বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম কলেজের বন্ধ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের ২ গ্রুপে মারামারি

June 16, 2021 | 5:06 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: করোনাভাইরাস মহামারির কারণে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজের বন্ধ থাকা ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে চারজন আহত হয়েছেন। বিবদমান একপক্ষ দেশীয় অস্ত্রসহ এক যুবককে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১৬ জুন) দুপুর পৌনে ১টার দিকে নগরীর চকবাজার থানায় ক্যাম্পাসের প্রবেশপথে প্যারেড কর্ণারের মুখে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

আহতরা হলেন- ইংরেজি বিভাগের সম্মান চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্র আবদুল্লাহ আল সাইমন (২৩), গণিত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের আবু তোরাব (২২) ও চতুর্থ বর্ষের সাফায়েত হোসেন রাজু (২৪) এবং স্নাতক পাশ কোর্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আব্দুল মালেক রুমি। এদের মধ্যে আবদুল্লাহ আল সাইমন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের উপ-ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক। চারজনই চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিমের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর মাহমুদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব আছে। কলেজ এখন বন্ধ। কলেজের ভেতরে আধিপত্য নিয়ে মারামারি হয়নি। তবে অভ্যন্তরীণ কোনো দ্বন্দ্বের কারণে মারামারি হয়েছে। এতে ৩-৪ জন আহত হয়েছে। সুনির্দিষ্টভাবে কী কারণে মারামারিটা হয়েছে সেটা আমরা আহতদের সঙ্গে কথা বলে দেখছি।’

বিজ্ঞাপন

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, প্যারেড কর্ণারের হোস্টেল গেইট থেকে বন্ধ থাকা শেরে বাংলা হল পর্যন্ত এলাকায় উভয়পক্ষে প্রায় শ’খানেক তরুণ মারারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। এসময় তাদের মধ্যে কয়েকজনের হাতে দেশীয় বিভিন্ন ধরনের ধারালো অস্ত্র দেখা গেছে। সভাপতি মাহমুদুল করিমের অনুসারীরা সৌরভ সাহা নামে একজনকে রামদাসহ ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন।

তবে ওসি আলমগীর মাহমুদ জানিয়েছেন, সৌরভ সাহা ওই কলেজের ছাত্র নন। তাকে শত্রুতাবশত রামদা ধরিয়ে পুলিশের হাতে দেওয়া হয়েছে কি না সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আহতদের মধ্যে সাইমন ও রুমিকে তাদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি দু’জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে সাইমন ও রুমির অবস্থা আশঙ্কামুক্ত বলে ডাক্তারের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়িতে দায়িত্বরত এএসআই শীলব্রত বড়ুয়া।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম এই ঘটনার জন্য ২০১৯ সালে র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়া চকবাজার এলাকার কথিত যুবলীগ নেতা নুর মোস্তফা টিনু ও তার অনুসারীদের দায়ী করেছেন। নুর মোস্তফা টিনু নিজেই বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে এনে তার কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে বলে তার দাবি।

মাহমুদুল সারাবাংলাকে বলেন, ‘ক্যাম্পাস বন্ধ। আজ (বুধবার) ইংরেজি বিভাগের একটা ভাইবা পরীক্ষা ছিল। সেজন্য সাইমন ক্যাম্পাসে এসেছিল। পরীক্ষা শেষে চলে যাওয়ার সময় তার সঙ্গে আরও কয়েকজন কর্মী দেখা করতে হোস্টেল গেইটে যান। তখন হঠাৎ টিনুর নেতৃত্বে একদল বহিরাগত সন্ত্রাসী তাদের ওপর হামলা করে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সৌরভ নামে একজন বহিরাগতকে রামদাসহ গ্রেফতার করেছে। চকবাজার ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে উপ-নির্বাচন হবে। সন্ত্রাসী টিনু কাউন্সিলর হতে চায়। সেজন্য বহিরাগত সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে শক্তি দেখাচ্ছেন।’

মাহমুদুল করিমের অভিযোগের বিষয়ে নুর মোস্তফা টিনুর বক্তব্য জানতে পারেনি সারাবাংলা।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুভাষ মল্লিক সবুজ কথিত যুবলীগ নেতা নুর মোস্তফা টিনুর অনুসারী হিসেবে পরিচিত। তার দাবি, সভাপতির অনুসারীরা ‘টোকাইদের’ নিয়ে প্রত্যেকদিন সন্ধ্যার পর শেরে বাংলা হোস্টেলে মদ ও ইয়াবার আসর বসায়। সবুজ বিষয়টি কলেজের অধ্যক্ষ এবং পুলিশকে জানিয়ে দেন। অধ্যক্ষ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে ডেকে নিয়ে সন্ধ্যা ৬টার পর আর কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থান করা যাবে না বলে নির্দেশ দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সভাপতির অনুসারীরা বহিরাগত ‘টোকাইদের’ নিয়ে হামলা করেছে।

বিজ্ঞাপন

ক্যাম্পাসে ঘটনার বিষয়ে বক্তব্য জানতে চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষকে ফোন করেও পাওয়া যায়নি।

চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম এবং সাধারণ সম্পাদক সুভাষ মল্লিক সবুজ উভয়ই শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

সারাবাংলা/আরডি/এসএসএ

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন