বিজ্ঞাপন

মালদ্বীপে পর্যটকদের আকর্ষণ ‘স্যান্ড ব্যাংক বিচ’

December 17, 2021 | 9:16 am

শেখ জাহিদুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

মালদ্বীপ ঘুরে এসে: ৪ ডিসেম্বর সকাল আটটা। মালদ্বীপের হুলহোমালে শহরটা অন্যান্য দিনের মতোই সাজতে শুরু করেছে। পর্যটকদের আনাগোনায় পরিপূর্ণ হুলহোমালে ফেরিঘাট। যেখান থেকে প্রতিদিন মালদ্বীপের বিভিন্ন দ্বীপ ও বিচের উদ্দেশে ছেড়ে যায় একাধিক বোট।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ থেকে একসঙ্গে ৮৫ গণমাধ্যমকর্মীর একটি টিমের যাত্রা স্যান্ড ব্যাংক বিচে। যেখানে যেতে সময় লাগবে হুলহোমালে ফেরিঘাট থেকে ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট। সকাল সাড়ে আটটার দিকেই তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। স্যান্ড ব্যাংক বিচের উদ্দেশে যাত্রা শুরু হলো।

প্রতিটি বোটে রয়েছেন চারজন করে গাইড। যারা পর্যটকদের দ্বীপে যেতে যেতে সেবা দেবেন, একইসঙ্গে মালদ্বীপের দ্বীপগুলোর সৌন্দর্য জানাবেন।

প্রথম বোটটিতে পরিচয় বাংলাদেশি ছেলে বাবু মিয়ার সঙ্গে। তিনি জানান, পর্যটকবাহী এই বোটে তিনি ৬ বছর ধরে কাজ করছেন। হুলহোমালে ফেরিঘাট থেকে স্যান্ড ব্যাংক যেতে সময় লাগবে ঘণ্টা দেড়েক। কারণ বোটগুলো কাঠের তৈরি তাই নিতান্তই আস্তে যেতে হয়। তবে যেসব বোট লোহার তৈরি সেগুলোতে আনুমানিক ঘণ্টাখানেকের মতো সময় লাগে। বড় বোটগুলোতে ৩২ জন এবং ছোট বোটগুলোতে ২০ জনের মতো পর্যটক যেতে পারে একসঙ্গে।

বিজ্ঞাপন

বোটটি ফেরিঘাট থেকে ছেড়েছে ২০ মিনিটের মতো। সমুদ্র ঘেরা চারিদিকে বেষ্টিত সাগরের মাঝে দ্বীপগুলো জানান দেয় কতটা সুন্দর মালদ্বীপ। ঘন্টাখানিক পরে ১০-১২টি দ্বীপ পেরিয়ে চোখ পৌঁছায় সাদা বালির দ্বীপে। বোটে থাকার সবারই নজর স্যান্ড ব্যাংক বিচে।

এদিকে সমুদ্রের বড় বড় ঢেউগুলো যখন আঁছড়ে পড়ছে। গাইডরা গান ও তাদের ঢংয়ে আনন্দ দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। মাঝে মধ্যে বাংলা গানের সুরও তাদের গলায় ধরা দিচ্ছিল। এরই মধ্যে আমরা চলে আসলাম স্যান্ড ব্যাংক বিচে। সবুজ দ্বীপ আর নীলাভ জলরাশি জানান দিচ্ছিল প্রকৃতির সৌন্দর্য। পুরো স্যান্ড ব্যাংক বিচটি ছোট হলেও এটির সৌন্দর্য অপরূপ। চারিদিকে নীলাভ জলরাশি তার মাঝে ভেদ করে জেগে উঠেছে একটি চর আর সেটিই হচ্ছে স্যান্ড ব্যাংক বিচ।

বিজ্ঞাপন

গাইড বাবু জানাচ্ছিলেন পানি এতো কেন নীল! যেখানে সমুদ্রের গভীরতা যতো সেখানে পানির রং কালচে। আর যেখানে গভীরতা কম সেখানে নীলাভ জলরাশি। তবে স্যান্ড ব্যাংক যেতে হলে অবশ্যই গভীর সমুদ্র পাড়ি দিয়েই যেতে হয়।

স্যান্ড ব্যাংকে যখন আমরা পৌঁছে গেছি তখন রৌদ্রের তাপমাত্রা ৩০ পেরিয়ে। এখানেই আমাদের কাটবে ঘন্টা পাঁচেক। স্যান্ড ব্যাংক বিচে নাচ,গান,আড্ডা,পানির নিচে সমুদ্র দেখা,ভলিভল খেলা,সমুদ্র থেকে পাখিগুলো উড়ে উড়ে বিচে এসে পড়া, ওয়াটার বাইকে চড়া। কি ছিলো না সেখানে। গণমাধ্যমকর্মীদের বিশাল বহরটি যে যার মতো করে নিজেকে মেলে ধরেছে স্যান্ড ব্যাংক বিচে।

এরপর দেখতে দেখতে ঘড়ির কাটায় একটা বেজে যায়। খেতে হবে তখন দুপুরের খাবার। খাবার শেষে পৌনে ৩টার দিকে স্যান্ড ব্যাংক বিচ থেকে আবার যাত্রা শুরু হয় হুলহোমালে শহরেরে উদ্দেশে। কেননা সময় যতো যাচ্ছিলো ততোই বিচটি পানিতে তলিয়ে যাচ্ছিল। তাই পর্যটকরা চাইলেও সেখানে থাকা সম্ভব নয়। তবে মালদ্বীপে যেসব পর্যটকরা যান তারা একবার হলেও এই স্যান্ড ব্যাংক বিচে ঘুরতে ভুল করেন না। কারণ এই বিচটিতে যেতে যেতে যেমন একাধিক দ্বীপের সৌন্দর্য নেওয়া যায় ঠিকই তেমনিভাবে স্যান্ড ব্যাংক বিচের সৌন্দর্যও যে কাউকে অভিভূত করে দেয়।

বিজ্ঞাপন

এবার স্যান্ড ব্যাংক বিচ থেকে আসতে আসতে বড় বড় ঢেউয়ে দুলতে থাকে বোটগুলো। কেউ কেউ বোটের শক্ত হাতল ধরে বসে আসেন আবার কেউ কেউ বোটের ছাদে গিয়ে অপরূপ গভীর সাগরের সৌন্দর্য লুফে নিচ্ছিলেন। তবে যতোদূর চোখ যাচ্ছিলো ফেরার সময় বারবার যেন মনে হচ্ছিলো আরও যদি একটু সময় থাকা যেতো। কিছুটা অপরিপূর্ণতা যেন রয়েই গেল। আর এভাবেই শেষ হয় মালদ্বীপের স্যান্ড ব্যাংক বিচের সৌন্দর্য অবলোকন।

সারাবাংলা/এসজে/এএম

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন