বিজ্ঞাপন

বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশের অপ্রস্তুতির চিত্র

October 14, 2021 | 10:01 pm

শামিম হোসেন শিশির, নিউজরুম এডিটর

কদিন বাদেই বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপের দেশে মানিয়ে নিতে দিন দশেক আগেই দেশ ছেড়েছে বাংলাদশে ক্রিকেট দল। টানা দলীয় অনুশীলন ও তিনটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি পর্ব সাড়তে চেয়েছে বাংলাদেশ। প্রস্তুতি ম্যাচ তিনটি শেষ। প্রস্তুত হতে পারল তো বাংলাদেশ? প্রশ্নটা উঠছে প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সের কারণে।

বিজ্ঞাপন

ওমান ‘এ’ দলকে রাজি করিয়ে একটি বাড়তি ম্যাচ আয়োজন করে সেখানে বেশ ভালোই খেলেছে বাংলাদেশ। ওমানিদের আনাড়ি বোলিংয়ের বিপক্ষে লিটন দাস, নুরুল হাসান সোহান, শামীম পাটোয়ারির বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে দুইশর বেশি সংগ্রহ গড়েছিল বাংলাদেশ, পরে শরিফুল ইসলাম ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে বেশিদূর এগুতে পারেনি ওমান ‘এ’ দল। প্রত্যাশিত বড় জয়ই পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু বিশ্বকাপের অফিসিয়াল প্রস্তুতি ম্যাচ দুটিতে পুরো ব্যর্থ টিম বাংলাদেশ। দুই ম্যাচে ব্যাটিংটাই ডুবিয়েছে টাইগারদের।

শ্রীলংকার বিপক্ষে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে এক সৌম্য সরকার বাদে বাংলাদেশের পুরো ব্যাটিং ইউনিট ব্যর্থ। সেই ধারা অব্যাহত রেখে আজ অনেকদূর পিছিয়ে থাকা আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেও হারতে হয়েছে বাংলাদেশকে। প্রশ্নটা তাই স্বাভাবিকভাবেই উঠছে, বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুত তো বাংলাদেশ?

বিশ্বকাপের আগে টানা তিনটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। গত জুলাইয়ে জিম্বাবুয়ে গিয়ে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজটি ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। আগস্টে দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ৪-১ ব্যবধানে জিতেছে বাংলাদেশ। সেপ্টেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ ৩-২ ব্যবধানে জিতে টাইগাররা। অর্থাৎ বিশ্বকাপের আগে ১৩টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচের ৯টিতেই জয় পেয়েছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। নিঃস্বন্দেহে দুর্দান্ত পরিসংখ্যান। তবে ম্যাচের পর ম্যাচ জিতলেও তাতে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ প্রস্তুতি কতোটা হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল তখনই।

বিজ্ঞাপন

অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুটি সিরিজের দশটি ম্যাচ মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খেলেছে বাংলাদেশ। মিরপুরের উইকেট এমনিতেই মন্থর, স্পিনবান্ধব। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড সিরিজের পিচগুলো ছিল আরও স্পিনবান্ধব। যাতে স্বাভাবিকভাবেই রান তুলতে হাঁসফাঁস করতে হয়েছে ব্যাটারদের। বিশ্বকাপের আগ মুহূর্তে টানা এমন উইকেটে খেলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

কারণ বিশ্বকাপের ভেন্যু সংযুক্ত আরব আমিরাতের উইকেটগুলো মোটেও স্পিনবান্ধব নয়, বড় স্কোর দেখা যায় বেশিরভাগ ম্যাচেই। তবে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে বারবার ম্যাচ জেতার বিষয়টিকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। ততে স্পিনবান্ধব উইকেটে প্রতিপক্ষকে অল্প রানে আটকে মাহমুদউল্লাহরা ম্যাচের পর ম্যাচ জিতেছেন ঠিকই কিন্তু ব্যাটিংয়ের দুর্বলতা থেকেই গেছে।

বিজ্ঞাপন

বিশ্বকাপে বড় রানের ম্যাচ হওয়ার ইঙ্গিত আগে থেকেই পাওয়া যাচ্ছিল, প্রস্তুতি ম্যাচগুলোতে তার ইঙ্গিত পাওয়া গেল। কিন্তু বিশ্বকাপের আগে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টানা অল্প রানের ম্যাচ খেলে গেছে বাংলাদেশ। ওমানে গিয়ে গত কয়েক দিনের প্রস্তুতিতে ব্যাটিংয়ের সেই দুর্বলতা যে কাটিয়ে তোলা সম্ভব হয়নি শ্রীলংকার ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তা ফুটে উঠল প্রবলভাবে।

পরশু লংকানদের বিপক্ষে মিডল অর্ডারে প্রত্যাশিত পারফর্ম করতে পারেনি বাংলাদেশি ব্যাটাররা। উইকেটে গিয়ে সেট হতে সময় নিয়েছেন পরে দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করতেই আউট হয়েছেন। ডেথ ওভারগুলোতে দ্রুত রান তুলতে না পারার যে দুর্বলতা সেটা দেখা গেছে আরও প্রবলভাবে। যাতে দেড়শর নিচে আটকে যায় বাংলাদেশ। পরে অভিস্কা ফের্নান্দোর ঝড়ো ফিফটিতে চার উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় শ্রীলংকা।

আজ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেও ব্যাটিংটা পুড়িয়েছে বাংলাদেশকে। উইকেট ব্যাটিং সহায়কই ছিল। মোস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, নাসুম আহমেদদের তুলধুনো করে আইরিশ ব্যাটার গ্যারেথ ডেলানির মাত্র ৫০ বলে ৮৮ রানের ইনিংসটা দেখলেই তা পরিস্কার। ২০ উইকেটে ১৭৭ রান তুলেছিল আয়ারল্যান্ড। বাংলাদেশ পরে জাবব দিতে নেমে পুরো ব্যর্থ। ম্যাচ হারতে হয়েছে ৪৪ রানের বড় ব্যবধানে।

বিজ্ঞাপন

মাত্র ১৮ রানে লিটন দাস, নাইম শেখ ও মুশফিকুর রহিমের উইকেট হারানো বাংলাদেশের পক্ষে বলার মতো ব্যাটিং করতে পেরেছেন কেবল সৌম্য সরকার ও নুরুল হাসান সোহান। সৌম্য ৩০ বলে ৩৭ এবং সোহান ২৪ বলে ৩৮ রান করেছেন ঠিকই কিন্তু তারা কখনোই জয়ের সুযোগ তৈরি করতে পারেননি। আইরিশ বোলিংয়ের সামনেও অসহায় মনে হচ্ছিল বাংলাদেশকে!

চোটের কারণে মাহমুদউল্লাহ ও আইপিএল ব্যস্ততার কারণে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে পারেননি সাকিব আল হাসান। তবে এসব নিশ্চয় আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে হারের কারণ হতে পারে না। বিশ্বকাপের আগে এমন ব্যাটিং নিশ্চয় চিন্তার কারণ।

ভারতের আয়োজনে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এবারের বিশ্বকাপের সবকটি ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করবে দেশের জনপ্রিয় স্যাটেলাইট চ্যানেল জিটিভি। এছাড়াও বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম র‍্যাবিটহোলের ওয়েবসাইটে দেখা যাবে বিশ্বকাপের খেলা। অনলাইনে র‍্যাবিটহোলে খেলা দেখতে ব্রাউজ করুন https://www.rabbitholebd.com/

সারাবাংলা/এসএইচএস

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন