বিজ্ঞাপন

তালেবান ঠেকাতে অস্ত্র হাতে তুলে নিচ্ছে সাধারণ আফগানরা

June 30, 2021 | 7:33 pm

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

চলতি বছরের ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সকল সৈন্য প্রত্যাহার করে নেবে যুক্তরাষ্ট্র ও তার নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোট। গত বছর সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণার পর থেকে আফগানিস্তানে উগ্রবাদী গোষ্ঠী তালেবানের সহিংসতা বেড়ে গেছে। প্রতিদিনই আফগানিস্তানের কোনো না কোনো অঞ্চল দখল করে নিতে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে সংগঠনটি। গত সপ্তাহে আফগানিস্তানে নিযুক্ত জাতিসংঘের দূত জানিয়েছেন, দেশটির ৩৭০টি জেলার ৫০টি দখল করে নিয়েছে তালেবান। তালেবানের এমন উত্থান ঠেকাতে এবার আফগানিস্তানের সাধারণ মানুষও অস্ত্র হাতে তুলে নিচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন

২০ বছর ধরে জঙ্গিবাদবিরোধী যুদ্ধের পর আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনারা চলে গেলে তালেবান আরও নৃশংস হয়ে উঠবে—এমন আশঙ্কা অবশ্য আগেই করেছিলেন বিশ্লেষকরা। আবার তালেবানের উত্থান ঠেকাতে সাধারণ মানুষও লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়তে পারে বলেও পূর্বাভাস ছিল অনেকের। যুক্তরাষ্ট্রসহ ন্যাটো সেনারা যখন একে একে আফগানিস্তান ছাড়ছে, তখন এমনই এক ইঙ্গিত দিয়েছিলেন আফগান প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বাহিনীর মুখপাত্র আজমল ওমর শিনওয়ারী। তিনি বলেছিলেন, ‘তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াই করতে আগ্রহীরা আঞ্চলিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে’।

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের উত্তরের পারওয়ান প্রদেশের উঁচু পাহাড়ের একটি জায়গায় ছোট এক তালেবান বিরোধী দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ৫৫ বছর বয়েসী দোস্ত মোহাম্মদ সালানগী। তিনি রয়টার্সের প্রতিবেদকের সামনে একটি কবিতা আবৃত্তি করছিলেন। দোস্ত মোহাম্মদ সালানগী আফগানিস্তানে তালেবানের উত্থান ঠেকাতে বদ্ধপরিকর। তার মতে, তালেবানের উত্থান রুখতে অস্ত্র পরীক্ষা করতেও দ্বিধা নেই অনেক সাধারণ মানুষের।

রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘তারা (তালেবান) যদি আমাদের উপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়, যদি আমাদের উপর অত্যাচার চালায়, যদি নারীদের তাদের সম্পত্তি মনে করে, তাহলে এমনকি আমাদের সাত বছর বয়েসি বাচ্চারাও তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে নেবে এবং প্রতিরোধ গড়ে তুলবে’।

বিজ্ঞাপন

তালেবানের বিরুদ্ধে লড়তে প্রস্তুত এমন শত শত বেসামরিক ব্যক্তিদের একজন সালনাগী। দুই দশকের যুদ্ধের পর যখন আফগানিস্তান থেকে শেষ মার্কিন সেনাও চলে যাচ্ছে, তখন সালনাগীর মতো স্থানীয় আফগানরা তালেবানের উত্থান ঠেকাতে সামনে দাঁড়াচ্ছেন।

পারওয়ান প্রদেশের একজন ছাত্র তালেবানবিরোধী নেতাদের দলে যোগ দিয়েছেন। ফরিদ মোহাম্মদ নামের স্থানীয় ওই তরুণ বলেন, ‘আমাদের দেশকে আমাদেরই রক্ষা করতে হবে। বিদেশি শক্তি যখন আমাদের ছেড়ে চলে গেছে, তখন আমরা লড়াই করা ছাড়া কোনো বিকল্প দেখি না’।

সম্প্রতি আফগানিস্তানের প্রধানমন্ত্রী আশরাফ ঘানি যুক্তরাষ্ট্র সফর করছেন। হোয়াইট হাউজে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। সেখানে জো বাইডেন জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের প্রতি তার দেশের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে, কিন্তু দেশটির ভবিষ্যত আফগান নাগরিকদেরই ঠিক করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

তবে উগ্রবাদী গোষ্ঠী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে অস্ত্রের এমন ব্যবহার দেশটির পরিস্থিতি আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। এতে গোটা দেশজুড়ে এক গণযুদ্ধ শুরু হতে পারে বলে মত তাদের।

–রয়টার্সের প্রতিবেদন অবলম্বনে

সারাবাংলা/আইই

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন