বিজ্ঞাপন

রাষ্ট্রীয় সম্পদ অপচয় ও পাচারে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন: রব

June 14, 2021 | 10:42 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রাষ্ট্রীয় সম্পদ অপচয় ও পাচারে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব। ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটেও বিশেষ শ্রেণিকে সুবিধা দেওয়া হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

রব বলেন, এ বাজেট জনগণের জন্য নয়, একটি বিশেষ শ্রেণির স্বার্থ রক্ষায় বাজেট প্রণীত হয়েছে। দুর্নীতি অপচয় ও লুণ্ঠনের মাধ্যমে সরকার বাংলাদেশকে ছিন্নভিন্ন করছে। রাষ্ট্রীয় সম্পদ অপচয় ও পাচারে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সব দায় বর্তমান সরকারের। এ গণবিরোধী সরকারের বিরুদ্ধে বৃহত্তর গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট পর্যালোচনায় জেএসডি আয়োজিত ‘বিপদজ্জনক আয় বৈষম্য’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভার সভাপতির বক্তব্যে আ স ম আবদুর রব এসব কথা বলেন।

আলোচনা সভায় জেএসডি’র লিখিত প্রস্তাবনা উত্থাপন করেন দলের কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন। আলোচনায় অংশ নেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরাম নেতা ড. রেজা কিবরিয়া, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক নুরুল হক নুরসহ অন্যরা।

বিজ্ঞাপন

করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও অর্থনৈতিক বাস্তবতার নিরিখে আর্থসামাজিক পরিবর্তন, দারিদ্র্য দূরীকরণ, কর্মসংস্থান ও বৈষম্য নিরসনের লক্ষ্যে আ স ম রব দলের উত্থাপিত  আট দফা বাস্তবায়নের দাবি জানান। এই আট দফা দাবি হলো—

১. বিপজ্জনক আয় বৈষম্য কমানোর জন্য ব্যাপক সংস্কার, দুর্নীতি ও অপচয় রোধসহ সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দীর্ঘস্থায়ী সুসমন্বিত মহাপরিকল্পনা গ্রহণ;

২. স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলায় ‘জাতীয় স্বাস্থ্য কাউন্সিল’ (National Health Council) গঠন;

বিজ্ঞাপন

৩. ভ্যাকসিন উৎপাদনে রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা গ্রহণ ও বেসরকারি খাতে সহায়তা প্রদান;

৪. কর্মহীন কয়েক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান, খাদ্য, চিকিৎসা ও বাসস্থানের স্থায়ী পরিকল্পনা গ্রহণ;

৫. সব হতদরিদ্র পুরুষ, নারী ও শিশু সামাজিক সুরক্ষার বেষ্টনীর ভেতরে আনা ও বরাদ্দ বাড়ানো, উপকারভোগী বাছাইয়ে দলীয়করণ বন্ধ করা;

৬. সংস্কৃতি ক্ষেত্রে বাজেট বাড়ানো;

বিজ্ঞাপন

৭. বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওপর আরোপিত ট্যাক্স বাতিল করা; এবং

৮. কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষের ন্যায়সঙ্গত অধিকার নিশ্চিত করা।

আলোচনা সভায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ একটি বিরাট দেশ। আগামী কিছুদিনের মধ্যে লোক সংখ্যা দাঁড়াবে ২৫ কোটিতে। এই দেশকে কেবল ঢাকা থেকে পরিচালনা করা সম্ভব হবে না। এজন্য কেন্দ্রীভূত ক্ষমতার পরিবর্তে বাংলাদেশে কয়েকটি প্রদেশ গঠন করতে হবে। সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনও জরুরি হয়ে পড়েছে। জেএসডি’র এসব প্রস্তাবনায় অগ্রসর রাজনীতির প্রতিফলন ঘটেছে।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সরকারের বাগাড়ম্বরে মনে হয়, তারা চাইলেই খালেদা জিয়ার মতো করোনাকেও কারাগারে রাখতে পারে। লক্ষ কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু সরকার পাচার রোধ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। দুই কোটি মানুষকে খাদ্য সহায়তাসহ এসএমই খাতে নগদ প্রণোদনা প্রদানের দাবি জানান মান্না।

বক্তব্যে জোনায়েদ সাকি বলেন, উত্থাপিত বাজেটে গণবিরোধী ও লুণ্ঠনকারীদের তোষণ নীতি প্রতিফলিত হয়েছে। সরকার নীতিগতভাবে জনগণবিরোধী অবস্থান গ্রহণ করেছে। সুতরাং সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই গড়ে তুলতে হবে।

ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, এ বাজেট দুর্নীতির ধারাবাহিকতা রক্ষার বাজেট। আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে বর্তমান সরকারের দুর্নীতি করার সাংবিধানিক অধিকারও রয়েছে। ১৯৭৪ সালে কী ঘটেছিল, তাও আমাদের স্মরণ রাখতে হবে।

নুরুল হক নুর বলেন, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা আজ ধ্বংসের পথে। গবেষণা খাতে কোনো বরাদ্দ নেই। দেশের মানুষ এ সরকারকে চায় না। তাই সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে রাস্তায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে পারলে সরকার টিকে থাকতে পারবে না।

ফাইল ছবি

সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন