বিজ্ঞাপন

বজ্রপাতে মৃত্যু কমাতে জনসচেতনতার বিকল্প নেই

July 14, 2021 | 8:57 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বজ্রপাতে ক্ষয়ক্ষতি ও মৃত্যু কমাতে জনসচেতনতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। একইসঙ্গে প্রাকৃতিক এই দুর্যোগ মোকাবিলায় বেশি করে গাছ লাগাতে হবে। সরকার বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। সরকারের পাশাপাশি জনসাধারণকেও এগিয়ে আসতে হবে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১৪ জুলাই) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপকমিটির উদ্যোগে ‘বজ্রপাত ও করণীয়’ শীর্ষক বিশেষ ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এবং উপকমিটির সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর।

ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার। ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন উপকমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উপকমিটির সদস্য এবং আইইবি’র সহকারী সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. রনক আহসান।

বিজ্ঞাপন

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বজ্রপাত বাংলাদেশের মানুষের কাছে এক মহা আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বজ্রপাতে মৃত্যু হার বেড়েছে লক্ষণীয়ভাবে। এতদিন এই বজ্রপাত ছিল গ্রাম, হাওর বা বিল এলাকায়। এখন শহর এলাকায়ও দেখা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বজ্রপাতজনিত ক্ষয়ক্ষতি রোধে বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছে। কিন্তু তারপরও বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা থেমে নেই। মানুষ ছাড়াও গবাদি পশুও মারা যাচ্ছে। বজ্রপাত থেকে রক্ষায় অন্যতম উপায় জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা। সরকার এই বিষয়ে কাজ করছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি হিসেবে বর্তমান সরকার ১০ লাখ তাল গাছ লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

নানক আরও বলেন, থাইল্যান্ডে তাল গাছ লাগিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়েছে। সেখানকার বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। ভিয়েতনামে মোবাইল টাওয়ারের আর্থ-ইন সিস্টেমের মাধ্যমে বজ্রপাতে মৃত্যু সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়েছে। বাংলাদেশে হাওর এলাকায় তাল গাছ লাগানোর পাশাপাশি টাওয়ার নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি দরকার মানুষের সচেতনতা। আমরা গণমাধ্যমের সহায়তায় জনগণকে এ বিষয়ে সচেতন করছি। এছাড়াও বজ্রপাত থেকে মানুষের জীবন রক্ষায় বর্তমান সরকার উন্নত প্রযুক্তির বজ্র প্রতিরোধক (লাইটনিং অ্যারেস্টার) কেনার সিদ্ধান্তও নিয়েছে।

স্বাগত বক্তব্যে প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর বলেন, বর্তমান সরকার ২০১৬ সালে বজ্রপাতকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, পৃথিবীর তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে গেলে বজ্রপাতের সংখ্যা ৫০ শতাংশ বেড়ে যায়। তাই সবার আগে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় জনসচেতনতা বাড়ানোর বিকল্প নেই।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দেলোয়ার হোসেন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আমাদের বেশি করে গাছ লাগাতে হবে। বজ্রপাত ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ এবং পরিবেশবিদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, বাংলাদেশে সাধারণত মে থেকে জুলাই মাসে বেশি বজ্রপাত হয়ে থাকে। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ অন্যতম বজ্রপাত প্রবণতা এলাকা। বজ্রপাতের সময় আলো ও শব্দের পার্থক্য হিসাব করলে বোঝা যায় কত দূরে বজ্রপাত হচ্ছে। সে অনুযায়ী আমরা নিরাপদ স্থানে অবস্থান নিতে পারি। বাংলাদেশে প্রায় প্রতিটি জেলায় কম বেশি বজ্রপাত হয়ে থাকে। এর মধ্যে ঢাকা, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, শ্রীমঙ্গল এবং সিলেট জেলায় বেশি বজ্রপাত হয়ে থাকে। যেসব এলাকায় বজ্রপাত বেশি হয়, সেই এলাকাগুলোতে লাইটনিং অ্যারেস্টার স্থাপন করা প্রয়োজন। তবে বজ্রপাত থেকে জীবন রক্ষায় সামগ্রিকভাবে জনসচেতনতার কোনো বিকল্প নেই।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এনআর/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন