বিজ্ঞাপন

হাসপাতালে বুদ্ধদেব, অক্সিজেন বাড়লেও ফুসফুস নিয়ে শঙ্কা

May 25, 2021 | 7:29 pm

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসকদের পরামর্শে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির (মার্কসবাদী) পলিটব্যুরোর সদস্য বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে। আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে তাকে। মিনিটে ৩ লিটার করে অক্সিজেন দেওয়ায় তার রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ৯২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতালটি। তবে তার ফুসফুসে নতুন কিছু সমস্যা দেখা দেওয়ায় তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন চিকিৎসকরা।

বিজ্ঞাপন

আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়, ওই হাসপাতালে ছয় সদস্যের একটি মেডিকেল টিম পশ্চিমবঙ্গের সাবেক এই মুখ্যমন্ত্রীর চিকিৎসার দায়িত্বে রয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, আপাতত রক্তে অক্সজেনের মাত্রা বাড়লেও বুদ্ধদেবের ফুসফুসে নতুন কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। তবে এখনো সংজ্ঞা হারাননি বুদ্ধদেব।

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ও তার স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য সম্প্রতি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। মীরার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে পাম অ্যাভিনিউয়ে নিজ বাসাতেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন বুদ্ধদেব। সোমবার (২৪ মে) হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরেন মীরা। কিন্তু সেই রাত থেকেই বুদ্ধদেবের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে।

আজ মঙ্গলবার (২৫ মে) সকাল নাগাদ বুদ্ধদেবের শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ৮০ শতাংশে নেমে যায়। এসময় চিকিৎসকরা দ্রুত তাকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। পরে দুপুরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

বিজ্ঞাপন

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে হাসপাতালে ভর্তির ঘণ্টাখানেক পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তার শারীরিক অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল রয়েছে। সিটি স্ক্যানসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয়েছে। সেগুলোর রিপোর্ট পেলে তার শারীরিক অবস্থার তথ্য বিস্তারিত জানানো যাবে। ফুসফুসের সমস্যা কতটা গুরুতর, সেটিও বোঝা যাবে তখন।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা সিওপিডি’তে দীর্ঘ দিন ধরে ভুগছেন পশ্চিমবঙ্গের বর্ষীয়ান এই বাম নেতা। তার বর্তমান শারীরিক জটিলতার কারণ এই সিওপিডি কি না, সেটি তারা খতিয়ে দেখছেন। আপাতত বাইপ্যাপ সাপোর্ট (যন্ত্রের মাধ্যমে শ্বাস নিতে সহায়তা করা) দেওয়া ছাড়াও অ্যান্টিবায়োটিক ও স্টেরয়েড দেওয়া হচ্ছে তাকে।

১৯৪৪ সালে উত্তর কলকাতায় জন্ম বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের। কিশোর কবি হিসেবে পরিচিত সুকান্ত ভট্টাচার্য তার কাকা ছিলেন। কলেজ জীবন থেকেই রাজনীতিতে যুক্ত হন তিনি। পরে সিপিআই (এম) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য, সিপিআই (এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও পরে সিপিআই (এম) পলিটব্যুরোর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

বিজ্ঞাপন

১৯৭৭ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য মন্ত্রিসভায় তথ্য ও জনসংযোগ বিভাগের দায়িত্ব পালন করেন। পরে ১৯৮৭ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৯ সালে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী হন তিনি। ২০০০ সালের ৬ নভেম্বর তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু রাজনীতি থেকে অবসর নিলে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন বুদ্ধদেব। ২০০১ ও ২০০৬ সালের নির্বাচনে টানা জয় নিয়ে ২০১১ সাল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী পদে আসীন ছিলেন তিনি। ২০১১ সালের ১৯ মে পঞ্চদশ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা সাধারণ নির্বাচনে পরাজিত হলে মুখ্যমন্ত্রী পদে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রায় একযুগের শাসনের অবসান ঘটে।

ইন্টারনেট থেকে নেওয়া ফাইল ছবি

সারাবাংলা/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন