বিজ্ঞাপন

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার: ‘বীর’ ছবির শিল্প নির্দেশক নিয়ে বিতর্ক

October 18, 2021 | 3:01 pm

আহমেদ জামান শিমুল

কাজী হায়াৎ নির্মিত ছবি ‘বীর’। শাকিব খান ও মো: ইকবাল প্রযোজিত ছবিটির শিল্প নির্দেশক হিসেবে কাজ করেছিলেন দীপু বাউল। অথচ ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২০’-এর প্রস্তাবনায় প্রযোজক নাম জমা দিয়েছেন ফরিদ আহমেদের। এমনটাই দাবি করছেন দীপু বাউল। যদিও ছবির প্রযোজক এ ব্যাপারে দায় নিতে রাজি নন।

বিজ্ঞাপন

দীপু সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি বীর ছবির পুরো অংশের শিল্প নির্দেশক হিসেবে কাজ করেছি। ছবির যখন টিজার মুক্তি পেলো তখন দেখি শিল্প নির্দেশনার জায়গায় আমার নামের সঙ্গে ফরিদ আহমেদের নাম যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। তখন প্রযোজক মো. ইকবাল ভাই আমাকে বললেন তিনি মূল ছবিতে এটা ঠিক করে দিবেন। তিনি ছবির সম্পাদক তৌহিদ হোসেনকে এ নিয়ে বলবেন বলেও আমাকে জানান। তৌহিদ ভাইও আমাকে বলেছিলেন ঠিক করে দিবেন।’

ছবির টিজারে শিল্প নির্দেশক হিসেবে ফরিদ আহমেদ ও দীপু বাউলের নাম লেখা আছে।

তার দাবি এরপর তিনি আর এ বিষয়ে কোন খোঁজ নেননি। পরবর্তীতে কিছুদিন আগে পত্রিকা মারফত তিনি জানতে পারেন ‘বীর’ ছবিটি ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২০’ এর জন্য জমা পড়েছে। তখন তিনি প্রযোজক ইকবালকে জিজ্ঞসে করেন, তার কাছ থেকে কেউ কোনো কাগজপত্র নেয়নি কেনো? তখন প্রযোজকের পরামর্শে তিনি সেন্সর বোর্ডে কাগজপত্র জমা দিতে গিয়ে জানেন, ইতোমধ্যে ‘বীর’ ছবির শিল্প নির্দেশক হিসেবে ফরিদ আহমেদের নাম জমা দেওয়া হয়ে গেছে। যেটা আর পরিবর্তনের সুযোগ নেই।

বিজ্ঞাপন

দীপু বলেন, ফরিদ বীর ছবির ২টি দৃশ্য ও একটি গানের সেট ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেছেন, কোনভাবেই তা শিল্প নির্দেশনা নয়। এরপরও তার নাম ছবিতে আমার সঙ্গে গেছে, তাহলে পুরস্কারে শুধু একা তার নাম যাবে কেন?

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জন্য জমা দেওয়া 'বীর' ছবির আবেদনপত্রে শিল্প নির্দেশক হিসেবে শুধু ফরিদ আহমেদের নাম জমা দেওয়া হয়েছে। ছবিঃ সারাবাংলা

আপনি এ বিষয়ে কাকে দায়ী করবেন? এমন প্রশ্নে দীপু পরিচালক কাজী হায়াৎ ও প্রযোজক মো. ইকবালকে দায়ী করতে রাজি হননি। তবে তিনি বলেন, ‘আমার জানা মতে প্রযোজক অন্য আরেকজনকে দিয়ে কাগজপত্র জমা দিয়েছিল। উনি শুধু স্বাক্ষর করে দিয়েছেন। তখনই ফরিদই কারসাজিটা করেছে বলে আমি শুনেছি।’

বিজ্ঞাপন

তবে অভিযোগটি অস্বীকার করেছেন ফরিদ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জন্য আবেদন তো জমা দেয় প্রযোজক। এখানে কার নাম গেছে কার নাম যায়নি এটা তো আমি জানি না।’

প্রযোজক ইকবালও কিছু জানেন না বলে দাবি করলেন। তিনি বলেন, ‘আমার ডেঙ্গু ছিল। এখন করোনা পজেটিভ। গত এক মাস ধরে আমি বাসায়। আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না।’

পুরো ঘটনায় কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি ‘বীর’ ছবির পরিচালক কাজী হায়াৎ।

ইতোমধ্যে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২০ এর জুরি বোর্ড জমা পড়া সকল ছবি দেখে ফেলেছে বলে জানিয়েছেন জুরি বোর্ড সদস্য ও সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মো. জসীম উদ্দিন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, “প্রযোজক তার ছবিতে কোনো বিভাগে পুরস্কারের জন্য যার নাম প্রস্তাব করবেন তার বাইরে আমাদের অন্য কারো নাম বিবেচনার সুযোগ নেই। এখন ‘বীর’ ছবির যে ভুলের কথা বলছেন এটা নিয়ে জুরি বোর্ডের দায় নেই, কারণ এটা তো প্রযোজকের ভুল। এছাড়া এখন নতুন করে কারো নাম জমা দেওয়ারও সুযোগ নেই।”

'শাহেনশাহ্‌' ছবির শিল্প নির্দেশক মো. রহমত উল্লা বাসু।

অভিযোগ ‘শাহেনশাহ্‌’ ছবিটির বিরুদ্ধেও!

শামীম আহমেদ রনী পরিচালিত ‘শাহেনশাহ্‌’ ছবিতেও একই ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছেন শিল্প নির্দেশক মো. রহমত উল্লা বাসু। তার দাবি, তিনি একাই ছবিটির শিল্প নির্দেশনা দিয়েছেন, অন্য কেউ দেননি। কিন্তু জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২০ এ তার নামের সঙ্গে যৌথভাবে পুরস্কারের জন্য ফরিদ আহমেদের নাম জমা দেওয়া হয়েছে।

মো. রহমত উল্লা বাসু সারাবাংলাকে বলেন, ছবির টিজার এবং ট্রেলারে শিল্প নির্দেশক হিসেবে আমার নাম গেছে। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জুরি বোর্ডের কাছে জমা দেওয়া ছবির সেন্সর কপিতেও শিল্প নির্দেশক হিসেবে আমার নাম আর সেট নির্মাতা হিসেবে ফরিদ আহমেদের নাম গিয়েছে । আমার করা ডিজাইনে সেট নির্মাণ করে উনি কীভাবে শিল্প নির্দেশক হন? তাছাড়া ছবিতে ওনার নাম যখন দেওয়া হয়, তখন পরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তিনি আমাকে জানিয়েছেন, ফরিদ আহমেদ এডিটিং প্যানেলে গিয়ে অনুরোধ করে ওনার নাম বসিয়েছেন।

অবশ্য এ ব্যাপারে পরিচালক রনী সারাবাংলাকে বলেন, ‘বাসু ভাইয়ের অভিযোগ বা দাবি যেটায় বলেন তা সত্যি নয়। ওনারা দুজনেই আমাদের ছবিতে কাজ করেছেন। তাই পুরস্কারের ব্যাপারে তাদের দুজনের নামই আমরা জমা দিয়েছি।’

সারাবাংলা/এজেডএস

Tags: , , , , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন