বিজ্ঞাপন

পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা: ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিনসহ গ্রেফতার ৫

June 14, 2021 | 3:14 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: জনপ্রিয় নায়িকা পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলার প্রধান আসামি ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তিন নারীসহ মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার (১৪) দুপুরে রাজধানীর উত্তরার নিজ বাসা থেকে নাসির উদ্দিনকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় তার বাসা থেকে বিদেশি মদ ও ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম-কমিশনার (উত্তর) হারুন-অর-রশিদ এ খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত তিন নারী ডিজে পার্টির সদস্য।

এর আগে ঢাকার সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মাইনুল ইসলাম জানান, সোমবার (১৪ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এই মামলাটি রুজ্জু করা হয়। সকাল ১০টার দিকে রূপনগর থানার এসআই জাকির হোসেন সাভার থানায় পরীমনির লিখিত অভিযোগ পৌঁছে দেন।

রোববার (১৩ জুন) রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে পরীমনি অভিযোগ করেন, ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার শিকার হওয়ার পর চারদিন পুলিশের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন অভিযোগ নিয়ে। অভিযোগ গ্রহণ করা দূরে থাক, তাকে পাত্তাই দেয়নি রাজধানীর বনানী থানা পুলিশ। উল্টো পুলিশসহ চারপাশের লোকজন তাকে বুঝিয়েছেন, ‘তুমি মেয়ে, তুমি সিনেমার নায়িকা, তুমি এসব অভিযোগ করলে উল্টো তোমার দিকে আঙুল উঠবে।’

বিজ্ঞাপন

এরপর মধ্যরাতে তার বাসায় উপস্থিত হন রূপনগর থানার ওসি আরিফুর রহমান সরদারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল। পরীমনির অভিযোগ গ্রহণের খবর নিশ্চিত করে রূপনগর থানা পুলিশের এস আই ফারুক বলেন, সোমবার (১৪ জুন) ভোরে রূপনগর থানা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন পরীমনি। অভিযোগে তিনি ঢাকা বোট ক্লাব লিমিটেডের নাসির উদ্দিন মাহমুদের কথা উল্লেখ করেছেন।

এস আই ফারুক আরও বলেন, আমরা পরীমনির বাসায় গিয়ে তার কাছ থেকে বিস্তারিত শুনেছি ও বক্তব্য নিয়েছি। তিনি লিখিতভাবে অভিযোগ করেছেন। আমি সেই অভিযোগ সাভার থানার কাছে পৌঁছে দিচ্ছি। তারা এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি মিডিয়া) সোহেল রানা বলেন, পরীমনি পুলিশের প্রয়োজনীয় ও উপযুক্ত সেবা পাবেন। উপযুক্ত বিচারও পাবেন।

ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার শিকার হওয়ার পরও পুলিশের অসহযোগিতার বিষয়টি বর্ণনা করতে গিয়ে পরীমনি বলেন, ‘অভিযোগ নিয়ে বনানী থানায় যাওয়ার পর কর্তব্যরত কর্মকর্তা তাকে পরদিন সকাল ১০টায় ওসি স্যার আসার পর থানায় আসতে বলেন।’ কাঁদতে কাঁদতে পরীমনি বলেন, ‘এরপর কত ১০টা চলে গেছে।’ কথাটা বারবার পুনরাবৃত্তি করেন তিনি।

এই অভিনেত্রী দফায় দফায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘এই চারদিন ধরে আমি ঘুমাতে পারছি না, খেতে পারছি না। সবার নীরবতার কারণে নিজেই সব প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিই। আমি ভিক্টিম, আমার ওপর অন্যায় হয়েছে। আমি বিচার চাই।’

পরীমনি অসহযোগিতার অভিযোগ এনেছেন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানের বিরুদ্ধেও। জায়েদ খান ‘দেখতেছি, দেখতেছি’ করে এড়িয়ে যান বলে অভিযোগ পরীমনির।

বিজ্ঞাপন

ঘটনার দিন রাতের বর্ণনা দিয়ে পরীমনি বলেন, গত বুধবার রাতে কস্টিউম ডিজাইনার জিমি ও জিমির বন্ধু আমিরসহ তারা উত্তরায় বোট ক্লাবে গিয়েছিলেন। ক্লাবটা তখন বন্ধের সময়। দুজন বয়স্ক ব্যক্তি এসে তাদের মদপানের আমন্ত্রণ জানান। যাদের একজন নাসির মাহমুদ। শরীর খারাপ বলে তাদের সেই আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেন পরীমনি।

তিনি বলেন, এরপর জোরাজুরির একপর্যায়ে তাকে মারধর করে কিছু লোক। এক পর্যায়ে নাসির মাহমুদ তার মুখে মদের বোতল ঠেসে ধরে গিলতে বাধ্য করেন। তখন তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালান।

হেনস্থার শিকার পরীমনি প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর ছাড়া পেয়ে উপস্থিত হন বনানী থানা। পরীমনি বলেন, পুলিশ কর্মকর্তারা তার কথা শুনতে চায়নি। পুলিশ তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। সেখান থেকে তিনি বাসায় চলে আসেন।

সারাবাংলা/এএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন