বিজ্ঞাপন

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত: এভারকেয়ার

November 24, 2021 | 3:39 am

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি বলে জানিয়েছে এভারকেয়ার হাসপাতাল। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি বা মৃত্যু সংক্রান্ত যেসব তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা বিভিন্নভাবে ছড়িয়েছে, তার ভিত্তি নেই বলেও জানানো হয়েছে হাসপাতালের পক্ষ থেকে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে এভারকেয়ার হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করে এ তথ্য জানা গেছে। তবে এর আগেই এদিন রাতে গণমাধ্যমকর্মীদের বিএনপি মহাসচিব জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার অবস্থা এখনো ‘ক্রিটিক্যাল’।

হাসপাতালের কর্তব্যরত কর্মকর্তা মাসুম রাত ৩টার দিকে সারাবাংলাকে বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের অবস্থা জানার জন্য অনেকেই হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য দেওয়া ডেস্কের নম্বরে ফোন দিচ্ছেন। আমরা সবাইকে জানিয়েছি, তার বিষয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। তার অবস্থা বিকেলে যেমন ছিল, এখনো তাই আছে।

আরও পড়ুন-

বিজ্ঞাপন

এর আগে, মঙ্গলবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি বলেন, ‘ম্যাডাম অত্যন্ত গুরুতরভাবে অসুস্থ। অর্থাৎ জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। উনার অবস্থা স্টিল ক্রিটিক্যাল। এটা ঠিক বলা যাবে না যে উনি বিপদের বাইরে। স্টিল ইটস ভেরি ডিফিকাল্ট।’

এদিকে, এভারকেয়ার হাসপাতালের অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, খালেদা জিয়ার অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের হিস্ট্রি রয়েছে। তার রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা এবং রক্তচাপও কমে গিয়েছিল। এ কারণে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। তবে প্রথমে তার শরীরে রক্ত যাচ্ছিল না। তাৎক্ষণিকভাবেই হয়তো তখন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি বা মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছে সূত্রটি। পরবর্তী সময়ে স্বাভাবিকভাবেই খালেদা জিয়াকে রক্ত দেওয়া গেছে বলেও ওই সূত্র জানিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

খালেদা জিয়া বহু বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, দাঁত ও চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। এর মধ্যে গত এপ্রিল মাসে তিনি করোনায় আক্রান্ত হন। বাসায় চিকিৎসা নিয়ে করোনা থেকে সেরে উঠলেও শারীরিক জটিলতা দেখা দেওয়ায় ২৭ এপ্রিল তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একপর্যায়ে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে তাকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেওয়া হয়। প্রায় দুই মাস তিনি সিসিইউতে ছিলেন। ১৯ জুন তিনি বাসায় ফেরেন।

এরপর গত ১২ অক্টোবর নিয়মিত চেকআপ’র জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে যান খালেদা জিয়া। তখন চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানকার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ড তার সব কিছু পর্যালোচনা করেন। এরপর ২৫ অক্টোবর বায়োপসির জন্য খালেদা জিয়ার একটি অস্ত্রোপচার করা হয়। এভারকেয়ার হাসপাতালে ২৬ দিন চিকিৎসা শেষে গত ৭ নভেম্বর গুলশানের বাসায় ফেরেন খালেদা জিয়া।

এর ছয় দিন পর গত ১৩ নভেম্বর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ফের তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ড তাকে দেখার পর হাসপাতালে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেয়। প্রথমে কেবিনে রাখা হলেও পরদিন ১৪ নভেম্বর দুপুরের পর তাকে সিসিইউতে নেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত হাসপাতালেই আছেন তিনি।

এর মধ্যে চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে বিএনপি নেতারা বলছেন, বর্তমানে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা দেশে সম্ভব না। তাকে বিদেশে নিতে হবে। মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গ মতবিনিময়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও একই কথার পুনরাবৃত্তি করেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘চিকিৎসকরা জোর দিয়ে বলছেন যে এখানে তার চিকিৎসা সম্ভব নয়। এখন যে জটিল অবস্থা আছে, সেই জটিল অবস্থার চিকিৎসা করতে হলে তাকে অবশ্যই একটি অ্যাডভান্সড সেন্টারে পাঠাতে হবে। সুনির্দিষ্টভাবে তারা দেশের নামও বলেছেন— যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য অথবা জার্মানি। আমাদের তরফ থেকে, পরিবারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হচ্ছে সবার সঙ্গে। তার চিকিৎসার ব্যাপারে বিদেশি চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। সেদিক থেকে কোনো ত্রুটি নেই কোথাও।’

এর মধ্যে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শনিবার (২০ নভেম্বর) দেশব্যাপী গণঅনশন কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে রোববার (২১ নভেম্বর) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের পাঁচ শরিক দল। সোমবার (২২ নভেম্বর) রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশেও সমাবেশ করে বিএনপি। একই দাবিতে মঙ্গলবার আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হককে স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়াতাবাদী আইনজীবী ফোরাম। সেটি পর্যালোচনার আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী।

সারাবাংলা/এসবি/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন