বিজ্ঞাপন

পুলিশকে তথ্য দেওয়ায় রগ কেটে হত্যা, মূলহোতাসহ গ্রেফতার ৫

January 17, 2022 | 6:23 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রাজধানীর কেরানীগঞ্জে সায়মন ওরফে নুরে আলমকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে একদল সন্ত্রাসী। এমনকি হত্যার পর সায়মনের হাত ও পায়ের রগ কেটে দেয় সন্ত্রাসীরা। গত ১৫ জানুয়ারির এ ঘটনায় হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা সুমন ওরফে গ্লাস সুমনসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেলে কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের সংবাদমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত সায়মনের ভাই মো. আরস আলম কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় ৭ থেকে ৮ জন অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় র‌্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে এবং ১৭ জানুয়ারি র‌্যাব-১০ এর একটি দল কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে হত্যাকারী পাঁচজনকে গ্রেফতার করে। এ সময় হত্যার কাজে ব্যবহৃত সুইচগিয়ার ও অন্যান্য ধারালো অস্ত্র জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।

আসামীরা হলেন— মূলহোতা মো. সুমন ওরপে গ্লাস সুমন (২৯), মো. সোহাগ ওরফে লম্বু সোহাগ (২৮), শরীফ ওরফে গরীব (২৯), জনি ওরফে হর্স পাওয়ার জনি (৩২) এবং হারুন (৩২)।

বিজ্ঞাপন

জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত গ্লাস সুমন একটি মাদক সিন্ডিকেটের মূল হোতা। তিনি দীর্ঘ দিন যাবৎ মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। কেরানীগঞ্জসহ এর আশেপাশের এলাকায় তিনি ‘গ্লাস কোম্পানি’ নামে একটি মাদক সিন্ডিকেট গড়ে তোলে। এ চক্রে সক্রিয় সদস্য সংখ্যা ১২ থেকে ১৫ জন।

জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে জানা যায়, কিছুদিন পূর্বে ‘গ্লাস কোম্পানি’র মাদক সিন্ডিকেটটির কয়েকজন সদস্য সম্পর্কে তথ্য পায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ওই মাদক সিন্ডিকেটের কয়েকজন মাদক কারবারীকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার সুমন ও তার সহযোগীরা ভুক্তভোগী সায়মনকে সন্দেহ করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সায়মনকে হত্যার পর হাত ও পায়ের রগ কেটে দেয় তারা।

র‌্যাব জানায়, ঘটনার কয়েক দিন পূর্বে ভাগনা, বালুরচর মুক্তিরবাগ বালুর মাঠে এলাকায় হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা গ্রেফতার গ্লাস সুমন ও তার অন্যান্য সহযোগী গ্রেফতার সোহাগ ওরফে লম্বু সোহাগ ওরফে ঘটি সোহাগসহ আরও কয়েকজন সায়মনকে হত্যার চূড়ান্ত পরিকল্পনা করে। ওই পরিকল্পনায় ৫-৬ জন অংশগ্রহণ করে বলে গ্রেফতাররা জানায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৫ জানুয়ারি গ্লাস সুমন সিন্ডিকেট মুক্তিরবাগ বালুর মাঠে হত্যাকাণ্ডটি ঘটায়। গ্রেফতার হারুন তথ্য দিয়ে হত্যাকারীদের সহযোগিতা করে করে।

বিজ্ঞাপন

আরও জানায়, ঘটনার সময় গ্রেফতার সুমন ও তার সহযোগীরা কেরানীগঞ্জের মুক্তিরবাগ বালুর মাঠ এলাকায় সায়মনকে পাশের নির্মানাধীন একটি বিল্ডিং থেকে জোরপূর্বক ধরে ঘটনাস্থলে নিয়ে আসে। এরপর সায়মনকে চেপে ধরে তার হাত ও পায়ের রগ কেটে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে দেয় এবং এলোপাতারি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে এ হত্যাকাণ্ড চালায় তারা। পরবর্তীতে স্থানীয় জনগণ সায়মনকে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতারকৃত গ্লাস সুমনের নেতৃত্বে প্রায় ৭-৮ জন সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়।

গ্রেফতারকৃতরা জানায়, মো. সুমন ওরফে গ্লাস সুমন এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী। তিনি হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা থেকে শুরু করে হত্যাকাণ্ডে সংঘটনের সময় সশরীরে উপস্থিত ছিল এবং নিজেই ভুক্তভোগীর রগ কাটে। এছাড়া লম্বু সোহাগ ও শরীফ গরীবুল্লাহ রগ কাটায় অংশগ্রহণ করে এবং জনি ও গ্লাস সুমন পরবর্তীতে ধরে রাখে।

গ্রেফতার গ্লাস সুমনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মাদক ও ছিনতাই সংক্রান্ত ৫টি মামলা রয়েছে। গ্রেফতার সুমন পূর্বে গ্যাসের দোকানে কাজ করত এবং ভাঙা গ্লাস দিয়ে মানুষকে বিভিন্ন সময়ে আক্রমণ ও জখম করার কারণে এলাকায় গ্লাস সুমন হিসেবে পরিচিতি পান তিনি। এছাড়াও সোহাগ ওরফে লম্বু সোহাগ, জনি ওরফে হর্স পাওয়ার জনি এবং হারুনের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/ইউজে/এনএস

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন