বিজ্ঞাপন

সরকার সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতি বিনষ্টের চক্রান্ত করছে: ফখরুল

October 14, 2021 | 4:17 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সরকার সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতি বিনষ্টের চক্রান্ত করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি হলে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ অভিযোগ করেন। জাতীয়তাবাদী সমবায় দলের ১১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষার ক্ষেত্রে এবং দেশে স্থিতিশীল অবস্থা রাখতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। হিন্দু ভাইদের যে দুর্গাপূজা হচ্ছে, সেই পূজায় কতগুলো অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে কুমিল্লায় ও চাঁদপুরে। চাঁদপুরে তিনজন পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে এবং নির্বিচারে গুলি করেছে।’

‘এই যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের যে চক্রান্ত- এটা এই সরকারের চক্রান্ত। তারা এদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে চায়, ধ্বংস করতে চায় এবং দেশে স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চায়। আমরা এই সব ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং একইসঙ্গে অবিলম্বে প্রকৃত অপরাধী যারা তাদের গ্রেফতার করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘কোরআর শরিফ নিয়ে পূজামণ্ডপে রেখেছে। কে করেছ? যারা করেছে তারা এই সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্যই করেছে, দেশে স্থিতিশীলতা নষ্ট করার জন্যই করেছে। অন্যদিকে পুলিশ গুলি চালায় নির্বিচারে- সেটাও একই কারণে করেছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের এই দেশ সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতির দেশ। আমরা হাজার বছর ধরে অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে বাস করি। এসব ঘটনা যারা ঘটায় তারা সম্পূর্ণভাবে সরকারের এজেন্সির মাধ্যমে দেশে অশান্তি সৃষ্টি করবার জন্য এবং আসল জায়গা থেকে অন্যদিকে দৃষ্টি নেওয়ার জন্য করছে।’

তিনি বলেন, ‘আমার দেশের সংকট কী? আমার দেশের এখন সংকট হচ্ছে গণতন্ত্র, আমার দেশের এখন সংকট হচ্ছে কথা বলার অধিকার নাই। আমাদের কোথাও দাঁড়াতে দেওয়া না, মানুষের অধিকারকে কেড়ে নিয়েছে। একটা ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী দানবের মতো শাসন চেপে বসে আছে আমাদের ওপর। সেটা নিয়ে যখন কথা বলছি, সেটা নিয়ে যখন কাজ করছি তখন এসব ঘটনা ঘটিয়ে তারা জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ডায়ভার্ট করতে চায়।’

বিজ্ঞাপন

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচন বাংলাদেশে হাসির কথা। লাফিং টকস। বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচন ভুলে গেছে। লাস্ট নির্বাচন ২০০১ সালে হয়েছে তারপরে আর কোনো নির্বাচন হয়নি। ২০০৮ সালে যেটা হয়েছে সেটা একটা অবৈধ সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়েছে, সেটা আমরা কখনো মেনে নিতে পারি না।’

‘কথা পরিষ্কার- নির্বাচন নির্বাচন আর খেলা হবে না। সত্যিকার অর্থে যদি একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হয় আগে সরকারকে সরে যেতে হবে, নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে, তারপর নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জাতীয় প্রেস ক্লাবে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ বন্ধের ঘোষণায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘নব্বইয়ের আন্দোলনের নেতাদের একটা অনুষ্ঠান ছিলো জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে। সেখানে আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দিয়েছিলেন ভার্চুয়ালি। এটা তারা সহ্য করতে পারল না। পরের দিন থেকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সরকারের তথ্যমন্ত্রী বলতে শুরু করলেন খুব অন্যায় হয়েছে, বেআইনি হয়েছে।’

‘আরে ভাই এত ভয় কেন? তারেক রহমান তো সেই ৮ হাজার মাইল দূর থেকে বক্তব্য দিয়েছেন। আপনারা এত ভয় পাচ্ছেন কেন?। তার বক্তব্য প্রচার করা যাবে না, তার ছবি ছাপা যাবে না, তার কথা শোনানো যাবে না। আসলে তারা (সরকার) দুঃস্বপ্ন দেখে— এই বোধহয় এসে গেল এবং দিবা স্বপ্ন দেখে দিনের বেলা ভয় পায় এই বুঝি আমাদের চেয়ার গেল, গদি বোধহয় গেল’— বলেন মির্জা ফখরুল।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতাদের কথা শুনলে মনে হয় আমরা কোথাও নেই। তারাই ইতহাস সৃষ্টি করে, তারা ইতিহাস লেখে। জিয়াউর রহমান দেশের মধ্যে থেকে তার সেনাবাহিনী নিয়ে বিদ্রোহ করে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ ১৯৭১ সালেই পালিয়েছে। পাকিস্তানে পালিয়েছে। বাকিরা সব ভারতে পালিয়েছে। আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান দেশে থেকে যুদ্ধ করেছে এবং আমরা কোনো দিন পালিয়ে যাওয়া দল নই। তার (জিয়া) প্রতিষ্ঠিত দল পালিয়ে যাওয়া দল না। তিনি এখানেই থেকেই লড়াই করেছেন এবং তার মৃত্যুর পর বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ ৯ বছর লড়াই করেছেন।’

মির্জা ফখরুল বলেন, “১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ এই দেশটাকে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছিল। এটা আমার কথা না, হেনরি কিসিঞ্জারের কথা। তিনি বলেছিলেন ‘বটমলেস বাস্কেট’, যা দাও, সব পড়ে যাবে এখানে— এত চোর ছিল, এত লুটেরা ছিল। মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী বলেছিলেন, আওয়ামী লীগের নামটা পাল্টে দিতে হবে। এটাকে বলতে হবে, ‘নিখিল বাংলাদেশ লুটপাট সমিতি’। ইতিহাস এগুলো। এগুলো আমার কথা নয়। দ্যাটস দ্যা ফ্যাক্ট। ইটস দ্যা হিস্ট্রি।”

সমবায় দলের সভানেত্রী অধ্যক্ষ নূর আফরোজ বেগম জ্যোতির সভাপতিত্বে অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, ছাত্রদলের সাবেক নেতা ইসহাক সরকার প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন