বিজ্ঞাপন

সব প্রাণহানি নির্বাচনের কারণে কি না— অনুসন্ধান করতে বললেন সিইসি

November 15, 2021 | 5:49 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সারাদেশে চলমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের সময় যেসব সহিংসতা ও প্রাণহানি ঘটেছে, তার সবগুলোই নির্বাচনের কারণে কি না, সে বিষয়টি অনুসন্ধানের দাবি রাখে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী সারাদেশে নির্বাচনি সহিংসতায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। তবে এসব প্রাণহানির ঘটনার সবগুলো নির্বাচনি সংঘর্ষের কারণে হয়েছে কি না, তা অনুসন্ধানের দাবি রাখে। এর মধ্যে মাত্র কয়েকটি ঘটনা ভোটকেন্দ্রে বা ভোটের দিন ঘটেছে। কোনো ঘটনা নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার আগেই ঘটেছে। আবার কোনোটি রাতের আঁধারে ঘটেছে। এসব হত্যার মোটিভ কী, তা তদন্তের বিষয়।

সোমবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন কমিশন ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সিইসি এসব কথা বলেন। এসময় নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদত হোসেন চৌধুরী, ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবির খন্দকার এবং ইসির যুগ্মসচিব এস এম আসাদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে সিইসি বলেন, ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে কয়েকটি স্থানে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। তার কোনোটিই প্রত্যাশিত ও কাম্য নয়। গণমাধ্যমগুলো এসব ঘটনার ওপর বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা গেছে, এর পেছনে ছিল নির্বাচনকে সামনে রেখে আধিপত্য বিস্তার, বংশীয় প্রভাব, ব্যক্তিগত শত্রুতা, রাজনৈতিক কোন্দল ইত্যাদি। ফলে এসব সহিংসতা ও প্রাণহানির কারণ অনুসন্ধানের দাবি রাখে।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন-

কে এম নূরুল হুদা আরও বলেন, এবারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময়ে নরসিংদী জেলার রায়পুরের একটি দুর্গম চর এলাকায় হতাহতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। গত ১০ বছরে আধিপত্য বিস্তারের নামে নরসিংদীর চরাঞ্চলগুলোতে দুই শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েক হজার।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, নরসিংদীতে এ ধরনের প্রথম ঘটনাটি ঘটে ৪ নভেম্বর, নির্বাচনের পাঁচ দিন আগে। দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে নির্বাচনের দিন ভোরে, নির্বাচন শুরু হওয়ার আগে। সম্প্রতি মাগুরার যে হতাহত হয়েছে, তা নির্বাচনি প্রতীক বরাদ্দের আগে ঘটেছে, যা ছিল নিতান্তই এলাকার প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে। একইভাবে মেহেরপুরের গাংনীর ঘটনার পেছনে বংশগত আধিপত্য বিস্তারই মূল কারণ বলে গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। মেহেরপুরের ঘটনা ঘটেছে নির্বাচনের দিন ভোরে। সংঘর্ষ চলাকালে উশৃঙ্খল লোকজনকে দেশি অস্ত্রসহ মহড়া দিতে দেখা গেছে। তাদের চিহ্নিত করে বিচারের সম্মুখীন করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

ইউপি নির্বাচন পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন সিইসি

সিইসি কে এম নূরুল হুদা আরও বলেন, এরই মধ্যে দুই ধাপের নির্বাচন শেষ হয়েছে। আরও দুই ধাপের নির্বাচনি কার্যক্রম চলছে। এরপর একাধিক ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সবগুলো নির্বাচন সঠিকভাবে শেষ করার জন্য মাঠ পর্যায়ের নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ সুযোগে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী সব প্রার্থী তাদের সমর্থক, সামাজিক নেতা এবং সর্বোপরি সব রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি অনুরোধ থাকবে তারা যেন সবাই নির্বাচনি আরণবিধি মেনে চলেন, সহনশীল আচরণ করেন এবং নির্বাচনি দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তিদের সহযোগিতা করুন।

এরই মধ্যে দুই ধাপের ইউপি নির্বাচন শেষ হয়েছে। আরও দুই ধাপের ইউপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা আছে। ৫ম ধাপের তফসিলও প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন সিইসি। তিনি বলেন, গত ২১ জুন ও ২০ সেপ্টেম্বর প্রথম ধাপে ৩৬৯টি এবং ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপে ৮৩৩টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তৃতীয় ধাপে ২৮ নভেম্বর ১০০৭টি এবং চতুর্থ ধাপে ২৩ ডিসেম্বর ৮৪০টি ইউপিতে ভোট নেওয়া হবে। এছাড়া পঞ্চম ধাপে আরও প্রায় এক হাজার ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে শিগগিরই। এ বছরের মধ্যেই মেয়াদোত্তীর্ণ সব ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠান করার পরিকল্পনা রয়েছে।

নির্বাচন শান্তিপূর্ণ রাখতে নির্বাচন কমিশন সর্বোচ্চ সচেষ্ট জানিয়ে সিইসি কে এম নূরুল হুদা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনাসহ আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের জন্য যথাযথ প্রস্তুতি নেয়। প্রশিক্ষণ, নির্বাচনি মালামাল বিতরণ, ভোটগ্রহণ, ভোটগণনা, ফলাফল প্রকাশ ইত্যাদি প্রতিটি ক্ষেত্রেই সুচারুরূপে নির্বাচনি কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। প্রতি ধাপেই ভোট নেওয়ার দিন, এর আগে ও পরে ভোটকেন্দ্র এবং নির্বাচনি এলাকায় যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জিএস/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন