বিজ্ঞাপন

মানচিনির হাত ধরে নতুন ব্র্যান্ডের ইতালিয়ান ফুটবলের যাত্রা

July 13, 2021 | 12:18 pm

সাহাবার সাগর, নিউজরুম এডিটর

১৩ নভেম্বর ২০১৭! ইতালিয়ান ফুটবলের জন্য তারিখটি কেবলই ক্যালেন্ডারের পাতার ৯ মাসে ১৩তম দিন নয়। এই তারিখটি আজ্জুরিদের জন্য ছিল এক কালো অধ্যায়। অবশ্য মুদ্রার অন্য পিঠ বিবচেনায় আনলে এটা ছিল রেনেসাঁ যুগে প্রবেশের আগ মুহূর্তের ঘনকাল অন্ধকারাচ্ছন্ন মেঘ। ১৯৫৮ সালের পর ওই প্রথম বিশ্বফুটবলের সবচেয়ে বড় মঞ্চ ফিফা বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব পেরুতে পারেনি আজ্জুরিরা। চারবারের চ্যাম্পিয়নদের এমন ঘোর অমানিশায় লজ্জিত হয়েই বোধহয় সাবেক অধিনায়ক জিয়ানলুইগি বুফন, আন্দ্রেয়া বাজগালি, ড্যানিয়েল ডি রসি এবং বর্তমান অধিনায়ক জর্জ কিয়েলিনি অবসরের ঘোষণা দেন।

বিজ্ঞাপন

বিশ্বকাপের মূলপর্বে জায়গা করে নিতে ব্যর্থ হওয়ার দুই মাসের মাথায় ব্যর্থতার দায় নিয়ে ইতালিন ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ান কার্লো ট্যাভেচ্চিও। তার আগেই অবশ্য সে সময়কার কোচ জিয়ান পিয়েরো ভেনটুরাকে চাকরীচ্যুত করা হয়। এরপর খন্ডকালিন কোচের দায়িত্ব দেওয়া হয় ইতালির অনূর্ধ্ব-২১ দলের কোচ লুইগি ডি বাইয়াগোকে।

১৪ মে, ২০১৮! আরও একটি সাধারণ তারিখ হতে পারে গোটা বিশ্বের জন্য। তবে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইতালির জন্য এ এক রেনেসাঁর সুচনা। ইতালির ফুটবলের পুনর্জন্মের জন্য দলটির দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় রবের্তো মানচিনির হাতে। সেই শুরু! আর তার ঠিক ১১৫৫ দিন পরে নতুন করে ইতিহাস লিখলো আজ্জুরিরা। ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২০-এর ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ৫৩ বছর পর ইউরোপ সেরার মুকুট অর্জন করে আজ্জুরিরা। আর গোটা দলের সঙ্গে সঙ্গে প্রশংসার দাবিদার ডাগআউটে দাঁড়িয়ে কৌশল সাজানো রবের্তো মানচিনি।

বিজ্ঞাপন

তিন বছর ধরে তিলে তিলে গড়ে তোলা একটি দল। ইউরোতে অংশগ্রহণ করতে আসে ২৭ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড নিয়ে। আর গোটা টুর্নামেন্টের ৭টি ম্যাচে অপরাজিত থেকে শিরোপা ঘরে তোলার সঙ্গে সঙ্গে টানা ৩৪ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড গড়ে রবের্তো মানচিনির দল।

চার চারবার গোটা বিশ্বের চ্যাম্পিয়ন হওয়া সত্ত্বেও ১৯৬৮ সালের পর আর কখনোই ইউরোপিয়ান ফুটবলের সর্বোচ্চ মর্যাদার টুর্নামেন্টে ইউরোর শিরোপা ঘরে তোলা হয়নি ইতালির। এর মধ্যে যদিও ২০০০ ও ২০১২ সালে দুইবার ফাইনাল খেলেছিল আজ্জুরিরা। তবে ২০০০ সালে ফ্রান্সের কাছে এবং ২০১২ সালে স্পেনের কাছে হেরে রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল ইতালিয়ানদের। এবার ৯ বছর পর আবারও ফাইনালে উঠেছিল ইতালি। এবার আর কোনো ভুল হয়নি। ৫৩ বছর পর ইউরোপের মুকুট পুনরুদ্ধার করেই ছাড়ল আজ্জুরিরা।

ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ-২০২০-তে অংশগ্রহণের আগে টানা ২৭টি ম্যাচ অপরাজিত ছিল ইতালি। ২০১৮ সালে ইতালির ডাগআউটে দায়িত্ব নিয়ে দলের চিত্রই পালটে দিয়েছেন রবের্তো মানচিনি। এই বিজ্ঞ কোচের হাত ধরেই আজ্জুরিদের প্রত্যাবর্তনের গল্প রচিত হলো। এবারের ইউরোর গ্রুপ পর্বের সবকটি ম্যাচ জিতেছিল ইতালি। এরপর শেষ ষোলতে অস্ট্রিয়া কোয়ার্টার ফাইনালে হট ফেভারিট বেলজিয়ামকে সরাসরি হারায় আজ্জুরিরা। আর সেমিফাইনালে সাবেক চ্যাম্পিয়ন স্পেনকে টাইব্রেকারে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নেয় ইতালি। আর ফাইনালের চিত্র তো এখনো গোটা ফুটবল বিশ্বের চোখে ভাসছে।

বিজ্ঞাপন

জাতীয় দলের দায়িত্ব নিয়েই দলকে ঢেলে সাজানোর কাজে লেগে পড়েন মানচিনি। জাতীয় দলে সহকারী হিসেবে নিয়োগ দেন খেলোয়াড়ি জীবনের নিজের সাবেক তিন সতীর্থকে। আলবেরিকো এভানি, আত্তিলিও লম্বার্দো এবং ফাউস্তো সালসানো মানচিনির পাশে থেকেই গড়েছেন দুর্দান্ত এই দলটিকে। ইতালির ২৬ সদস্যের দলটি কেবল বড় বড় দলের নামকরা তারকাদের নিয়েই গড়েননি মানচিনি। বড় নামকরা ক্লাবের পাশাপাশি ভালো পারফর্ম করা সকলকেই ডেকেছেন স্কোয়াডে। এরপর সিদ্ধান্ত নিয়েই সাজিয়েছেন দল। ২৬জন খেলোয়াড়ের মধ্য থেকে ১০জন খেলোয়াড়ই উত্তর ইতালির, ৭জন মধ্য ইতালির আর ৯জন দক্ষিণ থেকে দলে সুযোগ পেয়েছেন।

আজ্জুরিদের দায়িত্ব নেওয়ার ঠিক ১৪ দিন পর নিজের প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের বিপক্ষে ২-১ গোলের জয়ের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করেন মানচিনি। ২০১৯ সালের অক্টোবরের ১২ তারিখ ঘরের মাঠেই গ্রীসকে ২-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে তিন ম্যাচ হাতে রেখেই ইউরো-২০২০ এ জায়গা করে নেয় ইতালি। ২০১৯ সালে ১০ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড গড়েই বছরটা শেষ করে ইতালি।

মানচিনি কেবল ইতালির ঐতিহাসিক রক্ষণকেই আরও বেশি শক্তিশালী করে গড়ে তোলেননি, সেই সঙ্গে আক্রমণভাগকেও দিয়েছেন সমান গুরুত্ব। তার দেখা মেলে মাঠে আজ্জুরিদের পারফরম্যান্সেই। ইউরো ২০২০-এর গ্রুপ পর্বের তিনটি ম্যাচ মিলিয়ে আজ্জুরিদের মোট গোল সংখ্যা ছিল ৭টি, বিপরীতে ইতালির রক্ষণ ভেদ করে একবারও বল জড়াতে পারেনি জালে। রক্ষণাত্মক হিসেবে পরিচিত ইতালির থেকে গ্রুপ পর্বে কেবল বেশি গোল দিতে পেরেছিল নেদারল্যান্ডস (৮টি)। আর ইতালির পাশাপাশি কেবল একটি দল হিসেবে গ্রুপ পর্বে নিজেদের জালে একবারও বল জড়াতে দেয়নি ইংল্যান্ড। তবে নকআউট পর্ব আর ফাইনাল মিলিয়ে চার ম্যাচেই একটি করে গোল হজম করেছে ইতালি। শেষ পর্যন্ত ফাইনালে বাজিমাৎও করেছে আজ্জুরিরা।

বিজ্ঞাপন

ম্যানেজার গোটা ক্যারিয়ার জুড়ে বেশ রক্ষণাত্মক দল সাজানোর জন্য বদনাম ছিলেন মানচিনি। ম্যানচেস্টার সিটির কোচ থাকাকালীন তাঁর বিখ্যাত এক উক্তি ছিল, ‘আমি ১-০ ব্যবধানের জয়গুলোকে পছন্দ করি। যখন আপনি গোল হজম করবেন না আর দলে এডেন জেকো, কার্লোস তেভেজ এবং ডেভিড সিলভার মতো খেলোয়াড় থাকবে তখন আপনি ৯০ শতাংশ ম্যাচ এমনিই জিতে যাবেন। আমি ঝিমানো খেলা পছন্দ করি, আমরা ১-০ গোলের ব্যবধানে জিতি এবং খুব কম গোল হজম করি। সেটাই শিরোপা জেতায়।’

ফুটবল বোদ্ধারা প্রায়ই বলতো, “মানচিনি জয়ের আগে রক্ষণকে গুরুত্ব দেয়।”

তবে ইতালির দায়িত্ব নেওয়ার পর পুরোটাই বদলে গেছেন মানচিনি। সেটা ইউরোতে ইতালির বাছাইপর্বের পারফরম্যান্সে নজর দিলেই দেখা মিলে। বাছাইপর্বের ১০টি ম্যাচে ৩৭টি গোল করেছিল ইতালি। অর্থাৎ ম্যাচ প্রতি ৩ দশমিক ৭টি করে গোল। যা ইতালির ইতিহাসে বিরলই বলা চলে। ইতিহাস বলে ইতালি সবসময় রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলে এসেছে। তবে মানচিনির অধীনের শেষ তিন বছরে বদলে গেছে সব। ইতালি এখন জয়ের জন্য কেবল রক্ষণের ওপর নির্ভরশীল নয়। প্রতিপক্ষের রক্ষণকে ভেঙেচুরে বল জালে জড়ানোর উপরেও দিয়েছে সমান গুরুত্ব। তবে ম্যাচ ভেদে আর প্রতিপক্ষ ভেদে এই কৌশলে মানচিনি এনেছেন পরিবর্তন। সেটা ম্যাচের আগে কিংবা ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে ম্যাচ চলাকালীনও।

গোটা ইউরোতে বল নিজেদের দখলে রেখে মধ্যমাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে খেলতেই বেশি স্বাচ্ছন্দে দেখা গেছে ইতালিকে। ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালসহ সাত ম্যাচে মধ্যে কেবল দুটি ম্যাচেই প্রতিপক্ষের চেয়ে কম বলের দখলে ছিল আজ্জুরিরা। গ্রুপ পর্বে সুইজারল্যান্ড আর সেমিফাইনালে স্পেনের বিপক্ষেই বল দখলের লড়াইয়ে পিছিয়ে ছিল মানচিনির শিষ্যরা।

সেমিফাইনালে স্পেন বস লুইস এনরিকে ছয় মিডফিল্ডার নিয়ে একাদশ সাজিয়ে মধ্যমাঠের লড়াইয়ে ইতালিকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দিতে চেয়েছিলেন। এনরিকের কৌশল কাজেও দিয়েছিল। এদিকে মানচিনি যখনই বুঝতে পারলেন স্পেনকে বল দখলের লড়াইয়ে হারানোটা সম্ভব নয় ঠিক তখনই প্ল্যান বি’তে দলকে পাঠিয়ে দিলেন। রক্ষণকে অটল রাখতে হবে! প্রতিপক্ষ বল দখলে রেখে হাজারটা আক্রমণ সাঁজালেও রক্ষণে ফাটল ধরাতে দেওয়া যাবে না। স্পেনের বিপক্ষে ম্যাচে দেখা মিললো রক্ষণাত্মক ফুটবলকে আর্ট হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া সেই ইতালির।

ম্যাচের ৭০ শতাংশ বল দখলে রেখে ১৬টি গোলের সুযোগ তৈরি করলেও মূলত ইতালির ডি-বক্সে ঢুকে তেমন বেশি গোলের ভয় ধরাতে পারেনি স্পেন। সেমিফাইনালেই ইতালির এই দলের সবচেয়ে দুর্বল জায়গা খুঁজে পান এনরিকে। এবং সেই অনুযায়ীই দল সাজিয়ে চমকে দিয়ে চেয়েছিলেন আজ্জুরিদের। বল দখলে রেখে দ্রুত আক্রমণ করলে নিজেদের খেলাটা খেলতে পারে না ইতালি। এটাই ছিল এনরিকের মূলমন্ত্র। নিজের মন্ত্রতে সফলও হয়েছিলেন এনরিকে। একের পর এক আক্রমণে ইতালির রক্ষণকে বেশ যন্ত্রণাও দিয়েছিল লা রোজারা। শেষ পর্যন্ত বিপদ বুঝতে পেরে চিরচেনা রক্ষণাত্মক ইতালিতে ফিরে যান মানচিনি। আর রক্ষাও মেলে শেষ ওই ইতালিতেই।

ফাইনালে আবারও নিজেদের কৌশলে পরিবর্তন আনেন মানচিনি। এবারে বল দখলের লড়াইয়ে ইংল্যান্ডকে পেছনে ফেলে দেয় ইতালি। ম্যাচের ৬৫ দশমিক ৬ শতাংশ বল দখলে রাখে ইতালি। আর রক্ষণের উপর ভরসা রেখে ম্যাচ জেতায় নামকরা ইতালি ইংলিশদের আক্রমণে জর্জরিত করেই ফাইনাল খেলে।

গোটা টুর্নামেন্টে ১২টি গোল করেছে ইতালি। এবারে ইউরোতে ইতালির চেয়ে কেবল একটি দলই বেশি গোলের দেখা পেয়েছে। সেমিফাইনালে ইতালির কাছে হেরে বাদ পড়া স্পেন করেছে সর্বোচ্চ ১৩টি গোল। তবে স্পেন সেমি পর্যন্ত গোল হজম করেছে মোট ছয়টি। অন্যদিকে ইতালি গোটা টুর্নামেন্টেই গোল হজম করেছে মাত্র ৪টি। ফাইনাল খেলা ইংল্যান্ড গোল হজম করেছে মাত্র দুটি।

নিজের দলের শক্তির জায়গা বুঝে দলের খেলার ধরন সাজিয়ে বাজিমাৎ করেছেন মানচিনি। সর্বদা রক্ষণাত্মক ইতালিও যে এভাবে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে পারে তা বিশ্বের সামনে নিয়ে আসেন মানচিনিই।

ইতালির দায়িত্ব নেওয়ার পর যখন গোটা দলকে মানচিনি বলেছেন তাদের লক্ষ্য ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের। সে সময় ইতালির অধিনায়ক জর্জ কিয়েলিনি ভেবেছিলেন মানচিনি পাগল হয়ে গেছেন। দায়িত্বের প্রথম দিন থেকেই খেলোয়াড়দের মনের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের বীজ আর জয়ের মন্ত্র বুনে দেওয়ার কাজ করেছেন মানচিনি। তার অভিপ্রায় ছিল স্পষ্ট, ‘ইতালিকে ফিরিয়ে নিতে হবে তাদের যোগ্য স্থানে। ইউরোপের চূড়ায়, বিশ্বের চূড়ায়। আমরা বহু বছর ধরে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জিতিনি। সুতরাং, এটা জয়ই হবে আমাদের প্রথম লক্ষ্য।’

পরে অধিনায়ক জর্জ কিয়েলিনি বলেছেন, ‘শুরুতে যখন মানচিনি বলেছিলেন, আমাদের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের ব্যাপারে ভাবতে হবে, আমরা তখন ভেবেছিলাম, তিনি পাগল।’

পালাবদলের নায়ক মানচিনিকে নিয়ে কিয়েলিনি যোগ করেছেন, ‘তিনি খুবই কম কথা বলেন। তবে দুর্দান্ত একটি দল তিনি তৈরি করেছেন। তিনি পুনরুজ্জীবিত করেছেন এমন একটি দলকে, যারা গত ৬০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বাজে অবস্থায় ছিল।’

তিনি করে দেখিয়েছেন। ডুবতে থাকা ইতালির ফুটবলকে নতুন করে আলোর পথ দেখিয়েছেন। বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব পেরুতে না পারা ইতালিকে এনে দিয়েছেন ইউরোপ সেরার মুকুট। ডাগআউটে বাহারি স্যুট পরে নিজের রুচির বর্ননা যেভাবে রেখেছেন মাঠের কৌশলেও ঠিক সেভাবেই দেখিয়েছেন দাপট।

৫৩ বছর পর ইউরোপের মুকুট এনে দেওয়া মানচিনিকে অশ্রুসিক্ত অবস্থায় দেখা গেছে ওয়েম্বলির টার্ফের মাঝখানে। নিজের আবেগকে সদা বাহারি স্যুটের মাঝে চেপে রাখতে সক্ষম হলেও এবারে আর পারেননি। মানচিনি বলেন, ‘এটা অনেক আবেগঘন মুহূর্ত। এমন একটি সাফল্য আসার পর সবাইকে উজ্জাপন করতে দেখে নিজেকে ধরে রাখা সম্ভব না।’

দীর্ঘ তিন বছর ধরে যে দলটি নিজ হাতে গড়েছেন সেই দলের এমন সাফল্য তাঁর চোখে পানি এনে দিয়েছে। মানচিনি বলেন, ‘তিন বছর ধরে গড়ে তোলা এই দলটি সাফল্য পেয়েছে। এটা আমাদের দীর্ঘ দিনের কষ্টের ফসল। বিশেষ করে শেষ ৫০ দিন ধরে আমরা অনেক পরিশ্রম করেছি। এখন পর্যন্ত আমরা দারুণ সময় কাটিয়েছি। খেলোয়াড়দের মধ্যে এখনও কোনো সমস্যা তৈরি হয়নি। তাঁরা কেবল মাঠেই নয় মাঠের বাইরেও দারুণ ছিল।’

তবে এখানেই শেষ নয় মানচিনির কাজ। ইউরোতে অংশগ্রহণের ঠিক আগ মুহূর্তেই জাতীয় দলের সঙ্গে চুক্তি বৃদ্ধি করেছেন তিনি। ২০২৬ সাল পর্যন্ত তাকেই দেখা যাবে ইতালির ডাগআউটে। তাই তো ইউরোপীয় সাফল্যের পর এবার আজ্জুরিদের চোখ আগামী ২০২২ সালে কাতারে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ফিফা বিশ্বকাপের দিকে। তবে কি তাঁর হাত ধরেই আসবে আজ্জুরিদের ৫ম বিশ্বকাপ শিরোপা? ইউরোতে তাদের এমন সাফল্যের পর সে আশা তো করতে পারে ইতালিয়ান ফুটবল সমর্থকরা। স্বপ্ন বুনতেই পারে রবের্তো মানচিনির হাতেই উঠবে সোনালি সে শিরোপা। আক্ষেপ মিটবে ২০০৬ সালের পর পতন ঘটা ইতালিয়ান ফুটবলের আরও এক বিশ্ব জয়ের।

সারাবাংলা/এসএস

Tags: , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন