বিজ্ঞাপন

ঈদরাতে ধবলধোলাই আনন্দ

July 20, 2021 | 9:50 pm

স্পোর্টস ডেস্ক

ঢাকা: ঈদ-উল-ফিতরের আগের রাতে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের আনন্দটা হয় ভিন্ন মাত্রায়। আকাশের চাঁদ ঈদ আগমনের নিশ্চয়তা দেয়, আহা কী আনন্দ। ঈদুল আজহাতে অবশ্য সেই রোমাঞ্চটা মিলে না। এই ঈদ কবে হবে সেটা যে নিশ্চিত হয়ে থাকে আগে থেকেই। তবে এবার ঈদুল আজহার রাতেও বাংলাদেশিদের বাড়তি আনন্দ! জিম্বাবুয়ে থেকে যে সু-খবর এলো। ২৯৮ রানের বড় বাধা পেরিয়ে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২০ জুলাই) হারারের স্পোর্টস ক্লাব মাঠে তামিম ইকবালের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি ও শেষ দিকে অনেকদিন পর দলে ফের নুরুল হাসান সোহানের দারুণ ফিনিশিংয়ে ১২ বল হাতে রেখেই ৫ উইকেটে জয় নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুটি ম্যাচও জিতেছিল টাইগাররা।

সিরিজে সম্ভাব্য সবই জিতল বাংলাদেশ। তিনটি ম্যাচই জিতে পূর্ণ ৩০ পয়েন্ট তুলে নিল তামিম ইকবালের দল। যাতে আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপের সুপার লিগে বাংলাদেশের মোট পয়েন্ট বেড়ে হলো ৮০। পয়েন্ট টেবিলের দুই নম্বর জায়গাটা আরও সুসংহত হলো টাইগারদের। দেশের বাইরে প্রতিপক্ষকে এ নিয়ে তৃতীয়বার হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের এটা পঞ্চশতম ওয়ানডে জয়। এই প্রথম কোনো দলের বিপক্ষে জয়ের অর্ধশতক পূর্ণ করল টাইগাররা।

দীর্ঘ মেয়াদে অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়ার পর বিদেশে প্রথম সিরিজ জয়টাকে ধবলধোলাইয়ের রংয়ে রাঙালেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। আজকের জয়ে ম্যাচসেরাও তামিম। ২০০৯ সালের সেই ঐতিহাসিক জয়ের দৃশ্যটাই যেন আজ মঞ্চায়িত হলো! চার্লস কভেন্ট্রির ১৯৪ রানের ইতিহাস গড়া সেই ইনিংসে ৩১২ রান তুলেছিল জিম্বাবুয়ে। তামিম ইকবাল ১৫৮ রানের কাব্যিক এক ইনিংস খেলে সেই রান পেরিয়ে বাংলাদেশকে জিতিয়েছিলেন। আজ জিম্বাবুয়ে টার্গেট দিয়েছিল ২৯৯ রানের। বড় রানের জবাব দিতে নেমে তামিম আজও নায়ক হলেন।

বিজ্ঞাপন

সিরিজের প্রথম দুই ওয়ানডেতে ইনিংস বড় করতে পারেননি। প্রতিপক্ষের বড় সংগ্রহ তাড়া করতে নেমে কোনও একজনের যখন একটা বড় ইনিংস খেলা খুব দরকার তামিম তখনই দাঁড়িয়ে গেলেন। প্রথম উইকেটে লিটন দাসের সঙ্গে ৮৮ রান তুলেছেন তামিম। লিটন ব্যক্তিগত ৩২ রানে স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে ক্যাচ তোলার পর সাকিব আল হাসানের সঙ্গে তার দ্বিতীয় উইকেট জুটিটাও জমেছিল। সাকিব (৩০) উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিলে ৪৫ রানের জুটি ভেঙেছে, বাংলাদেশের রান তখন ১৪৭। তারপর মোহাম্মদ মিঠুনকে নিয়ে দলকে টেনেছেন তামিম।

ইনিংসের শুরু থেকেই ছিলেন বেশ সাবলীল। সর্বশেষ শ্রীলংকা সিরিজে তিন সেঞ্চুরি মিস করা তামিম আজ ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৪ নম্বর সেঞ্চুরিটা পূর্ণ করেছেন ৮৭ বলে। তার ক্যারিয়ারের দ্রুততম সেঞ্চুরি এটা। আগেরটি ছিল ৯৪ বলে, ২০১০ সালে করেছিলেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে।

বিজ্ঞাপন

দ্রুত রান বাড়াতে গিয়ে দলীয় ২০৪ রানের মাথায় ১১২ রান করে ফিরেছেন তামিম। তার ৯৭ বলের ইনিংসে চারের মার ছিল ৮টি, ছক্কা ৩টি। তামিম ফেরার পরের বলে অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহও ফিরেন। তবে বাংলাদেশকে পথ হারাতে দেননি নুরুল হাসান সোহান ও মোহাম্মদ মিঠুন জুটি।

সম্প্রতি ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফর্ম করা সোহান স্কোয়াডে ডাক পেলেও একাদশে সুযোগ মিলছিল না। আজ সুযোগ পেয়েই কাজে লাগালেন তরুণ উইকেটরক্ষক ব্যাটার। পরপর দুই উইকেট পড়া দলকে বিপদের মুখ থেকে জয়ের কাছে নিয়ে গেছেন সোহান।

পঞ্চম উইকেট জুটিতে ৬৪ রান তুলে মিঠুন (৩০) ফিরলেও সোহান দলের জয় নিশ্চিত হওয়া অবদি উইকেটে ছিলেন। ৪৮ ওভারে পাঁচ উইকেট হারিয়ে জয়ের জন্য ৩০২ রান তোলে বাংলাদেশ। সোহান তখন ৩৯ বলে ৪৫ রানে অপরাজিত। তার ইনিংসে চারের মার ছয়টি। ১৭ বলে ২৬ রান করেন আফিফ হোসেন ধ্রুব।

বিজ্ঞাপন

এর আগে রেগিস চাকাভা, সিকান্দার রাজা ও রায়ান বার্লের তিন হাফ সেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ওভারের তিন বল আগে গুটিয়ে যাওয়ার আগে ২৯৮ রান তোলে জিম্বাবুয়ে। ইনিংসের শুরু থেকেই বাংলাদেশকে জেকে বসতে দেয়নি জিম্বাবুয়ে। ৩৬ রানের মাথায় তরুণ ওপেনার মারুমা ফিরলেও অপর প্রান্তে অভিজ্ঞ চাকাভা চোখে চোখ রেখে লড়ছিলেন। দ্বিতীয় উইকেটে ব্রেন্ডন টেলরের সঙ্গে ৪২ ও তৃতীয় উইকেটে ডিন মায়ার্সের সঙ্গে ৭১ রানের জুটি গড়ে রানের চাকা সচল রেখেছিলেন।

এরপর ২১ রানের মাথায় তিন উইকেট তুলে নিয়ে জিম্বাবুয়েকে চেপে ধরতে চেয়েছিল বাংলাদেশ। তবে অনেকদিন পর দলে ফেরা সিকান্দার রাজা ও তরুণ রায়ান বার্ল বাংলাদেশকে চাপটা আর ধরে রাখতে দেননি। ষষ্ঠ উইকেটে ১১২ রানের জুটি গড়ে স্বাগতিকদের বড় সংগ্রহ নিশ্চিত করেছেন দুজন। শেষ দিকে দ্রুত কয়েকটি উইকেট হারিয়ে তিন বল আগে ২৯৮ রানে গুটিয়ে গেছে জিম্বাবুয়ে।

চাকাভা ৯১ বলে ৭টি চার ১টি ছয়ে সর্বোচ্চ ৮৪ রান করেছেন। রায়ান বার্ল ৪৩ বলে ৪টি করে চার ছয়ে ৫৯ রান করেন। সিকান্দার রাজা ৫৪ বলে ৭টি চার ১টি ছয়ে ৫৭ রান করেছেন।

বাংলাদেশের পক্ষে ৫৭ রান খরচ করে তিন উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। সাইফউদ্দিনও তিন উইকেট পেয়েছেন, তবে দশ ওভারে রান খরচ করেছেন ৮৭টি। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১০ ওভারে ৪৫ রানে দুই উইকেট পেয়েছেন। সাকিব আল হাসান ৪৫ রানে, তাসকিন আহমেদ ৪৮ রানে একটি করে উইকেট নিয়েছেন।

সারাবাংলা/এসএইচএস/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন