বিজ্ঞাপন

থানায় গৃহবধূর শ্লীলতাহানির অভিযোগে এসআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা

June 1, 2021 | 6:00 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

বরিশাল: গৃহবধূকে থানায় ডেকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে পুলিশের এক উপপরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমন ট্রাইবুনালে মামলা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

গত ২৪ মে নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমন ট্রাইবুনালে মামলাটি দায়ের করা হলেও গতকাল সোমবার (৩১ মে) বিকেলে তা জানাজানি হয়।

আদালতের বিচারক মো. আবু শামীম আজাদ মামলাটি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আসাদুলকে (৩০) মামলায় একমাত্র আসামি করা হয়েছে।

অভিযোগকারী গৃহবধূর বক্তব্য, কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুল ইসলাম তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়ার কারণে এতদিন মামলা দায়ের করেননি তিনি। ২৪ মে মামলা দায়ের করলেও পুলিশের চাপে তাৎক্ষণিকভাবে তা প্রকাশ করেননি তিনি।

বিজ্ঞাপন

অভিযোগকারী নারী বরিশাল নগরীর সাগরদী ধান গবেষণা এলাকার বাসিন্দা। গত বছরের ১৬ অক্টোবর কোতোয়ালি মডেল থানার একটি কক্ষে এসআই আসাদুল তার শ্লীলতাহানি করেন বলে ওই নারীর অভিযোগ।

মামলার আরজির বরাত দিয়ে গৃহবধূর আইনজীবী আসাদুজ্জামান হাওলাদার জানান, গত বছর ওই গৃহবধূর এক প্রতিবেশীর সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিরোধ সৃষ্টি হয়। পরে ওই গৃহবধূকে জমি ছেড়ে দিতে প্রতিপক্ষরা নানা হুমকি দেন। ওই গৃহবধূর স্বামী ব্যাংক কর্মকর্তা। তার কর্মস্থল বরিশালের বাইরে ছিল। এ কারণে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর গৃহবধূ নিজেই কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন।

তিনি জানান, জিডির তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আসাদুল তাকে থানায় এসে দেখা করতে বলেন। গত ১৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় ওই গৃহবধূ কোতোয়ালি মডেল থানায় যান। এসআই আসাদুল ওই গৃহবধূকে তার কক্ষে নিয়ে যান। এরপর নানা অজুহাত দেখিয়ে তাকে দীর্ঘসময় বসিয়ে রাখেন। একপর্যায়ে একটি আবেদনপত্র গ্রহণের অজুহাত দেখিয়ে গৃহবধূকে যৌন হয়রানি করেন। এরপর জোরপূর্বক জড়িয়ে ধরে বিয়ের প্রস্তাব দেন।

বিজ্ঞাপন

মামলার আরজিতে গৃহবধূ আরও উল্লেখ করেন, ঘটনার পরপরই থানার ওসি নুরুল ইসলামকে মৌখিকভাবে বিষয়টি জানানো হয়। তিনি নারী উপপরিদর্শক (এসআই) রুমা পারভীনকে দিয়ে ঘটনা তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু এরপরও কয়েকমাস পেরিয়ে গেলেও এসআই রুমা পারভীন বা থানার অন্য কোনো কর্মকর্তা গৃহবধূর সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। গত ২৩ মে এসআই রুমা পারভীনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, তাকে ওসি এ সংক্রান্ত কোনো নির্দেশ দেননি। এরপর থানায় মামলা দিতে চাইলে ওসি এজাহার গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান।

আদালতে মামলা করার বিলম্বের কারণ হিসেবে গৃহবধূ থানার ওসি বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলে সময় ক্ষেপণ করেছেন বলে আরজিতে উল্লেখ করেন। এজন্য বাদী ঘটনার পর আদালতে মামলা করতে পারেননি।

তিনি আরজিতে আরও উল্লেখ করেন, ঘটনার সাক্ষী প্রমাণ আছে। এছাড়া সে দিনের থানার সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজ দেখলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যাবে।

তবে অভিযুক্ত এসআই আসাদুল বলেন, গৃহবধূ যে ঘটনা উল্লেখ করে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন, সরেজমিনে তদন্ত করে তার সত্যতা পাওয়া যায়নি। জিডির তদন্ত প্রতিবেদন মনমতো না হওয়ায় ওই গৃহবধূ তাকে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন।

বিজ্ঞাপন

অভিযোগের বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম বলেন, এসআই আসাদুলের বিরুদ্ধে এক নারী অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি তদন্তাধীন আছে। তাই এ বিষয় কিছু বলা ঠিক হবে না।

জেলা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার হুমায়ন কবীর জানান, পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শ্লীলতহানির অভিযোগ তদন্ত সংক্রান্ত আদালতের আদেশ এখনো তিনি পাননি। পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

সারাবাংলা/এসএসএ

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন