বিজ্ঞাপন

অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে অবৈধ স্পিডবোট চালাতেন চান্দু

May 9, 2021 | 11:31 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সম্প্রতি শিবচরের বাংলাবাজার শিমুলিয়া নৌ-রুটের কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটের কাছে পদ্মানদীতে একটি স্পিডবোট ডুবে ২৬ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ওই স্পিড বোটের মালিক চান মিয়া ওরফে চান্দু মিয়াকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। র‌্যাব জানিয়েছে, টাকার নেশায় অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে চান্দু অবৈধ স্পিডবোট চালাতেন। শুধু চান্দুই নয়, লকডাউনে তার মতো অনেকেই এরকম অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে অবৈধ স্পিডবোট চালিয়ে থাকেন।

বিজ্ঞাপন

রোববার (৯ মে) বিকেল ৪টায় র‌্যাবের কারওয়ান মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে স্পিডবোট মালিকরা যাত্রী পারাপার করে থাকে। সেদিনের দুর্ঘটনার বিষয়ে চান্দু মিয়া র‌্যাবকে জানিয়েছে, তার মালিকানাধীন তিনটি স্পিডবোটের একটিরও বৈধ কোনো কাগজপত্র বা অনুমোদন নেই। তিনি অবৈধভাবেই সেগুলো চালাতেন।’

গত ৩ মে মাওয়া ফেরিঘাট এলাকায় একটি যাত্রীবাহী স্পিডবোট দ্রুত ও বেপরোয়া গতিতে নোঙ্গরে থাকা বালু বোঝাই বাল্ক হেডের ওপর আছড়ে পড়ে। এতে দুর্ঘটনায় ২৬ জন যাত্রী নিহত হয়। এ সময় পাঁচ যাত্রীকে জীবিত উদ্ধার করা গেছে। এই ঘটনায় ৪ মে মাদারীপুর জেলার শিবচর থানায় একটি মামলা করা হয়। গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে রোববার (৯ মে) ভোরের দিকে ঢাকার কেরানীগঞ্জের তেঘড়িয়া এলাকা থেকে চান মিয়া ওরফে চান্দু মোল্লা ওরফে চান্দুকে (৪০) গ্রেফতার করা হয়।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে মঈন বলেন, ‘লকডাউনে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অধিক মুনাফা লাভের আশায় চান মিয়া স্পিডবোটে যাত্রী পারাপার চালু রেখেছেন। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে বিষয়টি স্বীকার করেছে। দুর্ঘটনার শিকার ওই স্পিডবোটের ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা হয়েছিল। এছাড়া বোটে যাত্রী পরিবহনের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি ছিল। চান্দু মিয়া গত পাঁচ বছর ধরে যাত্রী পারাপার করে আসছিল। দুর্ঘটনার পর সে আত্মগোপনে চলে যায়।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘এ মামলায় চারজন আসামি। প্রধান আসামি চালক পুলিশের তত্ত্বাবধানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। মামলার বাকি দুই আসামি ইজারাদার। আরেকজন পলাতক রয়েছে, তাদের গ্রেফতারের বিষয়ে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

অবৈধভাবে যারা স্পিডবোটে যাত্রী পারাপার করছে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেবেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মাওয়া ও দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে স্পিডবোট ব্যবসা বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে পরিচালিত হয়। বিআইডব্লিটিএ, বিআইডব্লিউটিসি, জেলা প্রশাসক, ঘাট ইজারাদার ও মালিক সমিতির তত্ত্বাবধানে এ ব্যবসা পরিচালিত হয়। অনুমোদনহীন স্পিডবোট যাত্রী বহন করলে অবশ্যই আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’

বিজ্ঞাপন

খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা গেছে, তারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের লোকজনকে লুকিয়ে একটি নির্দিষ্ট সময়ে স্পিডবোটে যাত্রী পারাপার করত। সাধারণ সময়ে তারা যাত্রী পারাপারের দেড়শ টাকা করে নিলেও সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধের সময় যাত্রীদের কাছ থেকে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা নেয়। আর ওইদিন স্পিডবোটে ২০ জন যাত্রীর ধারণ ক্ষমতা থাকলেও দুর্ঘটনার সময় ৩২ জন যাত্রী ছিল। এক্ষেত্রে ঘাট ইজারাদার ও ঘাট মালিক সমিতির গাফিলতি পাওয়া গেছে।’

সারাবাংলা/ইউজে/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন