May 26, 2021 | 1:43 pm
আজমল হক হেলাল, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে সুন্দরবনের ভেতরে এখন বুক সমান পানি। জলোচ্ছ্বাসে পানির চাপ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। ধীরে ধীরে এই চাপ বাড়ছে। প্রাণ রক্ষায় বাঘ, হরিণসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণী উঁচুস্থানে আশ্রয় নেওয়ার জন্য ছোটাছুটি করছে। কিছু বাঘ এবং হরিণ উঁচু স্থানে আশ্রয়ও নিয়েছে। কটকা এবং কচিখালি এলাকায় কিছু হরিণ মারা গেছে। বাঘের মৃত্যুর খবর এখনও পাওয়া যায়নি। তবে বনরক্ষীদের ধারণা, দুর্বল এবং বয়স্ক বাঘসহ অনেক প্রাণী মারা যেতে পারে।
সুন্দরবনের কটকা, কচিখালি, কয়রা, আংটিআরা এবং বগি এলাকায় কর্তব্যরত ফরেস্ট গার্ড ও বোর্ড চালকদের কাছ থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
এসব বিষয় নিয়ে সুন্দরবনে কর্মরত এসিএফ জয়নাল আবেদীন সারাবাংলাকে বলেন, ‘স্বাভাবিকের চেয়ে পানির চাপ পাঁচ থেকে ছয় ফুট বেশি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
কচিখালিতে কর্তব্যরত এক ফরেস্ট কর্মকর্তা জানান, কচিখালি বেরিবাঁধ ভেঙে গেছে। গাছপালা ভেঙেছে প্রচুর। ট্রলারসহ অন্যান্য যান বেঁধে রাখার জেটি ভেঙে গেছে। মৃত হরিণও দেখা গেছে বেশকিছু।
কটকায় কর্মরত একজন কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, জলোচ্ছ্বাসের কারণে নারিকেল ও শাল গাছ এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বসবাসের স্থাপনাও ভেঙে গেছে। সুন্দরবনের ভেতরের পুকুর পাড় ভেঙে লবণ পানিও ঢুকেছে। এছাড়া সুন্দরবনের ভেতরে পর্যটকদের যাওয়ার জন্য ফুড ট্রেনও ভেসে গেছে। বিশুদ্ধ পানি রাখার ট্যাংক, সুন্দরী গাছসহ অন্যান্য গাছের মজুদ রাখা লট ভেসে গেছে।
তিনি আরও জানান, হরিণসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী আশ্রয় নিয়েছে পুকুর পাড়ের উঁচু জায়গায়। সেখান থেকে একটু দূরে আশ্রয় নিয়েছে বাঘ। যে পরিমাণের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে হরিণ, বাঘসহ অন্যান্য প্রাণী মারা যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আরেকজন কর্মকর্তা জানান, প্রচণ্ড বাতাসের সঙ্গে পানির চাপ। এতে বসবাসের এলাকায় বাঁধের কিছু অংশ ভেঙে গেছে। সেই বাঁধ ধরে রাখার চেষ্টা চলছে।
সুন্দরবনের ভেতরে কয়েকজন ফরেস্ট গার্ড গিয়ে দেখেছেন, উঁচুস্থানে বাঘ আশ্রয় নিয়েছে। হরিণ গাছের ডাল জড়িয়ে বেঁচে আছে। তারা জানান, কোনো উঁচু জায়গায় বাঘ আশ্রয় নিলে তার আশেপাশে অন্যান্য বন্যপ্রাণী আশ্রয় নিতে পারে না। তারা উঁচু গাছের ডালে মাথা রেখে শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ে থাকে। বাঘ উঁচু জায়গা খুঁজে না পেলে তারাও এভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ে থাকে। এ সময় বনবিড়ালসহ অন্যান্য ছোট প্রাণী গাছের উপরে আশ্রয় নেয়। তাদের মতে, বড় জলোচ্ছ্বাস হলে বাঘ ও হরিণ বেশি মারা যায়।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/পিটিএম