বিজ্ঞাপন

কৃষিপণ্যের রফতানি ২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে রোডম্যাপ

October 11, 2021 | 6:30 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: মাত্র চার বছরের ব্যবধানে কৃষিপণ্যে রফতানি আয় দ্বিগুণ হয়ে এক বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। কিছু বাধা দূর হলে আগামী দুই বছরে তা দুই বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে। আর সে লক্ষ্যে পৌঁছতে বেশ কিছু বাধা চিহ্নিত করে তা দূর করার সুপারিশ করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১১ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) অডিটোরিয়ামে ‘শাকসবজি, আলু, ফলমূল ও প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য রফতানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রণীত খসড়া রোডম্যাপ’-এ এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। কৃষি মন্ত্রণালয় এ রোডম্যাপ তৈরি করেছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন কৃষি বিপণন অধিদফতরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মোহাম্মদ ইউসুফ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহ এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান ড. অমিতাভ সরকার। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. রুহুল আমিন তালুকদার।

এ সময় শাকসবজি, ফলমূল ও প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য রফতানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রণীত খসড়া রোডম্যাপ উপস্থাপনা করেন কৃষি বিপণন অধিদফতরের উপ-পরিচালক (উপসচিব) ড. মোহাম্মদ রাজু আহমেদ এবং আলু রফতানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রণীত খসড়া রোডম্যাপ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের গবেষণা সেলের প্রধান সমন্বয়কারী ড. মো. রেজাউল করিম।

বিজ্ঞাপন

খসড়া রোডম্যাপ উপস্থাপনায় তারা শাকসবজি, আলু, ফলমূল ও প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য রফতানি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রধান প্রধান সমস্যা চিহ্নিত করার পাশাপাশি তা সমাধানের লক্ষ্যে বেশ কিছু সুপারিশ প্রস্তাব করেন। এই সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করা গেলে কৃষিপণ্য রফতানির ক্ষেত্রে ২০২১-২২ সালে ১ দশমিক ৬৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (সম্ভাব্য) এবং ২০২২-২৩ সালে (জুন পর্যন্ত) ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (সম্ভাব্য) আয় করা সম্ভব হবে। আলু রফতানির ক্ষেত্রে ২০২২ সালে ৮০ হাজার টন, ২০২৩ সালে ১ লাখ ২০ হাজার টন, ২০২৪ সালে ১ লাখ ৮০ হাজার এবং ২০২৫ সালে ২ লাখ ৫০ হাজার টন আলু রফতানি করা সম্ভব বলে খসড়া রোডম্যাপে উল্লেখ করা হয়েছে।

রোডম্যাপে শাকসবজি, ফলমূল ও প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য রফতানি বাড়ানোর লক্ষ্যে কমিটি বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। সেগুলো হলো- কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পৃথক রফতানিমুখী গবেষণা সেল গঠন; বিদেশ থেকে কাঙ্ক্ষিত জাতের বীজ আমদানি করে দ্রুত রিজিয়নাল ট্রেইল গঠনের মাধ্যমে মাধ্যমে বিএডিসি ও ডিএই মাধ্যমে বীজ সম্প্রসারণ; কন্ট্রাক্ট ফার্মিং পদ্ধতিতে জিএপি, জিপিপি ও জিএইচপি অনুসরণের মাধ্যমে নিরাপদ ও মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদন; বিমান বন্দরের কার্গো স্থানে কৃষিপণ্যের জন্য পৃথক গেট, আলাদা আয়গা ও পৃথক স্ক্যানার মেশিন দ্রুত যুক্ত স্থাপন করতে হবে; সব বিমানে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ স্থান বাধ্যতামূলকভাবে কৃষিপণ্য পরিবহনের জন্য বরাদ্দ রাখা; প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকার জন্য বিমান ভাড়া পুননির্ধারণ; বিমানবন্দর এলাকায় বিএডিসির তত্ত্বাবধানে এক একর জমিতে আধুনিক মানসম্মত হিমাগার স্থাপন।

এছাড়াও অন্যান্য সুপারিশগুলো হলো- রফতানি চাহিদাভিত্তিক টেস্টগুলোর আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত অ্যাক্রিয়েডেশন বোর্ড কর্তৃক অ্যাক্রিয়েডেশন সনদ গ্রহণ; বেসরকারি পর্যায়ে পিপিপি মডেলে একটি আন্তর্জাতিক মানের ল্যাব স্থাপন; বেসরকরি পর্যায়ে চলমান ল্যাবগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা প্রদান; বিএসটিআইকে ভারতের ছয় হাজার রুপির সমমূল্যে বাংলাদেশি টাকা ফি গ্রহণ এবং সাত দিনের মধ্যে পরীক্ষার ফলাফল প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এছাড়াও রফতানিতে ভ্যাট ও কাস্টমস ডিউটি কমানোসহ আরও বেশ কিছু সুপারিশ রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আলু রফতানি বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রণীত সুপারিশগুলো হলো- রফতানি বাজার সার্ভে করে ডিএএম, দূতাবাস এবং বিপিইএ জাতওয়ারি রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ও প্রাক্কলন তৈরি; বিএডিসি, বিএআরআই ও বিপিইএ প্রজেকশন অনুযায়ী সম্ভাব্য জাতগুলো নিয়ে প্রায়োগিক গবেষণা। এছাড়া রফতানিযোগ্য নতুন জাত সহজপ্রাপ্য হওয়ার আগ পর্যন্ত ভর্তুকি মূল্যে বীজ আমদানি করতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণ বীজের প্রাপ্যতা নিশ্চিতকল্পে বিএডিসি, বিএআরআই, আরডিএ প্রচলিত ও টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে বীজ উৎপাদন কার্যক্রম জোরদার করবে। নির্বাচিত এলাকায় চুক্তিবদ্ধ চাষির ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন করতে হবে। আগাম বৈদেশিক বাজার ধরার জন্য স্বল্পকালীন আমন ধান চাষ করে আগাম আলু রোপনের লক্ষ্যে পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। হলোহার্ট, ব্রাউন রট, পটেটো টিউবার মথসহ বালাইমুক্ত আলু উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করতে হবে।

এর পাশাপাশি প্রত্যয়ন ব্যবস্থা শক্তিশালী ও সহজলভ্য করতে হবে এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রত্যয়ন দিতে হবে। প্যাকিং ব্যবস্থা আকর্ষণীয় ও টেকসই করতে হবে। পরিবহন ব্যবস্থা এবং জাহাজীকরণ নিরবিচ্ছিন্ন করতে হবে। পণ্য পরিবহনে শিপিং করপোরেশন যেসব সুবিধা পায়, আলু রফতানির ক্ষেত্রেও তা প্রদানের ব্যবস্থা নিতে হবে।

সারাবাংলা/ইএইচটি/পিটিএম

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন