July 12, 2021 | 6:59 pm
সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: রাজধানীর বাড্ডা থানা এলাকা থেকে জাল টাকা তৈরির একটি কারখানার সন্ধানসহ বিপুল পরিমাণ জাল টাকা ও জাল টাকা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। সোমবার (১২ জুলাই) দুপুরে বাড্ডা থানার নুরের চালা সাঈদ নগর এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে ৪৩ লাখ জাল টাকাসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়।
ডিবি জানিয়েছে, ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে কুরবানির পশুর হাটে ছড়িয়ে দিতে এই জাল টাকা মজুত করা হয়েছিল।
এ ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে ডিবি গুলশান বিভাগ। গ্রেফতাররা হলো— আব্দুর রহিম শেখ, ফাতেমা বেগম, হেলাল খান, আনোয়ার হোসেন ও ইসরাফিল আমিন।
এ অভিযান সম্পর্কে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার বিপিএম (বার) ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের বলেন, বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ করে আসন্ন ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে জাল টাকা তৈরি চক্র, মলম পার্টি, অজ্ঞান পার্টি, ছিনতাইকারদের দৌরাত্ম বেড়ে যায়। আমরা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এদের তৎপরতা রুখতে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছি। আজ ডিবির ডিসি মশিউরের নেতৃত্বে এ বিপুল পরিমাণ জাল টাকা ও সরঞ্জামাদি উদ্ধার করেছি।
জাল টাকায় শুধু দেশবাসী প্রতারিত হচ্ছে না, রাষ্ট্রও বিশাল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আসন্ন ঈদ উপলক্ষে সম্মানিত মহানগরবাসী যারা অধিক টাকা বহন করবেন, তারা নগদ ক্যাশ বহন না করে ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করার জন্য অনুরোধ করেন ডিবির এই কর্মকর্তা।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া ডিবি গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান বিপিএম (বার), পিপিএম বলেন, অভিযানকালে আমরা কারখানাটি থেকে ১০০০ টাকা ও ৫০০ টাকা মূল্যমানের প্রায় ৪৩ লাখ তৈরিকৃত জাল টাকা, একটি ল্যাপটপ, দুইটি কালার প্রিন্টার, বিপুল পরিমাণে আঠা ও আইকা, বিভিন্ন ধরনের রং, জাল টাকা তৈরির জন্য প্রচুর কাগজ, নিরাপত্তা সুতার বান্ডেল, লেমিনেটিং মেশিন, কাটার, বঙ্গবন্ধু প্রতিকৃতি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের লোগো সম্পন্ন বিশেষ কাগজ জব্দ করেছি। যা দিয়ে কয়েক কোটি মূল্যের জাল টাকা তৈরি করা সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, গ্রেফতাররা জাল টাকা ও মাদক কেনাবেচার কাজে জড়িত থেকে এর আগেও গ্রেফতার হয়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে। এছাড়া গ্রেফতার ফাতেমা বেগম ২০১৯ সালে হাতিরঝিল এলাকার একটি বাসায় জাল টাকা তৈরি করার সময় অপর সহযোগীসহ হাতেনাতে ধরা পড়েছিল। কিন্তু তার স্বামী রহিম ওই সময় পালিয়ে গিয়েছিল।
এ সময় তিনি আরও বলেন, গ্রেফতাররা দীর্ঘদিন ধরে জাল টাকা খুচরা এবং পাইকারি বিক্রি করত। গত তিন বছর ধরে ঈদসহ অন্যান্য উৎসবের আগে আগে জাল টাকা তৈরির কাজে নিয়োজিত থেকে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি জাল টাকা বাজারে ছেড়েছে বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে।
১০০টি কাগজের নোটের এক বান্ডেল জাল টাকা তৈরি করতে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা খরচ হয়। তৈরিকারকরা প্রতি বান্ডেল পাইকারি ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে। পাইকাররা আবার এগুলোকে প্রান্তিক পর্যায়ের বিভিন্ন খুচরা বিক্রেতাদের কাছে প্রতি বান্ডেল ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে। যা রুট পর্যায়ের জাল টাকার কারবারিরা কখনো কখনো গহনা, কাপড় চোপড়, ভোজ্যপণ্য এমনকি পশুর হাটে বিক্রি করে ছড়িয়ে দিয়ে থাকে বলে তিনি জানান।
গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হওয়ার প্রক্রিয়া চলছে মর্মে গোয়েন্দা এই কর্মকর্তা জানান।
সারাবাংলা/ইউজে/এসএসএ