বিজ্ঞাপন

‘ষড়যন্ত্র এখনও চলছে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছেন শেখ হাসিনা’

August 30, 2021 | 7:40 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এখনও ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া বলেছেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যার যে ষড়যন্ত্র হয়েছিল, সেই ষড়যন্ত্র এখনও চলছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার কাজ করে যাচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাৎবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়া সাবেক সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যায় জড়িত উল্লেখ করে বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ২০ মার্চ বঙ্গবন্ধুর খুনি কর্ণেল ফারুক ও রশিদ জিয়াউর রহমানের কাছে গিয়ে তাদের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল। জিয়া সেদিন বলেছিলেন- গো অ্যাহেড। এই জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার যাতে হতে না পারে সেজন্য ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করেছিলেন। এসব আমার বক্তব্য নয়। তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে আমাদের সামনে এখন অনেক কিছুই চলে আসছে। জিয়া যখন অবৈধ রাষ্ট্রপতি, তখন ফারুক-রশিদ লন্ডনে গিয়ে অ্যান্থনি মাসকারহেনসাসকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। সেই সাক্ষাৎকার এখন ইউটিউবে আছে।’

‘সেদিন শুধু একজন বঙ্গবন্ধুকে খুন করা হয়নি। খুন করা হয়েছিল বাংলাদেশের ভবিষ্যতকে। আমার মতো অসংখ্য তরুণের, অসংখ্য মেধাবীর স্বপ্ন-ভবিষ্যতকে সেদিন খুন করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকে খুন করে এদেশকে আবারও পাকিস্তান বানানোর চেষ্টা হয়েছিল। শেখ হাসিনা দেশে ফেরায় সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। সেদিন শেখ হাসিনাকেও দেশে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরের বাসভবনে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তিনি রাস্তায় বসে বাবা-মায়ের জন্য দোয়া করেছেন।’

বিজ্ঞাপন

বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ’২১ বছর ধরে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথ রুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর শেখ হাসিনা যখন প্রধানমন্ত্রী হলেন তখন তিনি ইনডেমনিটি আইন বাতিল করে বিচার শুরু করলেন। তিনি কিন্তু পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নেননি। স্বাভাবিক আইনে, দেশের প্রচলিত আইনে তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছেন এবং খুনিদের শাস্তি দিয়েছেন।’

বঙ্গবন্ধুর পর তার কন্যাকে হত্যার ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে বারবার হত্যার ষড়যন্ত্র হয়েছে। বারবার তিনি মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন। ২০০৪ সালের ১৪ আগস্ট তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান, তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, মন্ত্রী আলী আহসান মুজাহিদ হাওয়া ভবনে বসে গ্রেনেড হামলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এটা আমার কথা নয়। ওই মামলায় যারা গ্রেফতার হয়েছেন, তাদের মধ্যে এনএসআইয়ের সেসময়ের প্রধানও আছেন, তারাই ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।’

‘গ্রেনেড হামলা করে শেখ হাসিনাকে হত্যার যে ষড়যন্ত্র হয়েছিল, সেই ষড়যন্ত্র এখনও চলছে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কাজ করছেন। উনি বলেছেন- মৃত্যুর পরোয়া আমি করি না। এদেশের গরিব-দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নই আমার লক্ষ্য। শেখ হাসিনার প্রতিটি কাজই বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে সামনে রেখে করা। তিনি দল পরিচালনা করেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে। তিনি সরকার পরিচালনা করেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে। উনার জীবনে বিলাসিতার কোনো স্থান নেই। আমি অনেক কিছু দেখি, অনেক কিছু জানি। তিনি নিজের কাপড় নিজে পরিষ্কার করেন, নিজের রান্না নিজেই করেন।’

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের বলেন- আমার বয়স হয়েছে। আমি না থাকলেও আওয়ামী লীগ যেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শে পরিচালিত হয়। দলের নেতাকর্মীরা যাতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে চলেন। সুতরাং আমাদের শেখ হাসিনার পাশে থাকতে হবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে। উনার পাশে থেকে উনাকে এগিয়ে যাবার ক্ষেত্রে শক্তি-সাহস যোগাতে হবে।’

বিভক্তির কারণে আলোচিত চট্টগ্রাম-১৪ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনের তিন নেতাই উঠেছিলেন একমঞ্চে। বিপ্লব বড়ুয়া ছাড়াও মঞ্চে ছিলেন সাংসদ আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-প্রচারও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম।

বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ‘সাংসদ নদভী সাহেবের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত কোনো বিরোধ নেই। উনার সঙ্গে আমার ব্যবসা-বাণিজ্য, জায়গা-সম্পত্তি নিয়ে কোনো বিরোধ নেই। উনি সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার অনেক উন্নয়ন করেছেন। এ কারণে তিনি এলাকায় অনেক জনপ্রিয়। সরকার কী চায়, সরকার কীভাবে দেশের উন্নয়ন করতে চায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কী চান- সেটা উনাকে বলেছি। আমাদের মধ্যে কোনো বিভক্তি নেই। আমিনুল ইসলাম আমিন ভাইয়ের সঙ্গেও আমার কোনো বিরোধ নেই। আমরা সবাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য কাজ করছি।’

লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খোরশেদ আলম চৌধুরী সভায় সভাপতিত্ব করেন। লোহাগাড়ার মোস্তাফিজুর রহমান কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত সভায় চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানও বক্তব্য দেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন