বিজ্ঞাপন

নতুন শিক্ষাক্রমে বাদ যাচ্ছে জেএসসি পরীক্ষা

November 14, 2021 | 2:01 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: নতুন শিক্ষাক্রম চালু হলে জেএসসি পরীক্ষা থাকবে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, ‘নতুন শিক্ষাক্রমে জেএসসি পরীক্ষা রাখা হবে না। তবে অবশ্যই মূল্যায়নের ব্যবস্থা রাখা হবে।’

বিজ্ঞাপন

রোববার (১৪ নভেম্বর) মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে শিক্ষামন্ত্রী এই কথা বলেন।

দীপু মনি বলেন, জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা আগামী বছর হবে কিনা সে বিষয়ে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে শিক্ষাক্রম পরিবর্তন হলে জেএসসি-জেডিসি থাকবে না। বিকল্প পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে।

এর আগে ২৮ সেপ্টেম্বর তিনি জানিয়েছিলেন, এসএসসি-এইচএসসি নেওয়া হলেও, এ বছরের জেএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে না। সে সময় এই পরীক্ষাটির ‘প্রয়োজন নেই’ বলে মত দিয়েছিলেন অনেক শিক্ষাবিদ। মন্ত্রণালয় এবং বোর্ডের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাও একই কথা বলেছিলেন। শিক্ষামন্ত্রীর আজকের মন্তব্যে এই পরীক্ষা নিয়ে কর্তৃপক্ষের অনীহার বিষয়টি আরও পরিস্কার হলো।

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, প্রতিবছর জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা থাকে প্রায় ২৫ লাখ। আর এই পরীক্ষা দুটোও আয়োজন করে থাকে বোর্ড। পরপর দুই বছর করোনা মহামারির কারণে এই পরীক্ষাটির আয়োজন বন্ধ ছিল। যেটি এখন পুরোপুরিভাবেই বাতিল হয়ে যাচ্ছে।

এর আগে, ২০১০ সালে এই পরীক্ষাটি প্রথমবারের মতো চালু করে সরকার। সেবার ১৫ লাখ শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল এই পরীক্ষায়।

পরের বছর পরীক্ষা মে-জুনে: মন্ত্রী বলেন, ‘এ বছর করোনার কারণে এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা বিলম্বে হয়েছে। আগামী বছর এত বিলম্ব হবে না। মে-জুনের মধ্যেই এসএসসি পরীক্ষার আয়োজন হবে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘সাধারণত প্রত্যেক বছর ফেব্রুয়ারি মাসে এসএসসি পরীক্ষা হয়। তবে আগামী বছর আমাদের ফেব্রুয়ারি মাসেই এসএসসি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে না। কারণ শিক্ষার্থীদের সিলেবাস সম্পন্ন করার একটি বিষয় আছে।’

এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক সৈয়দ গোলাম ফারুক প্রমুখ, ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

২১ মাস পর পাবলিক পরীক্ষা: সারাদেশে একযোগ শুরু হয় এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা। এ পরীক্ষার মধ্যদিয়ে ২১ মাস পর দেশে কোনো পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর আগে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সর্বশেষ এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সর্বশেষ এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে এ পরীক্ষা শুরু হয়ে থাকলেও বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ এর কারণে প্রায় দেড় বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এবার যথাসময়ে পরীক্ষা গ্রহণ সম্ভব হয়নি। বর্তমানে আক্রান্তের হার সহনীয় মাত্রায় উন্নীত হওয়ায় পুর্নবিন্যাসকৃত সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

পরীক্ষায় ২২ লাখ শিক্ষার্থী: চলতি বছরে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১৩ জন পরীক্ষার্থী। মোট ৩ হাজার ৬৭৯টি কেন্দ্রে এবারের এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। মোট ২৯ হাজার ৩৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। সারাদেশে ৯টি সাধারণ বোর্ড, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি/দাখিল/এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় ১৮ লাখ ৯৯৮ জন পরীক্ষার্থী এবারের পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।

অন্যদিকে, ৭১০টি পরীক্ষা কেন্দ্রে মোট ৩ লাখ এক হাজার ৮৮৭ জন শিক্ষার্থী দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। ৭৬০টি পরীক্ষা কেন্দ্রে ভোকেশনাল পরীক্ষা দিচ্ছে এক লাখ ২৪ হাজার ২২৮ জন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অভিভাবক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

চলতি বছরে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের গ্রুপ ভিত্তিক বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বিজ্ঞান বিভাগে-ঢাকা বোর্ডে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৪৩১ জন, রাজশাহী বোর্ডে ৮১ হাজার ২২৪ জন, কুমিল্লা বোর্ডে ৫৪ হাজার ৫৮৩ জন, যশোর বোর্ডে ৩৭ হাজার ৬০১ জন, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৩১ হাজার ৫৭ জন, বরিশাল বোর্ডে ২৫ হাজার ১১২ জন, সিলেট বোর্ডে ২১ হাজার ৬২৩ জন, দিনাজপুর বোর্ডে ৭৯ হাজার ৩৬৫ জন ও ময়মনসিংহ বোর্ডে ৪১ হাজার ৮৩৫ জন।

মানবিক বিভাগে-ঢাকা বোর্ডে ২ লাখ ৯৫৭ জন, রাজশাহী বোর্ডে ১ লাখ ১৪ হাজার ৭২৫ জন, কুমিল্লা বোর্ডে ৮৯ হাজার ৩৬১ জন, যশোর বোর্ডে ১ লাখ ১৭ হাজার ১০৯ জন, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৬৫ হাজার ১৫৭ জন, বরিশাল বোর্ডে ৫৯ হাজার ৬৫৬ জন, সিলেট বোর্ডে ৮৯ হাজার ৯৩৩ জন, দিনাজপুর বোর্ডে ১ লাখ ৯ হাজার ৭০৬ জন ও ময়মনসিংহ বোর্ডে ৭৭ হাজার ৪৮১ জন।

ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে-ঢাকা বোর্ডে ১ লাখ ৪০ হাজার ৭১২ জন, রাজশাহী বোর্ডে, ১১ হাজার ৬১৯ জন, কুমিল্লা বোর্ডে ৮০ হাজার ৯৩০ জন, যশোর বোর্ডে ২৬ হাজার ৫৭২ জন, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৬৪ হাজার ৭১১ জন, বরিশাল বোর্ডে ২০ হাজার ২২২ জন, সিলেট বোর্ডে ৯ হাজার ৫৫৫ জন, দিনাজপুর বোর্ডে ৪ হাজার ৩৭৫ ও ময়মনসিংহ বোর্ডে ১১ হাজার ৩৮৬ জন।

বিজ্ঞান বিভাগে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৫ লাখ ৬ হাজার ৮৩১ জন, মানবিকে ৯ লাখ ২৪ হাজার ৮৫ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৩ লাখ ৭০ হাজার ৮২ জন।

সারাবাংলা/টিএস/একে

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন