বিজ্ঞাপন

পশ্চিমাদের টেনশনকে উড়িয়ে দিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট

January 29, 2022 | 9:53 am

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বাংলা প্রবাদ আছে, ‘মায়ের পোড়ে না মাসির পোড়ে।’ ইউক্রেন ঘিরে সেই দশা হয়েছে পশ্চিমাদের। রাশিয়া ইউক্রেনে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে, এই নিয়ে ঘুম নষ্ট হয়ে গেছে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর। তারা একের এক নতুন নতুন খবর নিয়ে হাজির হচ্ছে, `ইউক্রেন সীমান্তে ৯০ হাজার সৈন্য মোতায়েন করেছে রাশিয়া’, `ইউক্রেন সীমান্তে রক্তের ব্যাগ জমা করছে রাশিয়া’, ‘যেকোনো মুহূর্তে ইউক্রেনে হামলা চালাবে রাশিয়া’। কেউ কেউ তো আগ বাড়িয়ে যুদ্ধের দিনক্ষণও ঘোষণা করে দিচ্ছে। সেইসঙ্গে ইউক্রেনকে রক্ষার নামে রীতিমতো যুদ্ধের প্রস্তুতিও নিয়ে রাখছে তারা। যদিও আগাগোড়াই ইউক্রেনে হামলার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে রাশিয়া কর্তৃপক্ষ। এবার পশ্চিমাদের টেনশনে ঘি ঢাললেন খোদ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

বিজ্ঞাপন

পশ্চিমাদের এসব আতঙ্ক ছড়ানোয় মেজাজ হারিয়ে ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, মার্কিন সরকার ও ন্যাটোর অতিরিক্ত টেনশন ক্ষতিকর। পশ্চিমারা অহেতুক প্যানিক ছড়াচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলন ডেকে পশ্চিমাদের উদ্দেশে সাফ জানিয়ে দিলেন, ‘আমাদের সীমান্তে রুশ সেনার উপস্থিতি নিয়ে অযথা আতঙ্ক ছড়াবেন না। ইউক্রেনে যেকোনো সময় হামলা হতে পারে, এ ধরনের কথা বলায় আমাদের অর্থনীতির ক্ষতি হচ্ছে।’

কিয়েভে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের নেতারা বলেই যাচ্ছেন, আগামীকালই যুদ্ধ শুরু হতে যাচ্ছে। এমন কথা শুধু প্যানিক ছড়ায়। এটা আমাদের কত বড় ক্ষতির কারণ তা কি তারা জানেন?’

বিজ্ঞাপন

ইউক্রেন থেকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়া সরকারের রাষ্ট্রদূত ও তাদের পরিবারকে দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়েও কঠোর সমালোচনা করেন জেলেনস্কি। তিনি বলেন, ‘দেশের ভেতরে এমন অস্থিতিশীলতাই এখন ইউক্রেনের জন্য বড় হুমকি।’

ইউরোপের সংবাদমাধ্যমগুলোর দাবি, সম্প্রতি ইউক্রেন সীমান্তে লক্ষাধিক সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন সদস্য রাষ্ট্র ইউক্রেন যেন ন্যাটোতে যোগ না দেয় এমন নিশ্চয়তা দাবি করে সামরিক শক্তি প্রদর্শন করছে মস্কো। ইউক্রেন মনে করছে, রাশিয়া যে কোনো সময় সামরিক হামলা চালাতে পারে। তবে রাশিয়া বরাবরই বলে আসছে, সামরিক হামলা চালানোর কোনো উদ্দেশ্য নেই। যদিও ইউক্রেন সীমান্তে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের সবরকমের প্রস্তুতি নিয়ে অবস্থান করছে রুশ সামরিক বাহিনী। এছাড়া চলতি সপ্তাহে ভূমধ্যসাগর ও প্রতিবেশী বেলারুশে সামরিক শক্তি বাড়িয়েছে মস্কো—যা ইউক্রেনে হামলার চূড়ান্ত প্রস্তুতি বলে মনে করছে ন্যাটো।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- রুশ আগ্রাসন মোকাবিলায় পূর্ব ইউরোপে শক্তি বাড়াচ্ছে ন্যাটো

গত সপ্তাহে ন্যাটোর মহাসচিব জেন্স স্টলটেনবার্গ এক বিবৃতিতে বলেন, ইউক্রেনে সম্ভাব্য রুশ আগ্রাসন সামনে রেখে পূর্ব ইউরোপে শক্তি বৃদ্ধি করছে পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটো। জোটটি আকাশ, ভূমি ও সমুদ্রে রাশিয়ার সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে।

তিনি আরও জানিয়েছেন, রাশিয়া এরইমধ্যে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়া হাজারো সেনা মোতায়েন করেছে এবং বেলারুশে ক্ষেপণাস্ত্রও বসিয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের হিসাবনিকাশ বিবেচনায় রেখে আমেরিকা তার পদক্ষেপগুলো নির্ধারণ করছে এবং ইউক্রেনে প্রতিরক্ষা জোরদার করতে তারা আরও সামরিক সহায়তা পাঠাবে।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- রুশ হামলার সম্ভাব্য তারিখ জানালেন ইউক্রেনের শীর্ষ জেনারেল

একই সুরে কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বিশ্বাস করেন রাশিয়া আগামী মাসেই ইউক্রেনে হামলা চালাবে।

তবে ইউক্রেনে হামলা চালানোর পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করেছে রাশিয়া। দেশটির পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার কনস্টান্টিন কসাখেভ রাশিয়ার টিভি চ্যানেল রাশিয়া-২৪ কে বলেন, ‘হামলার কোনো প্রস্তুতি চলছে না।’

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভও বলেন, ক্রেমলিন কিয়েভের সঙ্গে সংঘাতে জড়াতে চায় না। রাশিয়া যুদ্ধ চায় না।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখলের প্রাক্কালে রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের টানাপড়েন শুরু হয়। তারপর থেকে বিভিন্ন সময় দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছলেও ২০২১ সালের শেষ দিক থেকে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে। ইউক্রেনের পক্ষে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো সব ধরনের সহায়তা দেওয়া ঘোষণা দিয়েছে।

আরও পড়ুন

সারাবাংলা/এএম

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন