বিজ্ঞাপন

তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বাড়াতে জোর দিচ্ছে সরকার: কৃষিমন্ত্রী

June 23, 2021 | 5:52 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, দেশে বর্তমানে ভোজ্য তেলের চাহিদার ৯০ শতাংশ আসে বিদেশ থেকে। আর দেশে উৎপাদন হয় মাত্র ১০ শতাংশ। বিদেশ থেকে তেল আমদানিতে প্রচুর খরচ হয়। তাই দেশে তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বাড়াতে সমন্বিত উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২৩ জুন) সচিবালয়ের অফিস কক্ষ থেকে ভার্চুয়ালি ‘তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি’ প্রকল্পের জাতীয় কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশে তেল উৎপাদনের মূল বাধা হলো জমির স্বল্পতা। ইতোমধ্যে আমাদের বিজ্ঞানীরা উচ্চফলনশীল ও স্বল্পকালীন উন্নত জাতের ধান ও সরিষার জাত উদ্ভাবন করেছে। এগুলোর চাষ দ্রুত কৃষকের নিকট ছড়িয়ে দেওয়া ও জনপ্রিয় করতে পারলে ধান উৎপাদন বৃদ্ধি না কমিয়েও অতিরিক্ত ফসল হিসাবে সরিষাসহ তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বাড়ান সম্ভব হবে। সে লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় সমন্বিত কর্মসূচি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমান সরকারের কৃষিবান্ধবনীতি ও নানামুখী প্রণোদনার ফলে গত বারো বছরে দেশে তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০০৯ সালে তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৬ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন। ২০২০ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ ৫৪ হাজার মেট্রিক টনে।

বিজ্ঞাপন

আরও জানা যায়, ২৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নেওয়া ‘তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি’ নামে একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ২০২০ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছর মেয়াদে নেওয়া প্রকল্প ২৫০টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হবে। এর মাধ্যমে প্রচলিত শস্য বিন্যাসে কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষিত স্বল্পমেয়াদী তেল ফসলের আধুনিক জাত অন্তর্ভুক্ত করে সরিষা, তিল, সূর্যমুখী, চীনাবাদাম, সয়াবিনসহ তেল ফসলের আবাদ এলাকা ২০ শতাংশ বাড়ান হবে।

এছাড়া, বিএআরআই ও বিনা কর্তৃক উদ্ভাবিত তেল ফসলের আধুনিক প্রযুক্তির সম্প্রসারণ এবং মৌ-চাষ অন্তর্ভুক্ত করে তেলজাতীয় ফসলের হেক্টর প্রতি ফলনও ১৫- ২০ শতাংশ বাড়বে। ফলে তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বাড়বে ও আমদানির পরিমাণ হ্রাস পাবে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছে, ধানসহ অন্যান্য ফসলের তুলনায় কৃষকেরা তেলজাতীয় ফসল চাষে কম আগ্রহী। বর্তমানে দেশে ফসল আবাদের ৭৫ শতাংশ জমিতে দানাজাতীয় ফসলের চাষ হয়। অন্যদিকে ক্রমশ তেলের ব্যবহার বাড়ছে। ২০১৫ সালে তেল এবং চর্বি ব্যবহারের পরিমাণ ছিল ২.২২ মিলিয়ন টন, তা বেড়ে ২০১৯ সালে হয়েছে ৩.০৮ মিলিয়ন টন। মাথাপিছু তেল ও চর্বি ব্যবহারের পরিমাণ বছরে ২০১৫ সালে ছিল ১৩.৮০ কেজি, তা বেড়ে ২০১৯ সালে হয়েছে ১৮.৭ কেজি।

বিজ্ঞাপন

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম বলেন, ব্রি ধান-৭১, ব্রি ধান-৮১, ব্রি ধান-৮৯, ব্রি ধান -৯২সহ উন্নতজাতের ধান চাষ করে হেক্টর প্রতি এক টন উৎপাদন বাড়ান সম্ভব। এটি করতে পারলে ১০ শতাংশ জমি উদ্বৃত্ত থাকবে যেন ধান চাষ না করে অন্যান্য ফসল চাষ করা যাবে। এছাড়া উন্নত জাতের ধান ও সরিষার চাষ করে শস্যের নিবিড়তা বাড়ানোও সম্ভব।

কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা) ড. মো. আব্দুর রৌফ, অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) হাসানুজ্জামান কল্লোল বক্তব্য রাখেন। প্রকল্পের কার্যক্রম তুলে ধরেন প্রকল্প পরিচালক মো. জসীম উদ্দিন।

সারাবাংলা/জেআর/এসএসএ

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন