বিজ্ঞাপন

খালেদা জিয়ার অবস্থা ক্রিটিক্যাল বললেন মির্জা ফখরুল

November 23, 2021 | 11:30 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অবস্থা ‘স্টিল ক্রিটিক্যাল’ বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘ম্যাডাম অত্যন্ত গুরুতরভাবে অসুস্থ। অর্থাৎ জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। উনার অবস্থা এখনো স্টিল ক্রিটিক্যাল। এটা ঠিক বলা যাবে না যে উনি বিপদের বাইরে। স্টিল ইটস ভেরি ডিফিকাল্ট।’

মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি এই মন্তব্য করেন।

খালেদা জিয়ার জন্য দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসা নেওয়াটা জরুরি উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মোদ্দা কথা হচ্ছে, তাকে অতি দ্রুত, সময় নষ্ট না করে বিদেশে অ্যাডভান্সড সেন্টারে পাঠানো অত্যন্ত জরুরি। সরকারের কাছে আমি আবেদন জানিয়েছিলাম যে রাজনৈতিক চিন্তাভাবনাকে প্রাধান্য না দিয়ে জীবনকে, বিশেষ করে বেগম খালেদা জিয়ার জীবনকে প্রাধান্য দিতে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দেশনেত্রীর জীবন অনেক বেশি মূল্যবান। সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্রের জন্য, দেশের উন্নয়নের জন্য, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের জন্য, একটি স্থিতিশীল অবস্থা তৈরির জন্য তাকে বিদেশে পাঠিয়ে চিকিৎসা করে সুস্থ করে নিয়ে আসা অত্যন্ত জরুরি বলে আমরা মনে করি।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসক প্রতিদিন বোর্ড মিটিং করেন। তারা আপ্রাণ চেষ্টা করছেন এবং তারা এক ঘণ্টা, দুই ঘণ্টা, আড়াই ঘণ্টা বৈঠক করেন। এক সময় তারা ম্যাডামকে দেখতে আসেন। প্রতিদিনের যে রিপোর্টগুলো, সেগুলো প্রতিদিনই অ্যানালাইসিস করেন এবং সেভাবে চিকিৎসা দিচ্ছেন।’

‘আমার সঙ্গে তার (খালেদা জিয়া) দুয়েকবার দেখা হয়েছে। শি ইজ অ্যাট আ হাই স্পিড। তার মনোবল যথেষ্ট শক্ত আছে এবং তিনি সাহস করেন যে…। রোগীর মনোবল কিন্তু বড় জিনিস, যেকোনো অসুস্থতা থেকে রোগীর সুস্থ হওয়ার জন্য এটি অত্যন্ত জরুরি। সেই মনোবলটা তার আছে,’— বলেন মির্জা ফখরুল।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘চিকিৎসকরা জোর দিয়ে বলছেন যে এখানে তার চিকিৎসা সম্ভব নয়। এখন যে জটিল অবস্থা আছে, সেই জটিল অবস্থার চিকিৎসা করতে হলে তাকে অবশ্যই একটি অ্যাডভান্সড সেন্টারে পাঠাতে হবে। সুনির্দিষ্টভাবে তারা দেশের নামও বলেছেন— যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য অথবা জার্মানি। আমাদের তরফ থেকে, পরিবারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হচ্ছে সবার সঙ্গে। তার চিকিৎসার ব্যাপারে বিদেশি চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। সেদিক থেকে কোনো ত্রুটি নেই কোথাও।’

খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে রাষ্ট্রপতি অথবা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের কোনো চিন্তাভাবনা আছে কি না— প্রশ্ন করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যখন আমাদের নেত্রী কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন, তখন পরপর দুইবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে গিয়ে চিঠি দিয়েছিলাম এবং তাকে হাসপাতালে পাঠানোর কথা বলেছিলাম। আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিটি প্রোগ্রামের মাধ্যমে আমাদের কথাগুলো বলছি। এখন সরকারের বিভিন্ন পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এই মুহূর্তে আমরা রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিনি।’

কুমিল্লার ঘটনাকে অশনি সংকেত আখ্যা দিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘গতকাল (সোমবার) কুমিল্লাতে কমিশনারকে তার কার্যালয়ে ঢুকে মুখোশ পরে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করেছে। এগুলো আমাদের কাছে খুব অশনি সংকেত মনে হয়। মানুষ যদি কোথাও রিলিফ না পায়, প্রতিকার না পায়, আস্থা চলে যায় রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর থেকে, তখনই এই ধরনের ঘটনাগুলো ঘটতে থাকে। যেটা নিঃসন্দেহে অশনি সংকেত।’

সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রসঙ্গও উঠে আসে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘নির্বাচন যেটা হচ্ছে, এটাকে কোনোভাবেই নির্বাচন বলা যাবে না। এই নির্বাচনে কোনো বিরোধী দল নেই। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় মনোনয় আমরা সমর্থন করিনি। আমরা বলে এসছি, এটি সঠিক হচ্ছে না। তারপরও আমরা দুয়েকটি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। কিন্তু এবার আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমরা দলীয়ভাবে অংশ নেব না। এবার এটা প্রমাণ হয়েছে, এই নির্বাচন কোনো নির্বাচনই হচ্ছে না।’

বিজ্ঞাপন

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া না নেওয়ার ব্যাপারে দলের অবস্থান স্পষ্ট করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের অবস্থান স্পষ্ট— বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো জাতীয় নির্বাচনে আমরা যাব না। একটি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের ব্যবস্থা না করলে সেই নির্বাচন অর্থহীন।’

সারাবাংলা/এজেড/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন