বিজ্ঞাপন

জলজট ও প্রাণহানি: খালে সিডিএর বাঁধকে দূষছে চসিক

August 29, 2021 | 8:29 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: জলাবদ্ধতা প্রকল্পের কাজের জন্য বিভিন্ন খালে দেওয়া বাঁধ অপসারণ না করায় চট্টগ্রাম নগরীতে জলজট প্রকট আকার ধারণ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। জলাবদ্ধতার মধ্যে নালায় পড়ে প্রাণহানির জন্যও একই অভিযোগ করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন তিনি। প্রকল্পের বিভিন্ন অসঙ্গতি তুলে ধরে আদৌ জলাবদ্ধতা নিরসন হবে কি না তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন মেয়র রেজাউল।

বিজ্ঞাপন

রোববার (২৯ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ষষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের মাসিক সাধারণ সভায় মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী এসব অভিযোগ করেন। এর আগেও মেয়র জলজটের জন্য খালে দেওয়া বাঁধ নিয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) বিরোধিতায় সরব হয়েছিলেন।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বাস্তবায়ন করছে সিডিএ। এ প্রকল্পের আওতায় নগরীর বিভিন্ন খালের ভেতরের অংশে অস্থায়ী বাঁধ দিয়ে জলকপাট ও প্রতিরোধ দেওয়াল নির্মাণের কাজ চলছে। খালে দেওয়া বাঁধের কারণে ব্যাপক জলাবদ্ধতার আশঙ্কার কথা গত মে মাসে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন চসিকের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। বর্ষা মৌসুম শুরুর পর গত জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত বৃষ্টিতে কয়েক দফা ভয়াবহ জলাবদ্ধতার কবলে পড়তে হয়েছে নগরবাসীকে।

বিজ্ঞাপন

সর্বশেষ গত ২৫ আগস্ট প্রবল বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলজটে নগরীর মুরাদপুরে নালায় পড়ে নিখোঁজ হন সালেহ আহমদ (৫৫) নামে এক সবজি বিক্রেতা। ব্যাপক তল্লাশির পরও চারদিনেও খোঁজ মেলেনি ওই ব্যক্তির। ঘটনার পরদিন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বাসায় গিয়ে তার স্ত্রী-সন্তানদের কাছে ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।

এ প্রেক্ষাপটে চসিকের সাধারণ সভায় আবারও জলাবদ্ধতার প্রসঙ্গ তুলে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘জলাবদ্ধতা সংকট নিরসনে সিডিএ মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এজন্য নগরীতে বিভিন্ন খালের ওপর বাঁধ দেওয়া হয়েছে। বর্ষা মৌসুম শুরুর পর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বারবার বাঁধগুলো অপসারণের তাগাদা দেওয়া হয়েছে। সেগুলো অপসারণের কথা দিয়েছিল সিডিএ, কিন্তু বাস্তবায়ন করেনি। এ কারণে এবার বর্ষা মৌসুমে নগরীতে জলাবদ্ধতা প্রকট হয়েছে। নালায় পড়ে একজনের প্রাণহানি হয়েছে, এটা খুবই দুঃখজনক।’

জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বার বার প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে- এ নিয়ে চিন্তায় আছি। কারণ, চট্টগ্রাম নগরীতে ৫৭টি খলের মধ্যে ৩৩টি খাল প্রকল্পের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। এই খালগুলোর পুনরুদ্ধার ও সংস্কার ছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসন কতটুকু সফল হতে পারে- তা বুঝতে পারছি না।‘

বিজ্ঞাপন

গত ১৪ জুন চসিক-সিডিএসহ বিভিন্ন সেবা সংস্থার যৌথ বৈঠক হয়েছিল মেয়রের কার্যালয়ে। সেখানে যৌথ সিদ্ধান্ত হয়েছিল, চলমান জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজের আওতায় চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন খালে দেওয়া অস্থায়ী বাঁধ ৩০ জুনের মধ্যে অপসারণ করা হবে। ২৪ জুন পর্যন্ত একটি খালের বাঁধও অপসারণ না করায় সিডিএ’র প্রতি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন মেয়র। এরপর আরও কয়েকবার খালের বাঁধ অপসারণের তাগাদা দিয়েছিলেন মেয়র।

 

 

বিজ্ঞাপন

এদিকে নগরীর নালা-নর্দমা ও খাল সংস্কারের জন্য আড়াই হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে বলে জানিয়েছেন চসিক মেয়র।

নগরীর সড়কের বেহাল অবস্থায় নিয়ে মেয়র বলেন, ‘বর্ষা মৌসুম দীর্ঘায়িত হওয়ায় এবং অতিবর্ষণের কারণে নগরীর অনেক গুরুত্বপূর্ণ সড়কে সংস্কার কাজ করা সম্ভব হয়নি। পোর্ট কানেকটিং রোড ও মাঝিরঘাট স্ট্যান্ড রোড থেকে ঠিকাদাররা কাজ না করে সটকে পড়েছে। সড়কগুলো এখন যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে অনেক সড়কের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেগুলো সংস্কারের দায়িত্ব বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষের। কিন্তু তারা সেটা করছে না। এজন্য জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।’

সভায় চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম, সচিব খালেদ মাহমুদ এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন