বিজ্ঞাপন

‘পেন্সিলে আঁকা পরী’র সমাধান কেবল কপিরাইট অফিসে

September 16, 2021 | 6:48 pm

আহমেদ জামান শিমুল

ঢাকা: হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস ‘পেন্সিলে আঁকা পরী’ অবলম্বনে চলচ্চিত্র নির্মাণ থেকে সরে এসেছেন অমিতাভ রেজা চৌধুরী। হুমায়ূন পরিবারের চলচ্চিত্রের গল্পের জন্য বড় অঙ্কের অর্থ এবং সেই সঙ্গে চলচ্চিত্র মুক্তির পর এর আয়ে অংশীদারিত্ব চাওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে বলে জানান তিনি। তবে অমিতাভ চাইলে কপিরাইট অফিসে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানাতে পারবেন।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের নিবন্ধক জাফর রাজা চৌধুরী সারাবাংলাকে জানান, কপিরাইট আইন, ২০০০ এর ৫০ নং ধারা অনুযায়ী অমিতাভ রেজা চাইলে অভিযোগ জানাতে পারবেন।

জাফর রাজা চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, “অমিতাভ যদি মনে করেন হুমায়ূন আহমেদের উত্তরাধিকারীরা ‘পেন্সিলে আঁকা পরী’ উপন্যাসের জন্য কপিরাইট বাবদ অতিরিক্ত অর্থ চাইছে, সেক্ষেত্রে তিনি কপিরাইট আইনের ৫০ নং ধারা অনুযায়ী অভিযোগ জানাতে পারবে। আর তখন কপিরাইট অফিস যদি দেখে অতিরিক্ত অর্থ চাওয়া হয়েছে তাহলে তারা চাইলে একটি যৌক্তিক অর্থ উত্তরাধিকারীদের জন্য নির্ধারণ করে দিতে পারবে। তারা এই ‘যৌক্তিক অর্থ নির্ধারণে’ যদি সন্তুষ্ট না হন, তারপরও তা অমিতাভকে দিতে বাধ্য থাকবে।”

২০০৪ সালের দিকে হুমায়ূন আহমেদ পরিচালক আবু সাইয়ীদকে ‘জনম জনম’ ও ‘পেন্সিলে আঁকা পরী’ দুটি উপন্যাস থেকে চলচ্চিত্র নির্মাণের স্বত্ব দিয়ে যান। পরবর্তীতে আবু সাইয়ীদ ‘জনম জনম’ থেকে ‘নিরন্তর’ নামে একটি ছবি বানান। এবং ২০০৮ এর দিকে অমিতাভ রেজা তার কাছে ‘পেন্সিলে আঁকা পরী’র জন্য অনুমতি চাইলে তিনি হুমায়ূন আহমেদের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি আনতে বলেন। হুমায়ূন আহমেদের কাছ থেকে অমিতাভ মৌখিক অনুমতি নিয়েছিলেন।

বিজ্ঞাপন

চলতি বিতর্কে অনেকে বলছেন, অমিতাভকে হুমায়ূন পরিবার অনুমতি না দিলে আবু সাইয়ীদ তো চাইলে ‘পেন্সিলে আঁকা পরী’ বানাতে পারেন এবং কিংবা উনিই তো অমিতাভকে লিখিত অনুমতি দিতে পারেন। তবে কপিরাইট আইন অনুযায়ী তা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন জাফর রাজা চৌধুরী।

তিনি বলেন, “আইন অনুযায়ী আবু সাইয়ীদ তার কাছে থাকা কপিরাইট অমিতাভকে স্থানান্তর করতে পারবে না। আর মৌখিক অনুমতিতে কোনো কপিরাইট হয় না। একইসঙ্গে কপিরাইট আইনের ১৯ (৫) ধারা অনুযায়ী লিখিত চুক্তিতে যদি কপিরাইটের কোনো মেয়াদ উল্লেখ না থাকলে তার মেয়াদ সর্বোচ্চ ৫ বছর হবে। এখন আবু সাইয়ীদের সঙ্গে হুমায়ূন আহমেদের চুক্তিতে যদি তা উল্লেখ না থাকলে তাহলে আইন অনুযায়ী তিনি আগের চুক্তিতে ‘পেন্সিলে আঁকা পরী’ নির্মাণ করতে পারবে না।”

হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে করা চুক্তি নিয়ে আবু সাইয়ীদের সঙ্গে কথা হয় সারাবাংলার। তিনি জানান, গত ১৭ বছরে তার অফিস, বাসা বেশ কয়েকবার পরিবর্তন হয়েছে। যে কারণে কপিরাইটের কাগজ কোথায় আছে তা খুঁজে বের করে বলতে হবে কতদিনের জন্য চুক্তি হয়েছিল কিংবা মেয়াদ ব্যতীত চুক্তি হয়েছিলো কিনা।

বিজ্ঞাপন

তবে আবু সাইয়ীদ বলেন, ‘কপিরাইট আইন অনুযায়ী মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে কিংবা আমি স্থানান্তর করতে পারবো কিনা সেটার চেয়ে বড় কথা এখানে সৌজন্যবোধ। কারণ হুমায়ূন আহমেদ যেহেতু জীবিত থাকাকালীন মৌখিকভাবে অমিতাভকে অনুমতি দিয়ে গিয়েছিলেন এবং হয়ত কোন কারণে  লিখিত অনুমতি নেওয়া হয়নি— তাই তার পরিবারের উচিত হুমায়ূনের সম্মানে অমিতাভের ক্ষেত্রে আর্থিক দিকটা বিবেচনা করা। বড় অংকের অর্থ এবং রেভিনিউ শেয়ার উনার অন্য উপন্যাসের ক্ষেত্রে তারা চাইতে পারেন বা কঠোর থাকতে পারেন। পেন্সিলে আঁকা পরী’র জন্য মনে হয় ঠিক হচ্ছে না।

বিদ্যমান কপিরাইট আইনের সুযোগটি নিবেন কিনা জানতে যোগাযোগ করা হয় অমিতাভ রেজা চৌধুরীর সঙ্গে। বেশ কয়েকবার তার মোবাইল নম্বরে কল করা হলেও তিনি তা ধরেননি।

আরও পড়ুন: হুমায়ূন পরিবারের শর্তে ছবি স্থগিত করে অনুদান ফেরত দিচ্ছেন অমিতাভ

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এজেডএস

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন