বিজ্ঞাপন

ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মানবতাবিরোধী অপরাধী: অ্যামনেস্টি

June 19, 2021 | 7:47 pm

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইরানে সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে মানবতাবিরোধী অপরাধী হিসেবে আখ্যায়িত করে বিবৃতি দিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। শনিবার (১৯ জুন) অ্যামনেস্টির বিবৃতিতে বলা হয়, ইব্রাহিম রাইসি হত্যা, নির্যাতন ও গুমের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (১৮ জুন) ইরানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার প্রকাশিত আংশিক ফলাফলে দেখা যায় কট্টরপন্থী বিচারপতি ইব্রাহিম রাইসি এগিয়ে রয়েছেন। বাকি যেসব কেন্দ্রের ভোট গণনা এখনও হয়নি তার সবগুলোর ফল যোগ হলেও অন্য কেউ রাইসিকে ছাড়িয়ে যেতে পারবেন না। ফলে ইব্রাহিম রাইসিকে ইতিমধ্যে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তার প্রতিপক্ষ অন্য প্রার্থীরাও রাইসিকে বিজয়ের অভিনন্দন জানিয়েছেন।

শনিবার রাইসির বিজয়ের খবর প্রকাশ হওয়ার পর মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ওই বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ইব্রাহিম রাইসি হত্যা, গুম, নির্যাতনের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্তের মুখোমুখি হওয়ার পরিবর্তে তিনি প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হলেন। এটি আবারও মনে করিয়ে দেয় যে, ইরানে দায়মুক্তির শাসন চলছে।

এতে বলা হয়, ২০১৮ সালে আমাদের সংস্থার এক প্রতিবেদনে ইব্রাহিম রাইসির মানবতাবিরোধী অপরাধের চিত্র উঠে এসেছিল। ১৯৮৮ সালে ইব্রাহিম রাইসি তেহরানের নিকটবর্তী এভিন ও গোহরদশত কারাগারের ডেথ কমিশনের সদস্য ছিলেন। ওই ডেথ কমিশন কিভাবে মানুষকে গুম করতো এবং বিচারবহির্ভূতভাবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতো তা ওই প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছিল।

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, ১৯৮৮ সালে তেহরানের বিপ্লবী আদালত বামপন্থী ও অন্যান্য ভিন্নমতাবলম্বী রাজনৈতিকদের গণ-মৃত্যুদণ্ড দেয়। ওই আদালতের ডেপুটি প্রসিকিউটর ছিলেন ইব্রাহিম রাইসি। সেসময় প্রায় ৫ হাজার রাজনৈতিক বন্দীকে হত্যার অভিযোগ আছে ওই ডেথ কমিশনের বিরুদ্ধে।

এছাড়া ২০১৯ সালে দেশব্যাপী আন্দোলনের পর বেআইনিভাবে শত শত পুরুষ, নারী এবং শিশুদের হত্যা এবং হাজার হাজার বিক্ষোভকারীকে দোষী সাব্যস্ত করে আটক করে ইরানের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রাষ্ট্রীয় বাহিনীর এসব অপরাধকে বিচারপতি হিসেবে দায়মুক্তি দিয়েছিলেন ইব্রাহিম রাইসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের বিচারবিভাগের প্রধান হিসেবে ইব্রাহিম রাইসি মানবাধিকারের উপর খড়গহস্ত হন। তিনি শত শত শান্তিপূর্ণ ভিন্নমতাবলম্বী, মানবাধিকার কর্মী ও নিপীড়িত সংখ্যালঘুকে নির্বিচারে আটক করেছেন।

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, আলেম ইব্রাহিম রাইসি তার কর্মজীবনের বেশিরভাগ সময়ই প্রসিকিউটর হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বর্তমান মধ্যপন্থী প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজয়ের দুই বছর পর ২০১৯ সালে রাইসিকে দেশটির বিচার বিভাগের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।

এবার ইব্রাহিম রাইসি নির্বাচনী প্রচারণায় নিজেকে দেশটির দুর্নীতি রোধ ও অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানের জন্য যোগ্য ব্যক্তি হিসেবে উপস্থাপন করেন। এর ফলও পেয়েছেন তিনি।

এর আগে শুক্রবার সকাল থেকে ইরানের নাগরিকরা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেন। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ৬ কোটি। তবে দেশটির চলমান অর্থনৈতিক সংকট বিবেচনায় সরকারবিরোধিতার অংশ হিসেবে অনেকেই ভোটদান থেকে বিরত থেকেছেন বলে দাবি করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আইই

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন