধিবাসী হিসেবে প্রকল্প এলাকায় প্রত্যেককে ৩ (তিন) কাঠা আয়তনের প্লট বরাদ্দ দিয়ে ৬ হাজার ৪৪২ জনকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। রোববার প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে অবশিষ্ট ১৪৪০ জন মূল অধিবাসী ও ক্ষতিগ্রস্তকে প্লটের বরাদ্দপত্র প্রদানের মাধ্যমে মোট ৭ হাজার ৮৮২ জনকে পুনর্বাসনের মাধ্যমে তার সেই প্রতিশ্রুতির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন সম্পন্ন হলো।

এদিকে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী  বৈশ্বিক মহামারি করোনার দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, একটা ঈদে কোথাও না গিয়ে নিজের ঘরে থাকতে কী ক্ষতিটা হয়! আপনারা এই ছোটাছুটি না করে যে যেখানেই আছে, সে সেখানেই থাকেন। কারণ আবার নতুন ভ্যারিয়েন্ট এসেছে। এটি আরও বেশি ক্ষতিকারক। যাকে ধরে সঙ্গে সঙ্গে তার মৃত্যু হয়।

গণভবন প্রান্তে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র প্রান্তে বক্তব্য রাখেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী এমপি, সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ চুমকিসহ অনেকে।

প্রধানমন্ত্রী বৈশ্বিক মহামারি করোনার দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘করোনাভাইরাসের সময় আপনারা মাস্ক পরে থাকবেন, সাবধানে থাকবেন। কারণ করোনাভাইরাসের ভাইরাসের নতুন একটা ভ্যারিয়েন্ট এসেছে। এটি আরও বেশি ক্ষতিকারক। যাকে ধরে সঙ্গে সঙ্গে তার মৃত্যু হয়। সেজন্য আপনি নিজে সুরক্ষিত থাকেন। অপরকে সুরক্ষা দেন।’

আসন্ন ঈদ কেন্দ্র ঘরমুখো মানুষের বাড়ি ফেরার বিষয়ে বিরক্তি প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি জানি ঈদের সময় মানুষ পাগল হয়ে গ্রামে ছুটছে। কিন্তু এই যে আপনারা একসাথে যাচ্ছেন, এই চলার পথে ফেরিতে হোক, গাড়িতে হোক, যেখানেই হোক কার যে করোনাভাইরাস আছে আপনি জানেন না? কিন্তু আপনি সেটা বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, আপনার পরিবারের কাছে। মা-বাবা, দাদা-দাদি ভাই-বোন যেই থাকুক, আপনি কিন্তু থাকেও সংক্রমিত করবেন। তার জীবনটাও মৃত্যুঝুঁকিতে ফেলে দেবেন।’

‘একটা ঈদে কোথাও না যেয়ে নিজের ঘরে থাকতে কী ক্ষতিটা হয়! কাজেই আপনারা এই ছোটাছুটি না করে যে যেখানেই আছে, সে সেখানেই থাকেন। সেইখানেই নিজের মত করে ঈদকে উদযাপন করেন।’

সারাবাংলা/এনআর/একে

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন