গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্যের দেওয়া অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক মিসাইল গ্রহণ করছেন ইউক্রেন প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা
January 23, 2022 | 2:37 am
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
রাশিয়ার সম্ভাব্য হামলা মোকাবিলায় ইউক্রেনকে অস্ত্র সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে তিন বাল্টিক দেশ এস্তোনিয়া, লাটভিয়া এবং লিথুয়ানিয়া। দেশগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় অ্যান্টি ট্যাঙ্ক মিসাইল ও অ্যান্টি এয়ারক্রাফট মিসাইল ইউক্রেনে পাঠাবে। শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) তিন দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা এক যৌথ বিবৃতিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
তিন বাল্টিক দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, ‘রাশিয়ার অব্যাহত আগ্রাসনের মুখে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি অঙ্গীকারে আমরা ঐক্যবদ্ধ।’ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এস্তোনিয়া ইউক্রেনকে জ্যাভলিন অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক মিসাইল সরবরাহ করবে। লাটভিয়া এবং লিথুয়ানিয়া ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামূলক সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য স্টিংগার অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট মিসাইল এবং অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করবে।’ তবে এসব অস্ত্র কবে ইউক্রেনে পাঠানো হবে তা জানানো হয়নি।
বিবৃতিতে এস্তোনিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্যালে লানেট বলেন, ‘ইউক্রেনে যুদ্ধ চলছে। আসুন আমরা এটি মোকাবিলা করি। আমরা যেভাবে পারি ইউক্রেনকে সহায়তা করি— যাতে তারা আগ্রাসন প্রতিহত করতে পারে।’
এদিকে শনিবার (২২ জানুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন এক টুইট বার্তায় তিন বাল্টিক দেশের এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ এবং বর্তমান পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য ওই তিন দেশকে ইউক্রেনের প্রতি সমর্থনের জন্য ‘অভিবাদন’ জানান।
এর আগে, গত সপ্তাহে ইউক্রেনে অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক মিসাইল পাঠিয়েছিল যুক্তরাজ্য। এছাড়া শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো প্রাণঘাতী অস্ত্রের প্রথম চালান ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে সেদেশের মার্কিন দূতাবাস।
ইউক্রেনে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ওয়াশিংটনের পাঠানো সামরিক সহায়তা কিয়েভে পৌঁছেছে। এতে সম্মুখসারির প্রতিরোধ যোদ্ধাদের জন্য ২ লাখ পাউন্ডের মতো প্রাণঘাতী বিস্ফোরক, গোলাবারুদ রয়েছে।
আরও পড়ুন- রুশ আগ্রাসন মোকাবিলায় ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠিয়েছে আমেরিকা
এদিকে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক মুখপাত্র সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, ইউক্রেনের জরুরি সামরিক চাহিদা মেটাতে অতিরিক্ত সহায়তা হিসেবে ২০০ মিলিয়ন ডলার অনুমোদন দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। এর আওতায় আগামী সপ্তাহগুলোতে সামরিক অস্ত্রশস্ত্র ও অন্যান্য সহায়তা ইউক্রেনে পাঠানো হবে।
সম্প্রতি ইউক্রেন সীমান্তে লক্ষাধিক সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন সদস্য রাষ্ট্র ইউক্রেন যেন ন্যাটোতে যোগ না দেয় এমন নিশ্চয়তা দাবি করে সামরিক শক্তি প্রদর্শন করছে মস্কো। যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে, রাশিয়া যে কোনো সময় ইউক্রেনে সামরিক হামলা চালাতে পারে। তবে রাশিয়া বরাবরই বলে আসছে, ইউক্রেনে সামরিক হামলা চালানোর কোনো উদ্দেশ্য নেই।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখলের প্রাক্কালে রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের টানাপড়েন শুরু হয়। তারপর থেকে বিভিন্ন সময় দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছলেও ২০২১ সালের শেষ দিক থেকে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে। ইউক্রেনের পক্ষে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো সব ধরনের সহায়তা দেওয়া ঘোষণা দিয়েছে।
আরও পড়ুন
সারাবাংলা/আইই