বিজ্ঞাপন

অবশেষে সমঝোতা বরিশালে

August 23, 2021 | 2:33 am

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

বরিশাল: ব্যানার অপসারণ ঘিরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও স্থানীয় প্রশাসনের মধ্যে পাঁচ দিন ধরে চলমান বিরোধের অবসান হয়েছে। বরিশাল সদরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মুনিবুর রহমানের সরকারি বাসভবনে হামলা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের এই ঘটনায় সমঝোতায় পৌঁছেছে বিবদমান পক্ষগুলো।

বিজ্ঞাপন

রোববার (২২ আগস্ট) রাতে বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল ইসলাম বাদলের বাসভবনে এক বৈঠকে তারা সমঝোতায় আসেন। বৈঠকে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র, পুলিশের বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি, বরিশাল মহানগর পুলিশের কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার এবং বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে সমঝোতার তথ্য জানিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম জাহাঙ্গীর বলেন, বিভাগীয় কমিশনারের বাসায় রাত ৯টার দিকে বৈঠক হয়। এ সময় মেয়রের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারসহ বেশকিছু বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হয়েছে। ভুল বোঝাবুঝি থেকে ওই ঘটনা হয়েছে বলে বৈঠকে আলোচকরা তুলে ধরেন। আগামীতে যেন এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকার কথাও উঠে এসেছে।

সমঝোতা বৈঠকটি সফল হওয়ার খবর পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিবুর রহমান। তবে তিনি বলেছেন, তার অনুপস্থিতিতে ‘সিনিয়ররা’ এই সমঝোতা করেছেন।

বিজ্ঞাপন

কী শর্তে সমঝোতা হয়েছে বা সমঝোতা পরবর্তী মামলা প্রত্যাহারে কোনো শর্ত যুক্ত রয়েছে কি না, এসব বিষয়ে নিশ্চিত নন বলে জানিয়েছেন ইউএনও মুনিবুর। তিনি বলেন, এ বিষয়ে জেলা বা বিভাগীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে।

এর আগে, রোববার দুপুরে বরিশালের ঘটনা ভুল বোঝাবুঝি বলে উল্লেখ করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। তিনি জানিয়েছিলেন, শিগগিরই সমস্যার সমাধান হচ্ছে। তার বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পরই এলো সমাধান।

কয়েক দিন ধরে দেশব্যাপী আলোচিত এই ঘটনার সূত্রপাত গত বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বরিশাল নগরীর থানা কাউন্সিল (উপজেলা পরিষদ) কম্পাউন্ডে ব্যানার অপসারণকে কেন্দ্র করে। ওই সময় সিটি করপোরেশনের মেয়রসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের লক্ষ্য করে ইউএনও’র উপস্থিতিতে আনসার সদস্যদের গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সরকারি বাসভবনে হামলার অভিযোগ তুলেছেন ইউএনও। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ হাজির হলে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

বিজ্ঞাপন

পুলিশ ও আনসার সদস্যদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের ওই সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে তিন জন পুলিশ ও দুইজন আনসার সদস্যও রয়েছেন।

এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় দু’টি মামলা দায়ের হয়। একটির বাদী ইউএনও মো. মুনিবুর রহমান, অন্যটির কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরির্দশক (এসআই) শাহজালাল মল্লিক। দুই মামলাতেই মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে প্রধান আসামি করা হয়।

এর মধ্যে রোববার ইউএনও মুনিবুর রহমান ও কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বরিশালের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুম বিল্লাহর আদালতে দুইটি মামলার আবেদন করা হয়। এর মধ্যে একটি মামলার আবেদন করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন, অন্যটির বাদী ছিলেন বরিশাল সিটির রাজস্ব কর্মকর্তা বাবুল হালদার। দুই মামলাতেই প্রধান আসামি ইউএনও মুনিবুর রহমান।

নালিশি মামলা দুইটি আমলে নিয়ে আদালত আগামী ২৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বরিশাল জেলার পুলিশ সুপারকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্ত প্রতিবেদন এলে আদালত পরবর্তী নির্দেশনা দেবেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/টিআর/এসএস

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন