বিজ্ঞাপন

লাশের খাটিয়ায় পৃথিবী!

November 4, 2021 | 6:51 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দীর্ঘ দিন ধরেই বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফল ভোগ করছে বিশ্ব। কার্বন নিঃসরণও কমছেই না। জলবায়ু বিষয়ক বিভিন্ন ধরনের আন্তর্জাতিক ফোরামে এসব নিয়ে কথাও হলেও কোনো ফল মিলছে না। শিল্পায়ন আর উন্নয়নের মোহে আবিষ্ট পৃথিবীকেও তাই ভুগতে হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে। মানবসৃষ্ট এসব নানা কারণেই পরিবেশগত দিক থেকে পৃথিবী এখন সংকটাপন্ন। পরিবেশবাদীরা বলছেন, মানুষ যে পরিস্থিতি তৈরি করেছে তাতে পৃথবী এখন মৃতপ্রায়।

বিজ্ঞাপন

এমন ভাবনা থেকেই প্রতীকীভাবে মৃত এক পৃথিবীকে নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে পরিবেশবাদী কয়েকটি সংগঠন। পৃথিবীকে তারা রেখেছেন খাটিয়ায়। সেই খাটিয়ায় লেখা— ‘হে মানুষ, পথে নামো। পৃথিবী মহাসংকটে’।

বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এই প্রতিবাদ অনুষ্ঠিত হয়। স্টপ ইমিশনস নাও বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্লাইমেট নেটওয়ার্ক ও ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিয়িং ব্যতিক্রমী এই প্রতিবাদের আয়োজন করে।

ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিয়িংয়ের প্রজেক্ট ম্যানেজার বরণী বলেন, লাশের খাটে পৃথিবীকে রেখে আমরা বুঝাতে চাচ্ছি— পৃথিবীর মানুষ লাশ হয়ে বিদায় নিচ্ছে, পৃথিবীকে বিলুপ্ত করে। পৃথিবী এখন মহাসংকটে। বিশ্বের নজরে আনতে চেয়েছি— উন্নত বিশ্বের কারণে আমরা সমস্যায় আছি। উন্নত দেশগুলোর কার্বন নিঃসরণের কারণে আমাদের মতো দেশগুলো পরিবেশ বিপর্যয়ের মহাসংকটে পড়েছে। পৃথিবীকে রক্ষায় উন্নত দেশগুলোকে এখনই এগিয়ে আসতে হবে।

বিজ্ঞাপন

ব্যতিক্রমী প্রতিবাদে অংশ নেওয়া সংগঠনগুলো জানায়, পৃথিবী এখন মহাসংকটে। কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার এখনই সময়। প্রিয়জনের শোক সংবাদে আমরা ব্যথিত হই। তার শূন্যতা আমরা অনুভব করি। কিন্তু যে ধরণী আমাদের প্রতিনিয়ত আলো-বাতাস, পানি-খাদ্যের জোগান ও আশ্রয় দিয়ে বাঁচিয়ে রাখছে, এমন আপনজনকে আমরা প্রতিদিনের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছি। জলবায়ু বিপর্যয়ের কঠিন বাস্তবতা অনুধাবন করতে গবেষণা কিংবা বড় কোনো সম্মেলনের প্রয়োজন হয় না।

সংগঠনগুলো বলছে, বিগত বছরে বিশ্বজুড়ে বন্যা, খরা ও দাবানলের মতো একের পর এক বিপর্যয় আমাদের বলে দেয় পৃথিবী কতটা মহাসংকটে রয়েছে। মাত্রাতিরিক্ত জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করে আমরা নিজেরাই নিজেদের চূড়ান্ত বিলুপ্তির দিকে নিয়ে যাচ্ছি। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাওয়া, সুপেয় পানির সংকট, খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় হুমকির মধ্যে পরছে প্রাণ-প্রকৃতি।

বিজ্ঞাপন

তারা বলেন, পরিবেশকে কেন্দ্র করে উন্নয়ন হবে। উন্নয়নকে কেন্দ্র করে পরিবেশকে সাজানো যাবে না। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে হবে।

সংগঠনগুলো আরও বলছে, বিশ্বনেতাদের কণ্ঠে পরিবেশ বাঁচানোর আকুতি ও সতর্কবার্তাই যথেষ্ট নয়। আর সময় নেই, সর্বনাশের পথে পৃথিবী! বিশ্বনেতাদের জলবায়ু বিপর্যয়জনিত জরুরি অবস্থা বা ক্লাইমেট ইমারজেন্সি ঘোষণা করে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি পাহাড়, টিলা, বনাঞ্চল, বন্যপ্রাণী ও নদী রক্ষা ও সংরক্ষণসহ প্লাস্টিক দূষণ ও বায়ুদূষণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এখনই যদি কার্বন নিঃসরণ কমানোর কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, যদি আমরা ব্যর্থ হই, তবে আগামী প্রজন্ম আমাদের কোনোদিন ক্ষমা করবে না।

সারাবাংলা/ইএইচটি/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন