বিজ্ঞাপন

সম্মেলন আনুষ্ঠানিকতা মাত্র, কমিটি ‘ঢাকা থেকে’

June 19, 2021 | 8:19 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: প্রায় দুই দশক পর সম্মেলন হলেও চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। কাউন্সিল অধিবেশনে শুধু সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদের জন্যই প্রার্থিতা ঘোষণা করেন ৭৬ জন। সমঝোতায় ব্যর্থ হয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ঢাকা থেকে কমিটি ঘোষণা করা হবে জানিয়ে বিদায় নেন। ফলে ২০ বছর পর করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে নানা বিধিনিষেধের মধ্যেও চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন শুধু আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে থাকল বলে মনে করছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১৯ জুন) নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এদিন সকালে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। প্রধান অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রধান বক্তা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক একেএম আফজালুর রহমান এবং চট্টগ্রামের সিনিয়র নেতারাও ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন।

কেন্দ্র থেকে সম্মেলনের দায়িত্ব পাওয়া স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের মধ্যে ফারুক আমজাদ খান, জমির সিকদার, একেএম নাজিম, নাফিউল করিম নাফা, তারেক মাহমুদ চৌধুরী পাপ্পু চট্টগ্রামের অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে দুপুরের পর একইস্থানে শুরু হয় কাউন্সিল অধিবেশন।

স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় উপ পাট ও বস্ত্রবিষয়ক সম্পাদক তারেক মাহমুদ চৌধুরী পাপ্পু সারাবাংলাকে জানান, ২৫০ কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হয়। এর শুরুতে কেন্দ্রীয় নেতারা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে আগ্রহীদের মধ্যে ফরম দেন। সভাপতি পদে ৪৩ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ৩৩ জন ফরম পূরণ করে জমা দেন। পরে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হতে ইচ্ছুক প্রার্থীদের নিয়ে আলাদাভাবে বসেন কেন্দ্রীয় নেতারা।

বিজ্ঞাপন

তারেক মাহমুদ বলেন, ‘ক্যান্ডিডেটদের সবাইকে ফ্রিডম দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছিল, আপনারা নিজেরাই সমঝোতা করে নেন যে, কে সভাপতি হবেন অথবা কে সাধারণ সম্পাদক হবেন। কিন্তু উনারা একমত হতে পারেননি। আবার শৃঙ্খলাও ভঙ্গ করেননি। উনারা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ওপর আস্থা রেখেছেন। বলেছেন, আপনারা যাকেই সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক করবেন, আমরা সবাই মেনে নেব। তখন আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে কেন্দ্র থেকে ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়ে দিই।’

‘খুব শিগগিরই কমিটি ঘোষণা করা হবে। যাচাই-বাছাইয়ের জন্য যতটুকু সময় প্রয়োজন, শুধু সেই সময়টুকু নেওয়া হবে। কারণ অনেক ক্যান্ডিডেট। তাদের পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড দেখতে হবে, জামায়াত-শিবির কেউ আছে কি না, রাজাকার ফ্যামিলির কেউ আছে কি না, হাইব্রিড কেউ আছে কি না- সেগুলো তো দেখতে হবে। না হলে তো, সেই কমিটি নিয়ে সমালোচনা হবে’— বলেন তারেক মাহমুদ।

বিজ্ঞাপন

স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির মিডিয়া উপ-কমিটির আহ্বায়ক সাহেদ মুরাদ সাকু সারাবাংলাকে বলেন, ‘একই প্রার্থী সভাপতি পদের জন্যও ফরম নিয়েছেন, আবার সাধারণ সম্পাদক পদের জন্যও নিয়েছেন। কেন্দ্রীয় নেতারা যখন ঢাকা থেকে কমিটি ঘোষণার কথা জানান, তখন ২৫০ কাউন্সিলর সবাই হাত তুলে সমর্থন দেন। এরপর কাউন্সিল অধিবেশন সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।’

২০০১ সালে সর্বশেষ চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২১ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছিল। সেই কমিটি আর পূর্ণাঙ্গ হয়নি। সেই কমিটির সদস্যরাই এতদিন ধরে দায়িত্ব পালন করে গেছেন। এবার ১০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

নেতাকর্মীদের ধারণা, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের নতুন কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল গ্রুপ এবং প্রাক্তন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারীদের মধ্যেই ভাগ হয়ে থাকবে। এছাড়া সম্মেলনকে ঘিরে পদ-পদবির আলোচনায় একঝাঁক সাবেক ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতার নাম বারবার আসছে।

বিজ্ঞাপন

শীর্ষ পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের পক্ষের লালখান বাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল হাসনাত মোহাম্মদ বেলাল, স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য দেবাশীষ নাথ, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. সালাহউদ্দিন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য আজিজুর রহমানের জোরালোভাবে আলোচনায় আছেন।

এছাড়া নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারীদের মধ্যে আছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম, সরকারি কমার্স কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মো. সালাহউদ্দিন, আবদুল্লাহ আল মামুন, আইন কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক নেতা সুজিত দাশ ও আবদুর রশিদ লোকমান।

দুই বলয়ের বাইরে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও সরকারি সিটি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি সাদেক হোসেন পাপ্পু, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের বর্তমান আহবায়কের অনুসারী ও বঙ্গবন্ধু ল টেম্পল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. তসলিম উদ্দিন, সাংসদ আফছারুল আমীনের অনুসারী সিটি কলেজের সাবেক ছাত্রনেতা মো. সাইফুদ্দিনের নামও আলোচনায় আছে।

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন