বিজ্ঞাপন

জনগণকে বিভ্রান্ত করতেই পরীমনি ইস্যু: ফখরুল

June 16, 2021 | 8:17 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: জনগণকে বিভ্রান্ত করতেই সরকার পরীমনি ইস্যুকে সামনে নিয়ে এসেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১৬ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক গোল টেবিল আলোচনায় তিনি এই অভিযোগ করেন। সংবাদপত্রের কালো দিবস উপলক্ষে এ আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই যে খুব লাফালাফি হচ্ছে এখন। ইস্যুটা হচ্ছে পরীমনি। হু ইজ পরীমনি? আমরা কি বুঝি না যে, আবার সেই ডাইভারসান, আবার সেই অন্যদিকে নিয়ে যাওয়া। প্রতি মুহূর্তে জনগণকে বিভ্রান্ত করা, প্রতারণা করা, মিথ্যাচার করাটাই হচ্ছে ওদের (ক্ষমতাসীন) মূল কাজ। তারা (সরকার) মানুষকে বিভ্রান্ত করবে, মানুষকে ভুলপথে নিয়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘যখন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য, তার মুক্তি নিয়ে কথা ‍উঠছে, যখন দেশের গণতন্ত্র নিয়ে কথা উঠছে, যখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একেবারে চরম ব্যর্থতা, কোভিড যখন চরমে উঠছে তখন আবার এদের নিয়ে ডাইভারসান করা হচ্ছে। মানুষের সঙ্গে এই ধরনের প্রতারণা করা, এই যে খেলা- এটা আওয়ামী লীগের পক্ষে সম্ভব। একরম কৌশল করেই তারা সমগ্র জাতিকে দমন করে রাখছে। তারা প্রতারক সরকার, জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেই ক্ষমতায় বসে আছে।’

বিজ্ঞাপন

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি জানি না কত দূর কী সত্য, কী ঘটনা। কিন্তু কালকে এই ঘটনাটা দেখে মনে হয়েছে যে, এভরি থিং ইজ পসিবল ইন দিজ কান্ট্রি। মামলা করল একটা, আর আরেক ঘটনার অপরাধে তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে আটদিন রিমান্ডে। আমি বুঝিনি, সত্যি বলছি আমি বুঝতে পারিনি ব্যাপারটা।’

তিনি বলেন, ‘মামলা করলেন ধর্ষণ এবং হত্যার চেষ্টার। আর তাকে রিমান্ডে নিচ্ছেন কি জন্য যে, তার কাছে মাদক পাওয়া গেছে। যেখান থেকে তাকে অ্যারেস্ট করেছে সেই বাড়িটিও তার নয়, এটা আরেকজনের বাসা। আমার কাছে এসব বোধগম্য নয়, আমি বুঝি না এগুলো। আজকে অনেক প্রশ্ন এসেছে। তাহলে কি শুধুমাত্র ক্ষমতাসীনরা, ক্ষমতাধারীরা যা চাইবেন তাই হবে? এই প্রশাসন যাকে ইচ্ছা, যাকে খুশি তাকেই তুলে নিয়ে যাবে? তার সম্মন, ইজ্জত, তার পরিবারের কাছে ইজ্জত, সমাজের কাছে ইজ্জত সমস্ত কিছু ধুলিসাৎ হয়ে যাবে?’

‘বিএনপির সাথে এক সঙ্গে বাস করা যায় না’— আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তার এই বক্তব্যে তাদের আসল চরিত্র, তাদের আসল মানসিকতা বেরিয়ে এসেছে। তারা শক্তিশালী বিরোধীদল তো দূরের কথা, কোনো বিরোধীদলই চায় না। তার এই বক্তব্য থেকে সেটাই প্রমাণিত।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, বিএনপি কারও দয়ার দল না, বিএনপি কারও দয়াতে টিকে নাই। বিএনপি সম্পূর্ণভাবে অস্তিত্ব নিয়ে টিকে আছে জনগণের ভালোবাসা ও জনগণের সমর্থন নিয়ে। এই কথাটা অবশ্যই সরকারকে মনে রাখতে হবে।’

সারাদেশে সাংবাদিকদের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতনের জন্য সরকার ও প্রশাসনকে অভিযুক্ত করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদকে দীর্ঘদিন আটক করে রাখা হয়েছিল, সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীকে প্রায় আট মাস ধরে আটক করে রাখা হয়েছে। শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমানের মতো সম্পাদক দেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। প্রায় ৬০ জনের বেশি সাংবাদিক দেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন শুধু জীবনের ভয়ে।’

তিনি বলেন, ‘আর যারা দেশে আছেন তারা লিখতে পারেন না। লিখতে না পারার জন্য কখনও আমি তাদের দোষারোপ করি না। কারণ যে ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে, তাতে সেলফ সেন্সরশীপ নিজেদের আরোপ করে নিতে হয়েছে জীবনের ভয়ে, জীবিকার ভয়ে, সন্তান হারানোর ভয়ে, মামলার ভয়ে। কারণ ইতোমধ্যে আমরা দেখেছি, কীভাবে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে সচিবালয়ের ভেতরে নির্যাতন করা হলো।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই অবস্থা থেকে উত্তরণে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে প্রস্তুতি নিতে হবে, সবাইকে জেগে উঠতে হবে। তরুণ যুবকদের এগিয়ে আসতে হবে। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, সংবাদ কর্মীদের নিরাপত্তা, তাদের মুক্তি- সবকিছুই নির্ভর করছে গণতন্ত্রের মুক্তির উপর। গণতন্ত্র যদি মুক্তি না হয়, তাহলে কখনোই কারও মুক্তি সম্ভব নয়।’

বিজ্ঞাপন

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও মিডিয়া উপ-কমিটির সদস্য সচিব শ্যামা ওবায়েদের সঞ্চালনায় গোল টেবিল আলোচনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বচন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, চেয়ার পারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুল হাই শিকদার, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি এম আবদুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, দৈনিক দিনকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী, বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব এমএ আজিজ ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

Tags: , , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন