ইউরোপের মতো উন্নয়ন চাই না: তথ্যমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ইউরোপের অন্ধ অনুকরণে এমন বস্তুগত উন্নয়ন চাই না, যেখানে দুর্ঘটনা ঘটলে শত শত গাড়ি পাশ দিয়ে চলে যায় কেউ খবর রাখে না। তেমন উন্নয়ন চাই না, যেখানে বাবা-মা বৃদ্ধ হলে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ে হবে আবার ৫০ শতাংশ বিয়ে ভেঙ্গে যাবে, সেই উন্নয়ন চাই না।

বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে জাতীয় সংসদে বিশেষ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অদম্য গতিতে এগিয়ে চলছে উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী সংকটে-সংগ্রামে দেশকে কীভাবে এগিয়ে নিতে হয় সেই উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। তিনি সমস্ত প্রতিকূলতাকে পেছনে ফেলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরনের পথে এগিয়ে যাচ্ছেন। পৃথিবীর সামনে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করতে পেরেছেন। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো এই বিষয়টি এখন অকপটে স্বীকার করছে।

তিনি বলেন, পাকিস্তানের স্বাধীনতার পরপরই বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার কথা চিন্তা করেছিলেন। তিনি জানতেন কখন কোন বিষয়টি জনগণের সামনে আনতে হবে। বঙ্গবন্ধু কেবল বাংলাদেশ রচনাই করেননি- বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে রূপান্তরের জন্য কাজ করেছিলেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠন করে যখন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন ঠিক তখনই তাকে হত্যা করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করা হয় তখন দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিলো ৯ দশমিক ৫৯ শতাংশ। আজ পর্যন্ত এই জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা না হলে আর সেইভাবে প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে স্বাধীনতার ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ হতো ‍উন্নত রাষ্ট্র।

মন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার আগে পূর্ব পাকিস্তানের (বাংলাদেশ) মানুষের মাথাপিছু আয় পশ্চিম পাকিস্তানের প্রায় অর্ধেক ছিল। বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে যায়। ওই সময় পাকিস্তানের মাথাপিছু আয় ছিলো ১০০ ডলার এবং বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিলো ১২০ ডলার। মাথাপিছু আয়, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, মানব উন্নয়নসহসহ সমস্ত সূচকে আজকে বাংলাদেশ পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে দিয়েছে। এটাই বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ রচনার স্বার্থকতা। আজকে পাকিস্তান আমাদের দিকে তাকিয়ে হা-হুতাশ করে। পাকিস্তানের আলোচনার ঝড় ‍ওঠে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, কেবল উন্নত রাষ্ট্র নয় ২০৪১ সালের মধ্যে এমন একটি রাষ্ট্র রচনা করতে চাই। যে রাষ্ট্র হবে মানবিকতা ও সামাজিক উন্নয়নের উদাহরণ। যে রাস্ট্রের বস্তুগত উন্নয়নের পাশাপাশি মানবিকতার উন্নয়ন হবে।

তিনি বলেন, মেধা, মূল্যবোধ, মমত্ববোধ সমৃদ্ধ নতুন একটি প্রজন্ম সৃষ্টি করতে চাই যারা ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে এমন একটা রাষ্ট্রে রূপান্তর করবে যেই রাষ্ট্র পৃথিবীর সামনে উন্নয়ন ও মানবিকতায় উদাহরণ সৃষ্টি করবে। পৃথিবীকে পথ দেখাবে। তখন মেঘের ওপার থেকে, আকাশের ওপর থেকে বঙ্গবন্ধু দেখবেন বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থে উন্নত সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে রূপান্তর হয়েছে।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/একেএম