বিজ্ঞাপন

খুলে দেওয়া হলো নোবিপ্রবির হল, শিক্ষার্থীদের উচ্ছাস

November 1, 2021 | 9:30 am

নোবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট

নোয়াখালী: করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রকোপ হ্রাস পাওয়ায় দীর্ঘ দেড় বছর পর নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) আবাসিক হলসমূহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে খুলে দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

নোবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. দিদার-উল-আলমের উপস্থিতিতে গতকাল রোববার (৩১ অক্টোবর) বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মালেক উকিল হল ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়। এদিন থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম শুরু হয়।

শিক্ষার্থীদের হলে বরণ করে নিতে বিভিন্ন আয়োজন করেন হল কর্তৃপক্ষ। ফুল, বিশ্ববিদ্যালয়ের লগো সংবলিত মাক্স, কলম, চাবির রিং, মিষ্টি ইত্যাদি দিয়ে শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেওয়া হয়।

দীর্ঘদিন পর হলে ফিরে আব্দুল মালেক উকিল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ইমরান হোসাইন বলেন, ‘অনেকদিন পর হলে ফেরার অনুভূতি সত্যি অন্যরকম। কয়েকবার নোয়াখালী আসা হলেও ক্যাম্পাসে থাকার যে এক মধুর পরিবেশ তা পাইনি। চাই আবার প্রাণ ফিরে আসুক নোবিপ্রবিতে। আড্ডা, গান ও কলরবে মাতুক ১০১ একর।’

বিজ্ঞাপন

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের শিক্ষার্থী ইরিনা আজাদ বলেন, ‘দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর হলে ঢুকতে পেরে খুব ভালো লাগছে। অনেকের সঙ্গে দীর্ঘ দিন পর দেখা হলো। অনেকদিন পর ক্যাম্পাস তার প্রাণ ফিরে পাচ্ছে।’

এ বিষয়ে আব্দুল মালেক উকিল হলের প্রভোস্ট ড. মেহেদী হাসান রুবেল জানান, ‘দীর্ঘদিন পর শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে আমাদের শূন্যস্থান পূরণ হয়েছে এবং হল পরিপূর্ণ হয়ে আজ প্রাণ ফিরে পেয়েছে, আমরা খুবই আনন্দিত। শীতকাল সামনে রেখে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন খেলাধুলার ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছে। আনন্দের সঙ্গে হলে থাকতে পারবে শিক্ষার্থীরা।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি হলে উঠার পর কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আমাদের সচেতন শিক্ষার্থীরা যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি সব সময় মেনে চলবে।’

বিজ্ঞাপন

বঙ্গমাতা হলের প্রভোস্ট মো. শাহীন কাদির ভূঁইয়া বলেন, ‘নির্ধারিত নিয়মে শিক্ষার্থীরা এসে হলে উঠেছে। আবাসিক ছাত্রীরদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য সকল ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’

নোবিপ্রবি’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. দিদার-উল-আলম বলেন, করোনা সংক্রমণ কমে আসায় আজ (রোববার) নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল খুলে দেওয়া হলো, সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীরা আজ হলে প্রবেশ করবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই ডিসিপ্লিন মেনে শিক্ষার্থীদের চলাফেরা করতে হবে। এ সময় হল খোলার পরে শিক্ষার্থীদের কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

এদিকে রোববার থেকেই নোবিপ্রবি’র শিক্ষার্থীদের কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিনের ১ম ডোজ প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। উপাচার্য অধ্যাপক ড.মোহাম্মদ দিদার উল আলম ভ্যাকসিন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। আগামী ৯ নভেম্বর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের নতুন ভবনে সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।

নোবিপ্রবি’র শিক্ষার্থীদের করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে, ছবি: সারাবাংলা

নোবিপ্রবি’র শিক্ষার্থীদের করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে, ছবি: সারাবাংলা

সরেজমিনে দেখা যায়, ভ্যাকসিন কার্যক্রমের তত্ত্বাবধান করছেন নোবিপ্রবি মেডিকেল সেন্টার ও কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ কেন্দ্র। ভ্যাকসিন কার্যক্রম পরিচালনায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দায়িত্বপালন করে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বিএনসিসি এবং রোভার স্কাউটের সদস্যরা। যেসব শিক্ষার্থী ভ্যাকসিনের রেজিস্ট্রেশন করেছে এবং ভ্যাকসিনের কোনো ডোজ নেননি, তারা সহজেই ভ্যাকসিনের ১ম ডোজ নিতে পারছে। এক মাস পর তাদের ভ্যাকসিনের ২য় ডোজ দেওয়া হবে। এছাড়াও যারা রেজিস্ট্রেশন করেছে কিন্তু এসএমএস পায়নি এবং যাদের শুধুমাত্র জন্মনিবন্ধন কার্ড আছে, তাদের ভ্যাকসিনের প্রদানেও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পাশাপাশি ভ্যাকসিন নেওয়ার পর শারীরিক অসুস্থতা দেখা দিলে অবজারভেশনে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ভ্যাকসিন কার্যক্রম পরিচালনা কমিটি জানায়, ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ দেওয়ার একমাস পর ২য় ডোজ দেওয়া হবে। যারা ভ্যাকসিনের এসএমএস পায়নি। তাদের এসএমএস পাওয়ার লক্ষ্যে ভ্যাকসিন কেন্দ্রে স্বেচ্ছাসেবকদের অবহিত করে নিবন্ধন সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে হবে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

কমিটি আরও জানায়, যাদের শুধু জন্মনিবন্ধন আছে তাদের ভ্যাকসিন কেন্দ্রের স্বেচ্ছাসেবকদের নিকট প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। যারা ভ্যাকসিন কেন্দ্র হিসেবে নোয়াখালী সদর হাসপাতাল, জেলা পুলিশ হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিস সিলেক্ট করেছে তারাও ভ্যাকসিন নিতে পারবে।

এ সময় নোবিপ্রবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবদুল বাকী, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. ফারুক উদ্দিন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর, সহ-সভাপতি ড. মো. আনিসুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক জনাব মো. মাজনুর রহমান, আইআইএস এর পরিচালক অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মালেক উকিল হলের প্রভোস্ট ড. মো. মেহেদী হাসান রুবেলসহ ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এনএস

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন