বিজ্ঞাপন

খাশোগি হত্যায় জড়িতরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রশিক্ষিত

June 23, 2021 | 4:54 pm

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

তুরস্কের সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া চার জন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আধাসামরিক প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। এ ব্যাপারে ওয়াকিবহাল কয়েকটি সূত্র এবং নথিপত্রের বরাতে এ খবর জানিয়েছে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস।

বিজ্ঞাপন

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের মধ্যস্থতায় বেসরকারি সিকিউরিটি কোম্পানি টায়ার ১ গ্রুপের অধীনে হত্যাকারীরা প্রশিক্ষণ পেয়েছিলেন বলে জানা যাচ্ছে।

এর আগে, ২০১৯ সালে ওয়াশিংটন পোস্ট প্রথম দাবি করে সাংবাদিক খাশোগি হত্যায় জড়িত চারজন যুক্তরাষ্ট্রে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সিআইএর পক্ষ থেকে তৎকালীন প্রশাসনকে সতর্ক করে বলা হয়েছিল টায়ার ১ গ্রুপ তাদের নিবন্ধন ব্যবহার করে বিশেষ ধরনের কোনো প্রশিক্ষণ পরিচালনা করছে, যা সন্দেহজনক।

২০১৮ সালের ২ অক্টোবর দ্বিতীয় বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে গিয়েছিলেন খাশুগজি। সেখান থেকে তিনি আর ফেরেননি। পরে জানা যায়, তাকে কনস্যুলেটের ভেতরেই হত্যা করা হয়েছে। ওই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সংশ্লিষ্টতাও খুঁজে পেয়েছেন মার্কিন গোয়েন্দারা।

বিজ্ঞাপন

সৌদি রাজ পরিবারের ঘনিষ্ঠজন থেকে কড়া সমালোচক হয়ে উঠেছিলেন ওয়াশিংটন পোস্টের কলাম লেখক জামাল খাশোগি। বিশেষ করে শেষ কয়েকটি কলামে সৌদি যুবরাজের নেওয়া নানান উদ্যোগের সমালোচনা করেছিলেন তিনি।

এদিকে, খাশোগি হত্যাকাণ্ডের এক বছর আগে থেকেই ওই চার সৌদি এজেন্টকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে আরাকানসাসভিত্তিক সিকিউরিটি কোম্পানি টায়ার ১ গ্রুপ এমনটাই জানাচ্ছে নিউ ইয়র্ক টাইমস।

এ ব্যাপারে টায়ার ১ গ্রুপের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ওই প্রশিক্ষণে নিরাপদ লক্ষ্যভেদ এবং ‘হামলা মোকাবিলার মতো বিষয় শেখানো হয়েছে। চারজনের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে আত্মরক্ষা এবং সৌদি আরবের নেতাদের সুরক্ষার ব্যাপারটিকে জোর দেওয়া হয়েছিল। এছাড়াও, নজরদারি এবং স্বল্প পরিসরে লড়াইয়ের ওপরও তাদের প্রশিক্ষিত করা হয়।

বিজ্ঞাপন

টায়ার ১ গ্রুপের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা লুইস বারমার ওই প্রশিক্ষণের সঙ্গে তাদের কোম্পানির সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পেন্টাগনের একটি শীর্ষ পদে মনোনয়নের সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের কাছে এই তথ্য জানান তিনি।

বারমারের কাছ থেকে নিউ ইয়র্ক টাইমসকে যে নথিপত্র পেয়েছে সেখান থেকে জানা যায়, খাশোগি হত্যায় অংশ নেওয়া দলটির চার জন ২০১৭ সালে টায়ার ১ গ্রুপের প্রশিক্ষণ নেয় এবং তাদের মধ্যে দুই জন এর আগে ২০১৪ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত একই কোম্পানির অধীনে আরেকটি প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশ নিয়েছিল।

তবে, তাদের যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল তার সঙ্গে এই ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ডের কোনো যোগসূত্র নেই বলে দাবি করেছেন লুইস বারমার।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে অন্য কোনো দেশের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণের অনুমোদনের দায় দায়িত্ব যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের। অন্যান্য দফতরের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরে টায়ার ১ গ্রুপের প্রশিক্ষণ নিতে হলে আগ্রহী ব্যক্তিকে সরকারি ছাড়পত্র সংগ্রহ করতে হয়।

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে, চার সৌদি নাগরিকের টায়ার ১ গ্রুপে প্রশিক্ষণ নেওয়ার নিবন্ধন পাওয়ার ব্যাপারে তারা অবগত ছিলেন কিনা, তা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র। এ বিষয়ে ওয়াশিংটনে সৌদি দূতাবাসের বক্তব্যও জানা যায়নি।

পুরাতন নথি থেকে জানা যাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর ২০১৪ সালে প্রথম সৌদি রয়াল গার্ড বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়ে টায়ার ১ গ্রুপকে অনুমতি দেয়। বারাক ওবামার আমলে শুরু হওয়া ওই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি তার উত্তরসূরী ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলের প্রথম এক বছর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।

সারাবাংলা/একেএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন