বিজ্ঞাপন

উপযুক্ত প্রার্থী না থাকায় নাসিকে নির্বাচন করছে না জাপা: চুন্নু

January 10, 2022 | 4:54 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে কোনো উপযুক্ত প্রার্থী না থাকায় সেখানে আমরা কোনো প্রার্থী দিইনি। পাশাপাশি অন্য কোনো প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য দলীয় কর্মী-সমর্থকদের জন্য দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত নেই। সোমবার (১০ জানুয়ারি) দুপুরে এই কথা বলেন তিনি। আগারগাঁও সংসদ নির্বাচন ভবনে সিইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের কাছে বৈঠক সম্পর্কে ব্রিফ করেন মুজিবুল হক চুন্নু।

বিজ্ঞাপন

নির্বাচনে সহিংসতার দায় নির্বাচন কমিশনের নয়, দায় প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার এমন বক্তব্যকে আংশিক সঠিক বলে জানিয়েছেন তিনি।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, ‘ওনার বক্তব্য আংশিক সঠিক। কারণ একটি নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনই যে এককভাবে দায়ী তা নয়, রাজনৈতিক দলের, ভোটারদের সবার দায়িত্ব। অনেক সময় দেখা যায়, নির্বাচন কমিশন চাইলেও পারে না যদি শাসক দলের লোকজন বিশেষ করে এক্সিকিউটিভ যারা তারা যদি সঠিকভাবে দায়িত্বপালন না করে।’

টাঙ্গাইল- ৭ উপনির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের আশঙ্কা হচ্ছিল যে, নির্বাচনটা ফেয়ার হবে না। কারণ গত কয়েক মাসে স্থানীয় সরকার যে নির্বাচন হয়েছে, বিশেষ করে প্রথম এবং দ্বিতীয় ধাপ। সেটি নির্বাচনের নামে একটা নৈরাজ্যের অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। সেই নির্বাচনগুলোতে বিএনপি নির্বাচনে যায়নি। জাতীয় পার্টি লাঙ্গল প্রতীকে অনেক প্রার্থী দিয়েছিল। আমাদের প্রার্থীদেরকে মারধর করা হয়েছে, পেটানো হয়েছে এবং বিভিন্নভাবে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে তাকে এলাকা ছাড়তে হয়েছে। অনেক জায়গায় ব্যক্তিগতভাবে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে সুফল পাইনি। শুধু এটিই না, গত কয়েকমাস আগে সিরাজগঞ্জে একটি উপনির্বাচনে আমাদের প্রার্থীর জামাকাপড় পর্যন্ত ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। এ সব উপনির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যে বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্যকর অবস্থা তাতে আমাদের আশঙ্কা হচ্ছে যে, মির্জাপুরের নির্বাচনটা ফেয়ার হবে না। সেই কারণে আজকে আমরা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি।’

তিনি বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে আমরা বলেছি যে,আপনার কমিশন গত পাঁচ বছর অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে কাজ করেছেন। অনেক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। আপনাদের সময়কালে এটিই হবে কোনো পার্লামেন্টের শেষ উপনির্বাচন। আল্লাহ না করুক কোনো আসন যদি কোনো কারণে শূন্য হয়, তাহলে সময়ে সীমাবদ্ধতার কারণে আপনারা আর নির্বাচন করার সুযোগ পাবেন না। তাই বলেছি, আপনাদের বিদায়ের বেলায় অন্তত পক্ষে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের নির্বাচনটা যাতে নিরপেক্ষ হয়। পাশাপাশি নির্বাচনটা যাতে সুষ্ঠু হয়, মানুষ যাতে ভোট দিতে পারে এই বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে বলেছি। সিইসি নির্বাচন ফেয়ার করার জন্য যা যা করার দরকার তার সব ধরনের ব্যবস্থা নেবেন বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।’

সারাদেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে: গত কয়েক মাসে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের নামে সারাদেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে। সে নির্বাচনে শাসক দলের কর্মীরা জাতীয় পার্টি প্রার্থী ও সমর্থকদের মারধর করেছে। কোথাও কোথাও নির্বাচন থেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে বাধ্য করেছে। অত্যাচারের কারণে এলাকা ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে জাতীয় পার্টি নেতা-কর্মীদের। এ ব্যাপারে আমরা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে কোনো সুফল পাইনি।

বিজ্ঞাপন

মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেন, ‘এর আগে সিরাজগঞ্জের একটি উপ-নির্বাচনে আমাদের প্রার্থীর ওপর হামলা হয়েছে। উপ-নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের যে নৈরাজ্যকর অবস্থা হয়েছে তাই আমাদের আশঙ্কা হচ্ছে মির্জাপুরের নির্বাচন নিয়ে।’

মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেছেন, নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি রাজনৈতিক দল এবং ভোটারদের দায়িত্ব আছে।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন অনেক সময় চাইলেও পারে না, যদি শাসক দল এবং নির্বাহী বিভাগের কর্মকর্তারা নিরপেক্ষ না হয়।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনকালীন নির্বাচন কমিশনের অর্ডার পালন করতে স্থানীয় প্রশাসন বাধ্য এমন আইন আছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের অর্ডার না শুনলে কি হবে তা আইনে লেখা নেই। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নিতে নির্বাহী বিভাগের কাছে পাঠাবে, এখন পর্যন্ত নির্বাহী বিভাগ ব্যবস্থা নিয়েছেন এমন কোনো উদাহরণ নেই।’

বিজ্ঞাপন

জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি আরও বলেন, ‘জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি নির্বাচন কমিশনকে আরও শক্তিশালী করতে একটি আইন করতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন। যেন নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচন কমিশনের অর্ডার কেউ না মানলে নির্বাচন কমিশনই সরাসরি ব্যবস্থা নিতে পারে।’

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব এটিইউ তাজ রহমান, প্রেসিডিয়াম সদস্য নাজমা আখতার এমপি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন দফতর সম্পাদক-২ এমএ রাজ্জাক খান, যুগ্ম দফতর সম্পাদক মাহমুদ আলম, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি-২ খন্দকার দেলোয়ার জালালী।

সারাবাংলা/জিএস/এএইচএইচ/একে

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন