বিজ্ঞাপন

মিতু হত্যা মামলা কোন পথে?

November 3, 2021 | 7:59 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে খুনের ঘটনায় সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলায় তদন্তকারী সংস্থার দাখিল করা চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেননি আদালত। এর ফলে মামলাটির পুনঃতদন্ত হবে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। তবে মামলাটির পুনঃতদন্তের জন্য কোনো সংস্থা নির্ধারণ করে দেননি আদালত।

বিজ্ঞাপন

এই আদেশের ফলে মিতু হত্যার ঘটনায় স্বামী বাবুল আক্তার ও বাবা মোশাররফ হোসেনের দায়ের করা পৃথক মামলার তদন্ত একইসঙ্গে চলবে বলে পুলিশের প্রসিকিউশন শাখার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

বুধবার (৩ নভেম্বর) চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ওপর বাবুল আক্তারের দাখিল করা নারাজি আবেদনের বিষয়ে এ আদেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মেহনাজ রহমান। তবে আদালত নারাজি আবেদনটিও নামঞ্জুর করেছেন।

গত ১৪ অক্টোবর বাবুল আক্তার আদালতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ওপর নারাজি দাখিল করেছিলেন। ২৭ অক্টোবর ওই আবেদনের ওপর শুনানি হয় বাবুল আক্তারের উপস্থিতিতে।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন-

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) কামরুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আদালত বাবুল আক্তারের নারাজি আবেদন নামঞ্জুর করেছেন। পিবিআই যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছিল, সেটিও আদালত গ্রহণ করেননি। ওই মামলার পুনঃতদন্ত হবে। পুনঃতদন্ত কারা করবে, সে বিষয়ে আদালত কোনো নির্দেশনা দেননি।’

বিজ্ঞাপন

বাবুল আক্তারের আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ না করায় নারাজি আবেদন খারিজ হয়ে গেছে। তবে আদালত যে আদেশ দিয়েছেন, আমরা তাতে সন্তুষ্ট। আমরা চেয়েছিলাম, সিআইডি অথবা অন্য কোনো সংস্থার মাধ্যমে পুনঃতদন্ত হোক। এই আদেশের ফলে পুনঃতদন্তের পথ সুগম হয়েছে।’

মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেনের দায়ের করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মহানগরের পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা সারাবাংলাকে বলেন, ‘আদালতের লিখিত আদেশ পাওয়ার আগে এ বিষয়ে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই। লিখিত আদেশ পেলে এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ হবে।’

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানার ও আর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাসার অদূরে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে খুন করা হয় বাবুলের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে।

স্ত্রী খুনের ঘটনায় পুলিশ সদর দফতরের তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন। গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদসহ নানা নাটকীয়তার পর ২০১৬ সালের আগস্টে বাবুল আক্তারকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। হত্যাকাণ্ডের পরের বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন প্রথম এই খুনে বাবুলের জড়িত থাকার সন্দেহ প্রকাশ করেন।

বিজ্ঞাপন

নগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাত ঘুরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলার তদন্তভার পড়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ওপর। এরপর আস্তে আস্তে জট খুলতে থাকে দেশজুড়ে তোলপাড় তৈরি করা চাঞ্চল্যকর এই মামলার।

চলতি বছরের ১১ মে বাবুল আক্তারকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। তদন্তে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের লক্ষ্যে ১২ মে ওই মামলার ৫৭৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয় পিবিআই।

আগের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদনে দাখিলের পর গত ১২ মে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারসহ আট জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার বাকি সাত আসামি হলেন— মো. কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা, এহতেশামুল হক প্রকাশ হানিফুল হক প্রকাশ ভোলাইয়া, মো. মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খাইরুল ইসলাম কালু, মো. সাইদুল ইসলাম সিকদার সাক্কু ও শাহজাহান মিয়া।

ওই দিনই (১২ মে) বাবুল আক্তারকে গ্রেফতার দেখানো হয়। এরপর রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্ত কর্মকর্তা। তবে আদালতে জবানবন্দি দেননি বাবুল আক্তার।

এর মধ্যে গত ২৩ অক্টোবর মামলার এক আসামি এহতেশামুল হক ভোলা আদালতে জবানবন্দি দিয়ে জানিয়েছেন, বিশ্বস্ত সোর্স কামরুল ইসলাম শিকদার মুছাকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে তাকে দিয়ে স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে খুন করান তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার।

সারাবাংলা/আরডি/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন