বিজ্ঞাপন

পরিকল্পনা কমিশনের আপত্তি: পরামর্শক ব্যয় কমল ৫০ লাখ টাকা

September 2, 2021 | 10:19 am

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: পরিকল্পনা কমিশনের আপত্তির মুখে ‘কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের পরামর্শক ব্যয় ৫০ লাখ টাকা কমেছে। এই খাতে প্রস্তাব করা হয় ৫ কোটি টাকা। কিন্তু প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় এই ব্যয় যৌক্তিকভাবে হ্রাস করতে বলা হয়েছিল। সেই সুপারিশ মেনে এখন সাড়ে ৪ কোটি টাকার প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ৫৩৮ কোটি ১০ লাখ টাকা। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী সভায় এটি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর গত ২৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয় পিইসি সভা। ওই সভার সুপারিশে বলা হয়, পরামর্শক খাতের ব্যয় যৌক্তিকভাবে হ্রাস করতে হবে। এছাড়া পুরাতন গোমতী নদীকে লেকে রূপান্তরসহ সৌন্দর্যবর্ধন ও ভৌত নির্মাণ কাজ, নগরভবন নির্মাণ এবং সেবক কলোনি নির্মাণ— এই তিনটি অংশের কার্যক্রম পরিচালনায় পরামর্শকের জন্য পৃথক ও বিস্তরিত কার্যপরিধি (টিওআর) ডিপিপিতে (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) সংযোজন করতে হবে। এই সুপারিশ মেনে ৫০ লাখ টাকা কমিয়েছে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের বর্তমান আয়তন ৫৩ দশমিক শূন্য ৪ বর্গকিলোমিটার। যেখানে ২৬৮ কিলোমিটার পাকা রাস্তা, ১৫৪ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা এবং ৯৫ দশমিক ৫০ কিলোমিটার পাকা ড্রেন রয়েছে। এছাড়া ৭৫ দশমিক ৪৬ কিলোমিটার কাঁচা ড্রেন ও ২৪ দশমিক ৪০ কিলোমিটার ফুটপাত রয়েছে। সিটি করপোরেশনের অধিকাংশ রাস্তা কাঁচা ও অনুন্নত। নতুন সিটি করপোরেশন হিসেবে অনেক নাগরিক সুবিধা এখনও নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে। একনেকে অনুমোদন পেলে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্পটি প্রক্রিয়াকরণের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মামুন-আল-রশীদ সারাবাংলাকে বলেন, প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে। এক্ষেত্রে নতুন রাস্তা, ড্রেন ও ফুটপাত নির্মাণের মাধ্যমে জলাবদ্ধতা নিরসন ও যানজট নিরসনসহ উন্নততর যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হবে। এছাড়া নগর ভবন, সেবক কলোনি, আঞ্চলিক অফিস বর্ধিতকরণ, পাবলিক টয়লেট, বাস ও ট্রাক টার্মিনাল, কবরস্থানও শ্মশানের উন্নয়ন, গোমতী নদীসহ অন্যান্য পুকুরের সংস্কার ও উন্নয়ন করা হবে। ফলে নাগরিকদের উন্নততর সেবা দেওয়া এবং পরিবেশবান্ধব ও স্বাস্থ্যসম্মত নগরী গড়ে তোলা সম্ভব হবে। এসব বিবেচনায় প্রকল্পটি একনেকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে।

প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রমগুলো হলো- দুটি বেইজমেন্টসহ ৯ তলা আধুনিক নগরভবন নির্মাণ করা। এ দুটি হবে ১৫ তলা ভিত্তি বিশিষ্ট ২১ হাজার ৩৬০ বর্গমিটারের। এছাড়া ১০ হাজার ৩৪৮ বর্গমিটার সেবক কলোনি নির্মাণ, এক হাজার ৭০ বর্গমিটারের আঞ্চলিক অফিস বর্ধিতকরণ। পাশাপাশি ৪০ হাজার ৪৭৩ বর্গমিটার মোস্তফাপুর ট্রাক টার্মিনাল স্থাপন, আট হাজার ১৯৪ বর্গমিটার চকবাজার বাস টার্মিনাল উন্নয়ন, ১০ একর ভূমি অধিগ্রহণ, ৮০ হাজার ৯৫৭ ঘনমিটার ট্রাক টার্মিনালের ভূমি উন্নয়ন করা হবে।

প্রকল্পের আওতায় আরও যেসব কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে সেগুলো হচ্ছে- কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এলাকায় পুরাতন গোমতী নদীসহ ডিসি পুকুর ও রাজবাড়ী পুকুরের সৌন্দর্যবর্ধন ও উন্নয়ন করা হবে। এছাড়া ১৪৬টি কবরস্থান ও শ্মশান উন্নয়ন,৭টি পাবলিক টয়লেট নির্মাণ, ৩০৫ কিলোমিটার নতুন রাস্তা নির্মাণ, ২০৩ কিলোমিটার নতুন ড্রেন নির্মাণ, ১৯ কিলোমিটার নতুন ফুটপাত নির্মাণ করা হবে। সেই সঙ্গে একটি ডাবল কেবিন পিকআপ,একটি জিপ গাড়ি ও পাঁচটি মোটরসাইকেল কেনা হবে। প্রকল্পের আওতায় রোপণ করা হবে ৫ হাজার ৩৬০টি বৃক্ষ।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জেজে/এসএসএ

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন