January 26, 2022 | 9:11 pm
ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
রাজশাহী: দুই কিশোরীকে ধর্ষণ করে ভিডিওচিত্র ইন্টারনেট ও বিভিন্ন ব্যক্তির মোবাইলে ছড়িয়ে দেওয়ার অপরাধে রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনাল এক বৃদ্ধকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। এই মামলার ধর্ষণ অংশের বিচার এখনো নাটোরের আদালতে চলমান।
রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জিয়াউর রহমান বুধবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে আসামিকে ১০ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। জরিমানা পরিশোধ না করলে তাকে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
দণ্ডিত ব্যক্তির নাম আল-আমিন ওরফে আকিল। নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার চান্দাই গ্রামের বাসিন্দা তিনি। ২০১৬ সালে মামলাটি দায়েরের সময় তার বয়স ছিল ৬০ বছর। আল-আমিন পলাতক আছেন। তার অনুপস্থিতিতেই রায় ঘোষণা করেছেন বিচারক।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, প্রেমের সম্পর্ক জোড়া লাগানোর কথা বলে ২০১৫ সালের ২৩ অক্টোবর এলাকার ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীকে কবিরাজি চিকিৎসার নামে ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করেন আল-আমিন। এরপর থেকে ওই কিশোরীকে নিয়মিত ধর্ষণ করা হতো। একই বছরের ১৫ নভেম্বর ১৩ বছরের আরেক কিশোরীকে কৌশলে কবিরাজি চিকিৎসার নামে ধর্ষণ করেন তিনি। দু’জনকে ধর্ষণের ঘটনাই ভিডিও করে রাখেন ওই বৃদ্ধ।
মামলার এজাহার সূত্রে আরও জানা যায়, ধর্ষণের ঘটনা কাউকে জানালে দুই কিশোরী মারা যাবে বলে তাদের ভয় দেখানো হতো। ওই বৃদ্ধ দুই কিশোরীকে তার কাছে যাওয়ার জন্য চাপ দিতেন। দুই কিশোরী পরে আর না গেলে তাদের ধর্ষণের ভিডিও বিভিন্ন ব্যক্তির মোবাইল ও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেন তিনি।
রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইসমত আরা জানান, ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর ভুক্তভোগী এক কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে বড়াইগ্রাম থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় (বর্তমানে বিলুপ্ত আইন) একটি মামলা করেন। পুলিশ তদন্ত করে নাটোরের আদালতে বৃদ্ধ আল-আমিনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। এরপর নাটোরের আদালত থেকে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ধারার অংশটির বিচারের জন্য ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। পরে রাজশাহীতে সাইবার ট্রাইব্যুনাল গঠন হলে মামলাটি এখানে আসে। ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রায় ঘোষণা করলেন আদালত।
ইসমত আরা আরও জানান, রাজশাহীর আদালতে শুধু ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনার বিচার হলো। ধর্ষণের জন্য মামলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ধারার অংশটির বিচার চলছে নাটোরের আদালতে। ওই অংশটুকুর রায় এখনো হয়নি। মামলা একটি হলেও ধারা আলাদা থাকার কারণে বিচার দুই আদালতে চলছে বলেও জানান আইনজীবী ইসমত আরা।
সারাবাংলা/টিআর