বিজ্ঞাপন

সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে একাত্তরের মতো প্রতিহত করা হবে: হানিফ

October 18, 2021 | 11:55 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় জড়িত গোষ্ঠীকে একাত্তরের মতো প্রতিহত করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির আস্ফালন দেখার জন্য আমরা যুদ্ধ করিনি। এই বাংলাদেশ দেখার জন্য ৩০ লাখ শহিদ আত্মাহুতি দেননি। আমরা যুদ্ধ করেছি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার জন্য। যেসব মৌলবাদী, ধর্মান্ধ এখনো ধর্মের দোহাই দিয়ে একাত্তরের মতো সমাজে সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে, যারা এখনো ঘর-বাড়ি জ্বালাচ্ছে, তাদের  আমরা একাত্তরের মতো প্রতিহত করে অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ গড়ব।

সোমবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৫৮তম জন্মদিন ও শেখ রাসেল দিবস ২০২১ উপলক্ষে গৌরব’৭১ আয়োজিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

হানিফ বলেন, একাত্তরের পরাজিত শক্তি পাকিস্তান এবং তার মিত্ররা জাতির পিতাকে হত্যা করেছিল। একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ থেকে শেখ রাসেলও রেহাই পায়নি। ছোট্ট রাসেল মাত্র ৯ বছর বয়সে প্রাণ হারিয়েছেন। আজ জীবিত থাকলে ৫৮ বছর বয়স হতো তার। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতার কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল ১৯৭১ সালের ১৫ আগস্ট শহিদ হয়েছেন। জাতির জন্য দিনটি অত্যন্ত কলঙ্কময়।

বিজ্ঞাপন

আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, পঁচাত্তরে জাতির পিতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন করা হয়েছে। যে অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে এই স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু জাতিকে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন, সেই স্বপ্নকে ধূলিসাৎ করা হয়েছে। একাত্তরে যারা ধর্মের দোহাই দিয়ে হত্যা নির্যাতন করেছে, তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে পুনর্বাসন করা হয়েছে। আজ সেই বীজ থেকে গাছ, আর সেই গাছ লালন-পালন করায় বাংলার শেকড়ে চলে গেছে। আমাদের দুর্ভাগ্য, স্বাধীনতার ৫০ বছরে দাঁড়িয়ে আমরা যখন এই অনুষ্ঠান করছি, সেই সময়ে পুরো জাতি শোকাহত এবং মর্মাহত।

মাহবুবউল আলম হানিফ আরও বলেন, ধর্মের নামে যারা এসব কাজ করছে সেই যুদ্ধাপরাধী, মৌলবাদী গোষ্ঠী এখনো তৎপর। এই বাংলাদেশকে তাঁবেদার রাষ্ট্র, পাকিস্তানের ভাবধারায় তালেবানি রাষ্ট্র বানানোর জন্য গভীর চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে। তারা আমাদের সংস্কৃতি ধ্বংস করতে চায়, সার্বভৌমত্ব নষ্ট করতে চায়। তারা দেশের সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

শিশুদের নিয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করায় গৌরব’৭১-কে ধন্যবাদ জানান হানিফ। বিকেল ৩টায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে চলে ৪টা পর্যন্ত। চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার বিষয় ছিল ‘’ভোরের পাখি শেখ রাসেল’। তিন বিভাগে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। ‘ক’ বিভাগে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি, ‘খ’ বিভাগে ছিল চতুর্থ থেকে সপ্তম শ্রেণি ও ‘গ’ বিভাগে ছিল অষ্টম থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নেয়।

চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগের সহাকারী অধ্যাপক সীমা ইসলাম, চিত্রশিল্পী পাপলু আহমেদসহ দেশবরেণ্য শিল্পীরা।

অনুষ্ঠানের আয়োজক ও গৌরব’৭১-এর সাধারণ সম্পাদক এফ এম শাহীন বলেন, আজকের আয়োজনে শেখ রাসেলকে ভালোবাসে শিশুদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আমাদের মুগ্ধ করেছ। আমরা আশা করছি, এই শিশুরাই একদিন বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে কাজ করবে।

গৌরব’৭১-এর সভাপতি এস এম মনিরুল ইসলাম মনির সভাপতিত্বে এবং সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এফ এম শাহীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক উপ-সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মশিউর রহমান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় কিশোরগঞ্জের উপাচার্য অধ্যাপক ড. জেড এম পারভেজ সাজ্জাদ, আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট সানজিদা খানমসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।

বিজ্ঞাপন

এই আয়োজনে সহযোগী হিসেবে ছিল শেখ রাসেল ফাউন্ডেশন ইউএসএ। গৌরব’৭১ আয়োজিত এই শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার শেষে সাংস্কৃতিক পর্ব ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান করার কথা থাকলেও বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে তা সম্ভব হয়নি। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী বিজয়ীদের পুরস্কার শিগগিরই নির্দিষ্ট ঠিকানায় যোগাযোগ করে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান আয়োজকরা।

সারাবাংলা/ইএএইচটি/টিআর

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন