বিজ্ঞাপন

নতুন নতুন কাজ যুক্ত হচ্ছে ভারতের সঙ্গে রেল প্রকল্পে

February 9, 2022 | 8:31 am

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: নতুন নতুন কাজ যুক্ত হচ্ছে ভারতের সঙ্গে রেল সংযোগ প্রকল্পে। এ জন্য বাড়ছে ব্যয় ও মেয়াদ। ফলে ‘ভারতের সঙ্গে রেল সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে চিলাহাটি এবং চিলাহাটি বর্ডারের মধ্যে ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পটির প্রথম সংশোধীনর জন্য পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। প্রকল্পটির মূল অনুমোদিত ব্যয় ছিল ৮০ কোটি ১৬ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। এখন ৬০ কোটি ৫১ লাখ ৭০ হাজার টাকা বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ১৪০ কোটি ৬৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। গত বছরের জুন পর্যন্ত প্রকল্পটির ক্রমপুঞ্জিত আর্থিক অগ্রগতি ৬১ কোটি ৬৭ লাখ ৮২ হাজার টাকা এবং একই সময়ে বাস্তব অগ্রগতি হয়েছে ৯৩ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্পটিতে যেসব কাজ যোগ হচ্ছে সেগুলো হলো— প্রকল্পের প্যাকেজ ডব্লিউডি-১ এর আওতায় নতুন কিছু কাজ। যেমন—একটি নতুন লুপ লাইন ও চারটি লুপ লাইনের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি, একটি ডাবল লাইন ব্রডগেজ রেলসেতু এবং বিদ্যমান প্ল্যাটফর্মের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা বৃদ্ধি সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম বাস্তবায়ন করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এছাড়া প্যাকেজ ডব্লিউডি-২ এর অধীনে নতুনভাবে আইল্যান্ড প্ল্যাটফর্ম, প্ল্যাটফর্ম শেড, ফুটওভার ব্রিজ, ওয়াশপিট প্ল্যাটফর্ম ও ওয়াশপিট লাইন নির্মাণ, বর্ডার গেট, একতলা বিশিষ্ট ফাংশনাল ভবন নির্মাণ এবং স্টেশন বিল্ডিং ও স্টেশন ইয়ার্ডের আলোকায়নের বৈদ্যুতিক কাজ প্রয়োজন হওয়ায় সার্বিকভাবে আরডিপিপির ব্যয় বৃদ্ধির কারণে প্রকল্পটি সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রকল্পটির মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়ে জানা গেছে, মূল অনুমোদিত মেয়াদ ছিল ২০১৮ সালের আগস্ট থেকে ২০২১ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত। পরবর্তীতে প্রথমবার ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া এক বছর অর্থাৎ ২০২২ সাল পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ান হয়। এখন আবার দেড় বছর মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর গত বছরের ৬ জুন অনুষ্ঠিত হয় পিইসি (প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি) সভা। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করায় প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ভারত ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যে চিলাহাটি ও হলদিবাড়ী হয়ে রেলওয়ে সংযোগ চালু ছিল। ১৯১৫ সালের ১লা জানুয়ারি হার্ডিঞ্জ ব্রিজ চালুর মধ্যে দিয়ে দর্শনা হতে চিলাহাটি পর্যন্ত সরাসরি রেলওয়ে সংযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯২৪ সালে সান্তাহার হতে পার্বতীপুর পর্যন্ত এবং ১৯২৬ সালে পার্বতীপুর হতে চিলাহাটি পর্যন্ত মিটারগেজ রেলওয়ে লাইন ব্রডগেজে রূপান্তর করা হয়। রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে এই রুটটি তখন ব্যাকবোন হিসেবে বিবেচিত হতো। ১৯৬৫ সালে ভারত পাকিস্তান যুদ্ধের পর এ রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে লিংকটি চালু না থাকায় দুই দেশের বিশাল জনগোষ্ঠী ভ্রমণ ও মালামাল পরিবহনে রেলওয়ে সেবা হতে বঞ্চিত হচ্ছে।

আরও বলা হয়েছে, বর্তমান সরকার আন্তঃআঞ্চলিক যোগাযোগ জোরদারকরণের মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটন খাতের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে মোট ৭টি ইন্টারচেঞ্জ পয়েন্টের মধ্যে ৪টিতে রেলওয়ে সংযোগ স্থাপিত হয়েছে। ২০১৫ সালের ২৫ মে হতে ২০১৫ সালের ২৭ মে ভারতের নয়াদিল্লীতে অনুষ্ঠিত ইন্ডিয়া বাংলাদেশ ইন্টার-গর্ভারমেন্টাল রেলওয়ে মিটিংয়ে চিলাহাটি এবং হলদিবাড়ীর মধ্যে রেললাইন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বাস্তবায়ন পর্যায়ে প্রকল্পের আওতায় প্যাকেজ ডব্লিউডি-১ এর ভেরিয়েশনসহ নতুন একটি লুপ লাইন নির্মাণ, ৪টি লুপ লাইনের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি, যথাযথ সুযোগ সুবিধা সম্বলিত একটি আধুনিক স্টেশন বিল্ডিং নির্মাণ, বিদ্যমান প্ল্যাটফর্মের উচ্চতা ও প্রস্থতা বৃদ্ধিকরা এবং চিলাহাটি স্টেশন ২টি নতুন ব্রিজ নির্মাণ এবং প্যাকেজ ডব্লিউডি-২ এর অধীনে নতুন আইল্যান্ড প্লাটফর্ম নির্মাণ, নতুন প্লাটফর্ম শেড নির্মাণ, নতুন ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ, নতুন ৪টি রেইজড প্লাটফর্মসহ ২টি ওয়াশপিট লাইন নির্মাণ, বর্ডার গেট নির্মাণ ও এক তলা বিশিষ্ট ফাংশনাল ভবন নির্মাণ করা হবে। এছাড়া ৩ একর ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার কারণে সার্বিকভাবে প্রকল্পটি সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মামুন-আল-রশীদ সারাবাংলাকে বলেন, প্রকল্পের আওতায় চিলাহাটি ও চিলাহাটি বর্ডারের মধ্যে ৬ দশমিক ৭২৪ কিলোমিটার ব্রডগেজ মেইন লাইন ও ৩ দশমিক ৯৯৬ কিলোমিটার ব্রডগেজ লুপলাইন নির্মাণ করা হবে তাই উপ-আঞ্চলিক রেল যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। এছাড়াও বাংলাদেশের মংলাপোর্ট হয়ে ভারতের উত্তর-পূর্ব অংশ, নেপাল এবং ভুটানের মধ্যে আমদানি-রফতানি ও অন্যান্য বাণিজ্যিক কার্যক্রম জোরদার হবে। তাই প্রকল্পের প্রস্তাবিত প্রথম সংশোধন অনুমোদনযোগ্য।

সারাবাংলা/জেজে/এনএস

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন