বিজ্ঞাপন

বস্তুনিষ্ঠ সারাবাংলা থাকুক পাঠকের হৃদয় জুড়ে

December 6, 2021 | 12:15 pm

এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া

৬ ডিসেম্বর ২০২১— ৪র্থ বছর পূর্তি করে ৫ বছরে পর্দাপন করবে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সারাবাংলা। জন্মলগ্ন থেকেই আমি একজন পাঠক। সাধারণ মানের একজন লেখক হিসেবে অনেক লেখাই প্রকাশ করেছে সারাবাংলা। আর একটি রাজনৈতিক দলের দায়িত্বে থাকার কারণে সারাবাংলার অনেকের সঙ্গে সম্পর্ক আমার।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলার ৫ম বর্ষে পর্দাপনে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। সারাবাংলা কর্তৃপক্ষ, সাংবাদিক, কর্মকর্তা-কর্মচারী সকলের জন্যই রইলো লাল গোলাপ শুভেচ্ছা।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রত্যাশা করি রাষ্ট্র ও সমাজের কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে সারাবাংলা। সেই সঙ্গে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদের মাধ্যমে দেশের মানুষের হৃদয়ে নিজেদের অবস্থান আরো সুদৃঢ় করবে।

বর্তমানে অনলাইনের ভিড়ে সারাবাংলা নিজস্ব যোগ্যতায় নিজেদের অবস্থান করে নিয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। প্রযুক্তির আলো ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র। দেশজুড়ে বিস্তৃতি লাভ করেছে দ্রুতগতির ইন্টারনেট। আজকের সংবাদ জানতে আগামীকালের সংবাদপত্রের জন্য এখন আর অপেক্ষা করতে চায় না কেউ। যখনই ঘটনা তখনই সংবাদ পেতে চায় দেশের মানুষ। তাই মানুষের চাহিদা মেটাতে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে অনলাইন নিউজ পোর্টাল।

বিজ্ঞাপন

অনলাইনে সংবাদ পাঠকের কাছে পৌছে দিতে চলমান প্রতিযোগিতায় যুক্ত হয়েছে অনেক প্রিন্ট সংবাদমাধ্যমও। ইলেকট্রনিক মাধ্যমেরও রয়েছে অনলাইন ভার্সন। অনলাইন সংবাদপত্রগুলো এখন তাৎক্ষণিক ঘটনার সংবাদ পরিবেশনের পাশাপাশি জাতীয়, রাজনীতি, অর্থনীতি-ব্যবসা, খেলাধুলা, মুক্তমত, শেয়ারবাজার, বিনোদন, লাইফস্টাইল, আইন, ধর্ম, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সাহিত্য, শিশুসাহিত্য, ফিচার, ধর্ম-দর্শন, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, মতামতসহ বিশেষ প্রতিবেদন ও সাক্ষাৎকার প্রকাশ করছে।

অবশ্য অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলোর অনেকের মাঝেই সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে রয়েছে অনাকাঙ্ক্ষিত আর অশুভ প্রতিযোগিতা। যা অনেক ক্ষেত্রে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। এতে একদিকে পোর্টালের সৃজনশীলতা যেমন প্রকাশ পায় তেমনি অনেক ক্ষেত্রেই ফুটে ওঠে অনৈতিক সাংবাদিকতার চর্চাও। দ্রুত সংবাদ প্রকাশের ইঁদুর দৌড়ে জড়িয়ে প্রতিনিয়ত নিউজ পোর্টালগুলোতে ভুল উদ্ধৃতি বা তথ্য বিকৃতিও ঘটছে।

বর্তমানে দেশের অনলাইন নিউজ পোর্টালের পাঠক সংখ্যার অকিাংশই তরুণ-তরুণী। এই তরুণ-তরুণীদের নানাভাবে প্রভাবিত করছে নিউজ পোর্টালগুলো। এর মধ্যে রয়েছে নেতিবাচক প্রভাবও। সেই অশুভ প্রভাব থেকে মুক্ত থাকতে সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য অশ্লীলতামুক্ত নিউজ পরিবেশনে সারাবাংলা নিজস্ব অবস্থা তৈরি করেছে।

বিজ্ঞাপন

যখন একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ৫ম বর্ষে পা দেয়, তখন মানবজীবনের রূপক টেনে এ কথা তো বলাই যায় যে, সে এখনও শিশু। তার পক্ষে হামাগুড়ি-দেওয়া শৈশব থেকে যৌবনে পৌঁছানোর এখনও অনেক সুযোগ রয়েছে।

পাঠক হিসেবে সারাবাংলার সঙ্গে অনেক সময় যাবতই জড়িত। তাই বলতে চাই, পত্রিকাটির সম্পাদকীয় নীতিমালায় একটি নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। লেখকের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হওয়ার মতো কোনো কারণ এখনও আমি দেখিনি। দেশের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সারাবাংলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করতেই পারি।

প্রতিযোগিতার এই সময়ে সারাবাংলা ৪ বছর পূর্তি করে ৫ম বর্ষে পর্দাপন করল। ৪ বছর খুব বেশি সময় নয়। বলা যেতে পারে— একেবারেই শৈশব কাল। তবুও বলবো— এই অল্প শৈশবকালেও সারাবাংলাকে এখনও সেই ভুলটি আক্রান্ত করতে পারেনি।

এটা সত্য যে, হাজারো অনলাইন পত্রিকা রয়েছে বলে শোনা যায়। উপজেলা থেকে রাজধানী পর্যন্ত এসব পত্রিকার ছড়াছড়ি। ফলে যেটা হয়েছে— সাংবাদিকতার চেয়ে অপসাংবাদিকতাই বৃদ্ধি পেয়েছে। চারদিকে সাংবাদিক আর গলায় প্রেসকার্ড। মফস্বলগুলোতে নাকি এই কার্ডধারীরা আতঙ্ক হিসেবে পরিচিত। রাজধানীও এর থেকে মুক্ত আছে বলে মনে করি না।

বিজ্ঞাপন

এর ভিড়ে নিজের অবস্থান পাঠকের নিকট উপস্থাপন ও প্রকাশিত সংবাদের প্রতি পাঠকের আস্থা অর্জন করতে যে কয়টি অনলাইন পোর্টাল সক্ষম হয়েছে সারাবাংলা তার অন্যতম। অল্প সময়ের মধ্যেই এই অনলাইন পোর্টালটি বাংলাদেশের গণমাধ্যম জগতে শুদ্ধ সাংবাদিকতার প্রতীক হয়ে উঠেছে যা অবশ্যই অনেক বড় অর্জন।

আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মৌলিক আদর্শের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত সারাবাংলার একজন পাঠক ও একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে কিছু প্রত্যাশা তো থাকতেই পারে। আমি নিজে যখন একজন গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে কাজ করতাম তখন শিখেছিলাম কে বলছে সেটা না ভেবে, কী বলেছে সেটা ভাবো। সেটা দেশ-জাতি-সমাজের কল্যাণে হলে তাই সংবাদ। কিন্তু, দুঃখজনক হলেও সত্য— এখন কী বলেছে এটা কেউ শুনতে চায় না। সবাই শুনতে চায় কে বলেছে। ফলে যেটি হয়ে থাকে— অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হারিয়ে যায়, প্রকাশ হয় না। অনেক ক্ষুদ্র রাজনৈতিক দল ও কর্মী অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেন, কাজ করেন। সেই বিষয়গুলো প্রকাশে সারাবাংলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। যা অনলাইন নিউজ পোর্টালের জগতে নতুন বিপ্লব ঘটাতে পারে। উদার, অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক নীতিমালা ঠিক রেখেই তারা এটা করতে পারেন কিনা ভেবে দেখলে কৃতার্থ থাকব।

নির্ভীক ও আপসহীন সাংবাদিকতার জগতে সারাবাংলাকে নিজের অবস্থান আরও বেশি সুদৃঢ় করতে হবে। মনে রাখতে হবে প্রতিযোগিতার এই সময়ে প্রতিটি মুহূর্তই গুরুত্বপূর্ণ। আধুনিক সমাজে রাষ্ট্র ও সমাজের মধ্যে সক্রিয় প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম হলো গণমাধ্যম। তথ্য-যুক্তির বিন্যাসে সমাজের পক্ষে দাঁড়িয়ে মানুষের হয়ে রাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনই গণমাধ্যমের প্রাথমিক কাজ। আর সেই কাজটি সারাবাংলা যত বেশি করবে ততই জনমনে তার অবস্থান হয়ে উঠবে শক্ত।

একজন পাঠক হিসেবে প্রত্যাশা করি— সারাবাংলা এভাবেই পাঠকের আস্থা ধরে রেখে পার করুক যুগের পর যুগ। অবিশ্বাস্যের ভিড়ে নিজেকে টিকিয়ে রাখুক পাঠকের আস্থার জায়গায়। ৪ বছর পূর্তিতে জানাই অনেক অনেক শুভেচ্ছা। সারাবাংলার উদ্যোক্তা, সাংবাদিক ও সব স্তরের কর্মীদের প্রতি রইলো অভিনন্দন। আগামী দিনে পাঠকপ্রিয়তা বৃদ্ধি করতে তারা আরও মনোযোগী হবেন। প্রকাশনার নতুন বছরের যাত্রা শুরুতে সারাবাংলাকে আরও আকর্ষণীয়ভাবে দেখতে চাই।

লেখক: মহাসচিব, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ ও আহ্বায়ক, জাতীয় কৃষক-শ্রমিক মুক্তি আন্দোলন

সারাবাংলা/এসবিডিই/আইই

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন